প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:১৬
উদ্বোধনের চারদিন পরও সেচ-পানি পায়নি মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কৃষকেরা
সোমবার (২০ জানুয়ারি ২০২৫) মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কালীপুর ও উদমদী পাম্প হাউজে পানি সেচের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের চারদিন পর ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সেচ-পানি মিলেনি মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কৃষকদের।
কৃষকদের অভিযোগ, পানি সেচের উদ্বোধনের নামে আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। উদ্বোধনের ১০ মিনিট পর উদমদী পাম্প হাউজ ও ১৩ সেকেন্ড পর কালীপুর সেচ পাম্প বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ পাম্প বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি-২০২৫) পর্যন্ত কয়েক ঘন্টা চালিয়েছে বলে পাম্প হাউজ সূত্র জানিয়েছে।
কালীপুর এলাকার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. বিল্লাল হোসেন জানান, কালীপুর পাম্প হাউজে সেচ উদ্বোধনের কিছুক্ষণের মধ্যেই সেচ পাম্প বন্ধ করে দেয়। সেই বন্ধ হওয়ার পর আজ (২৩ জানুয়ারি ২০২৫) কালীপুর পাম্প হাউজে সেচ পাম্প ২ ঘন্টা চালু ছিলো বলে পাম্প অপারেটর পঙ্কজ জানিয়েছেন। কিন্তু কৃষক এখনও পানি পায় নি। বোরো ধানের চারার বয়স বাড়তে থাকলেও পানির অভাবে কৃষকরা চারা রোপণ করতে পারছে না।
ফরাজিকান্দি এলাকার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, উদমদী পাম্প হাউজে সেচ উদ্বোধনের কিছুক্ষণের মধ্যেই সেচ পাম্প বন্ধ করে। পরে আজ (২৩ জানুয়ারি-২০২৫) সকাল ৯টার দিকে পাম্প চালু করে আবার বন্ধ করে দেয়। বেড়িবাঁধের সাথে কিছু পানি দেখা গেছে। ধানের চারা রোপণের জন্যে এখনও কৃষক পানি পায়নি।
কালীপুর পাম্পের অপারেটর পঙ্কজ জানান, ২১ জানুয়ারি বিকেলে ঘন্টাখানেক পাম্প চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুইবারে দুই ঘন্টা পাম্প চালানো হয়েছে। তবে কৃষক পানি পেয়েছে কিনা সেটা বলতে পারবে না।
কৃষকরা জানান, পানি সেচের উদ্বোধনের নামে আমাদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। কবে নাগাদ পাম্প হাউজের সুইচ চালু করে জমিতে পানি সেচ দেয়া হবে তা কৃষকের অজানা। তাছাড়া খাল ও বিলের পানিও শুকিয়ে গেছে। এখন পানি না পেলে আমরা মাঠে মারা যাবো। ধানের চারার বয়স বেড়ে চলছে। বয়স্ক চারা লাগালে ফলন ভালো হয় না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী জানান, বোরো মৌসুমে (সঠিক সময়ে) সেচ ক্যানেলে এখন পর্যন্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না। এদিকে ধানের চারার বয়স বেশি হয়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে চারা রোপণ করতে না পারলে বোরো মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, বোরো মৌসুমের জন্যে এখনও কৃষক পানি পায়নি। সংস্কার কাজ চলমান থাকায় পানি দিতে পারছে না বলে জানতে পেরেছি। আমি এ ব্যাপারে জেলায়ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলবো। মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলীর মোবাইল ফোন নাম্বারে কল করার পর রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে চলতি মৌসুমের বোরো আবাদের উপযোগী সময় (সঠিক সময়ে) সেচ সুবিধা পাচ্ছে না চাষীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি ২০২৫) পর্যন্ত পানি সেচের সুবিধা পায়নি বোরো চাষীরা। সেচের পানি না পাওয়ায় কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না। ধানের চারার বয়স হওয়ার কারণে উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে হতাশায় ভুগছেন কৃষকরা।