প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
সাদিয়া, সুমি ও ঝর্ণা (ছদ্মনাম) এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের বাড়ি চাঁদপুর জেলায় ও আরেক কিশোরীর বাড়ি চট্টগ্রামে। মোবাইলে-ফেসবুকে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম। শুরু হয় তাদের মধ্যে চ্যাটিং ও ফোনালাপ। প্রেমের টানে না বুঝে এরা তিনজনই প্রেমিকের হাত ধরে ঘর বাঁধার স্বপ্নে পরিবারের অজান্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তিন মেয়ের জন্যে অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের তৎপরতায় এসব কিশোরীকে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়। আর এসব ঘটনা ঘটেছে গত এক সপ্তাহের মধ্যে।
চাঁদপুর সদরের বালিয়া গ্রামের কিশোরী সাদিয়া গত ২৪ অক্টোবর বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে না বলে প্রেমিক সজিব দেয়ানের হাত ধরে বেরিয়ে যায়। পরদিন সাদিয়ার পরিবার মেয়েকে কোথাও না পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডির সূত্র ধরে থানার পরিদর্শক সুজন কান্তি বড়ুয়া সাদিয়ার মায়ের মোবাইল ট্র্যাকিং করে জানতে পারেন একটি ছেলের বাড়ি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখান থানায়। সজিব দেওয়ান (২৬) নামে এই যুবকের সাথেই সাদিয়া পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ গতকাল শনিবার সকালে মানিকগঞ্জ থেকে সজিব ও সাদিয়াকে একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চাঁদপুর থানায় নিয়ে আসে। জানা যায়, প্রেমিক সজিব পেশায় একজন অটোরিকশা চালক।
একই ভাবে কচুয়া উপজেলার সুমি আক্তার ৩০ অক্টোবর নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। কচুয়া থানায় সুমির বাবা জিডি করেন। পরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুমিকে প্রেমিক হাসান (২২)সহ নরসিংদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসানের বাড়ি হাজীগঞ্জে। সে বেকার ও ভবঘুরে বলে পুলিশ জানায়।
একই সপ্তাহে চট্টগ্রামের চাটগাঁ থানা এলাকা থেকে বেরিয়ে যায় কিশোরী ঝর্ণা। তার কোনো খোঁজ না পেয়ে পরিরবারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। প্রেমিক যুগল চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে বলে জানা যায়। পরে চাঁদপুর মডেল থানার পরিদর্শক সুজন কান্তি বড়ুয়াকে পূর্বপরচিত হিসেবে বিষয়টি জানায় ঝর্ণার স্বজনরা। তিনি একইভাবে মোবাইল ট্র্যাকিং করে ঝর্ণাকে তার প্রেমিকের চট্টগ্রামের বাড়ি থেকে প্রেমিকসহ উদ্ধার করেন। এই প্রেমিক চট্টগ্রামের একটি ওয়ার্কশপ কারখনার দারোয়ান হিসেবে চাকুরি করছেন।
এই তিনটি সাধারণ ডায়েরি করার পর মোবাইল ট্র্যাকিংসহ পুরো উদ্ধার প্রক্রিয়ার কাজটি করতে গিয়ে অনেক কষ্ট ও সময় দিতে হয়েছে বলে জানান পুলিশ পরিদর্শক সুজন কান্তি বড়ুয়া। তিনি আরো জানান, প্রতিটি কিশোরী ও তাদের প্রেমিককে অভিভাবকের জিম্মায় মুচলেকার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। প্রেমিকের সাথে ঘর ছাড়ার সময় এরা কেউ মোবাইল নিয়ে যায়নি বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।