শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৫, ২২:১৮

এসএসসিতে অনুপস্থিত ৩২ হাজার শিক্ষার্থী, ঝরে পড়ার হারে শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
এসএসসিতে অনুপস্থিত ৩২ হাজার শিক্ষার্থী, ঝরে পড়ার হারে শঙ্কা

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ৩২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী, যারা রেজিস্ট্রেশন করেও পরীক্ষার হলে আসেনি।

এই বিপুল অনুপস্থিতি নিয়ে শিক্ষাবিদদের মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।

তাদের মতে, এটি দেশের মাধ্যমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার ক্রমবর্ধমান সংকটের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে ছাত্রীদের অনুপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে বেশি, যা বাল্যবিয়ে, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, ও অভিভাবকদের অসচেতনতার মতো গভীর সামাজিক সমস্যাকে সামনে এনেছে। শিক্ষা ব্যবস্থার এই নীরব বিপর্যয় মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বোর্ড ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছ, সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত পরীক্ষার্থী ছিল ঢাকা বোর্ডে। ৯৪৬ জন ছাত্র এবং ২ হাজার ৩০২ জন ছাত্রীসহ মোট ৩ হাজার ২৪৮ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, যেখানে ৮ হাজার ৭১২ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল, এর মধ্যে ছাত্র ৩ হাজার ৯০০ এবং ছাত্রী ৪ হাজার ৮১২ জন। এছাড়া রাজশাহী বোর্ডে অনুপস্থিত ২ হাজার ৪৮২ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ২ হাজার ২৫১ জন, যশোর বোর্ডে ২ হাজার ৬৩৯ জন এবং দিনাজপুর বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ২ হাজার ৮৩৩ জন শিক্ষার্থী।

বরিশাল বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ১ হাজার ৭৭১ জন, ময়মনসিংহে ১ হাজার ৬০৩ জন, সিলেট বোর্ডে ৭৯৪ জন এবং চট্টগ্রামে অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৪৫ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডেও অনুপস্থিত ছিল ৫ হাজার ৫১৫ জন পরীক্ষার্থী- এর মধ্যে ছাত্র ৩ হাজার ৭৯৩ এবং ছাত্রী ১ হাজার ৭২২ জন।

পরিসংখ্যান বলছে, মোট অনুপস্থিতদের মধ্যে ১৩ হাজার ৭৯০ জন ছেলে এবং ১৮ হাজার ৭০৩ জন মেয়ে। অর্থাৎ ছাত্রীদের মধ্যে অনুপস্থিতির হার তুলনামূলক বেশি।

পরীক্ষার্থীরা গেল কোথায়?

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধানে এক জরিপ পরিচালনা করছে। এতে অংশ নেওয়া ১ হাজার ৩৫০ জন অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪২ শতাংশ পরীক্ষায় অংশ নেয়নি বিয়ের কারণে। তাদের ৯৭ শতাংশই ছাত্রী, তাদের বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা।

জরিপে আরও দেখা যায়, অনুপস্থিতদের মধ্যে ২৫ শতাংশ অসুস্থতা, ১২ শতাংশ প্রস্তুতির অভাব, ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ, ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বিদেশে চলে যাওয়া, ১ দশমিক ৬ শতাংশ গর্ভধারণ এবং ১ দশমিক ৪ শতাংশ মৃত্যুজনিত কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি। অনুপস্থিতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল মানবিক বিভাগ থেকে- ৬৮ শতাংশ, যার মধ্যে বড় একটি অংশ মেয়ে এবং গ্রামাঞ্চলের। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় অনেক কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

এটি কেবল সংখ্যার হিসাব নয় এর পেছনে সামাজিক, অর্থনৈতিক কিংবা পারিবারিক বিভিন্ন বাস্তবতা থাকতে পারে। সেসব বিষয় আমরা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি। সূত্র: ঢাকা পোস্ট

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়