প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ২০:৩৭
ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবসসমূহ পালনে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সভা

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবসসমূহ পালনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ বাস্তবায়নে চাঁদপুর জেলার প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই ২০২৫) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
|আরো খবর
সভাপতি সভার প্রারম্ভে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান-২০২৪-এ সকল শহিদ ও আহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি উল্লেখ করেন, আমরা ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ পেয়েছি। আমাদেরকে সে মোতাবেক পুরো ৩৬ জুলাই ২০২৫ (৫ আগস্ট ২০২৫) পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়ন করতে হবে।
অতঃপর সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে প্রাপ্ত জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫ উপস্থাপন করা হয়। সভাপতি এ অনুষ্ঠানমালার ওপর উপস্থিত সকলকে মূল্যবান মতামত প্রদানের আহ্বান জানান।
সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর বিভিন্ন কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।জেলা প্রশাসক বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদেরকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরকেও আরো উন্নত জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে সকলকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও জুলাই শহীদদের স্মরণে চাঁদপুর জেলাতেও বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহযোগিতা করলে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।
সভায় গণঅভ্যুত্থান দিবসসসূহ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরশাদ উদ্দিন, ডিডি এলজি মো. গোলাম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুচিত্র রঞ্জন দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফর রহমান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মালিহা আবছার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. সেলিম সরকার, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. একেএম সলিম উল্যাহ সেলিম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর জেলা আমীর মো. বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, সেক্রেটারি অ্যাড. মো. শাহজাহান মিয়া, ইসলামী আন্দোলন জেলা সভাপতি মো. মাকসুদুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চাঁদপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. মাহবুব আলম, জুলাই মঞ্চের জাকির হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ড. কাজী হাশেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান, সানাউল্লাহ খান, বাসুদেব মজুমদারসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও তাদের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য সদস্য।
সভায় আলোচনার মাধ্যমে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা চূড়ান্ত করা হয়।
অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে : ১০ জুলাই দেশের নাগরিকদের ওপর অবৈধ আওয়ামী শাসন আমলের জুলুম, অত্যাচার ও জুলাই গণহত্যা নিয়ে ১০টি পোস্টার প্রকাশ করা। একই দিনে জুলাই আন্দোলনের দিনগুলোর স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে সাধারণ মানুষের ফেসবুক পোস্ট হ্যাশট্যাগ করা হবে। ১৪ জুলাই জেলায় স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপন করা হবে।
১৬ জুলাই হবে শিল্পকলার মঞ্চে জুলাইয়ের গল্প বলা অনুষ্ঠান। ১৬ জুলাই শহীদদের প্রাণ হারানো স্থানটিতে ‘স্ট্রিট মেমোরী স্ট্যাম্প’ স্থাপনের কাজ শুরু। ১৮ জুলাই প্রতীকী ম্যারাথন। ১৯ জুলাই জেলার শহীদদের সংখ্যায় বৃক্ষরোপণ। ২৪ জুলাই সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তাহব্যাপী ‘২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন’ প্রতিযোগিতা, সৃজনশীল রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সূচনা।
একইদিনে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে শিশু শহীদদের স্মরণে জুলাইকেন্দ্রিক কবিতা, গান, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। একইদিনে সকল বিদ্যালয়ে জুলাই ২৪ নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ২৭ জুলাই জাতিবৈচিত্র্য দিবস হিসেবে মিউজিক্যাল ভিডিও ‘ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর গান’ অবমুক্ত। একইদিনে অবমুক্ত করা হবে আরো একটি মিউজিক্যাল ভিডিও ‘চলো ভুলে যাই’। ২৮ জুলাই রক্তদান ও মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন। ৩১ জুলাই পুরস্কার বিতরণ। ৩২, ৩৩ এবং ৩৪ জুলাই অর্থাৎ ১, ২ এবং ৩ আগস্ট জুলাইয়ের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ৩৩ জুলাই অর্থাৎ ২ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। ৩৫ জুলাই অর্থাৎ ৪ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম সারির যোদ্ধাদের নিয়ে অনুষ্ঠান ও সম্মাননা প্রদান। ৩৬ জুলাই অর্থাৎ ৫ আগস্ট শহিদ স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ‘স্পট লাইট অব জুলাই হিরোস’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মোনাজাত ও প্রার্থনা এবং শহিদ পরিবারের সম্মিলন আয়োজন।