প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:৩৭
মাতৃসেবায় নিবেদিতপ্রাণ পুত্র সালাউদ্দিন
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মধ্য বাঘরা গ্রামের রোকেয়া বেগম, যিনি জীবনসঙ্গী এছাহাক বেপারীর মৃত্যুর পর নিঃসঙ্গ জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছেন। স্বামীর জীবদ্দশায় সুখী সংসার এবং প্রবাসী ছেলেদের অর্থনৈতিক সহায়তায় রোকেয়ার জীবন স্বাচ্ছন্দ্যে কাটছিল। তবে স্বামীর মৃত্যুর পর শারীরিক অসুস্থতা ও সামাজিক অবহেলার কারণে তিনি গভীর অসহায়ত্বের মধ্যে পড়েন।
|আরো খবর
রোকেয়া বেগমের চার ছেলে থাকলেও, প্রবাসে থাকার কারণে তারা মায়ের সেবা করতে অক্ষম। পুত্রবধূরাও তাদের নিজ নিজ সংসারে ব্যস্ত থাকায় রোকেয়ার দেখভালের জন্য কেউ নেই। একদিকে শারীরিক প্রতিবন্ধিতা, অন্যদিকে নিঃসঙ্গতা—এই দুই মিলিয়ে তার জীবন যেন এক নিরব যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি।
তবে এই অন্ধকার জীবনে আশার আলো হয়ে এসেছেন তার ছোট ছেলে সালাউদ্দিন। প্রবাস থেকে ফিরে আসার পর তিনি মায়ের সেবায় নিজেকে পুরোপুরি উৎসর্গ করেছেন। রান্না, ঘর গোছানো থেকে শুরু করে মায়ের গোসল, কাপড় পরানোসহ প্রতিদিনের যত্নের কাজগুলো তিনি নিজ হাতে করেন। একজন ছেলে হয়ে মেয়ের ভূমিকা পালন করছেন তিনি।
রোকেয়া বেগমের প্রতিবেশীরা জানান, দিনভর বাড়ির বারান্দায় একা একা বসে কাঁদতে দেখা যায় রোকেয়াকে। তার দুঃখ-যন্ত্রণা স্থানীয়দের মনেও গভীর দাগ কেটেছে। তবে ছেলে সালাউদ্দিন মায়ের পাশে থেকে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
রোকেয়া বেগম বলেন, "আমার ছোট ছেলে আমার জীবনের শেষ ভরসা। সে ছেলে হয়েও মেয়ের মতো আমার সেবা করে। আমি তার জন্য প্রতিদিন দোয়া করি।"
এমন এক মানবিক গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরিবারের ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধই সবচেয়ে বড় শক্তি। সমাজে সালাউদ্দিনের মতো সন্তানরা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
ডিসিকে/এমজেডএইচ