প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বিষ্ণুদীতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ
বিজয়ের মাসে চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী এলাকায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আয়োজক হচ্ছে বিষ্ণুদী মানব কল্যাণ সংগঠন।
ফাইনাল খেলায় অংশ নেয় বিষ্ণুদী রেঞ্জার ও গ্রীন টাউন স্পোর্টিং ক্লাব। ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে বিষ্ণুদী বালুর মাঠ এলাকায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটির সদস্য ও বিষ্ণুদী ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ সেলিম আকবর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ শেখ জহিরুল ইসলাম ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক জয়েন্ট সেক্রেটারি ও ক্রীড়া সংগঠক অ্যাডঃ বদরুল আলম চৌধুরী এবং ক্রীড়া সংগঠক এমএ খালেক মিয়াজী।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলো ৭টি দল। দলগুলো হলো- বিষ্ণুদী রেঞ্জার, গ্রীন টাউন স্পোর্টিং ক্লাব, ব্লু ক্লিয়ার স্পোর্টিং ক্লাব, আল-আকসা সুপার কিংস, বসুন্ধরা স্পোর্টিং ক্লাব, সেভেন স্টার এফসি ও নিউ সিটি স্পোর্টিং ক্লাব। টুর্নামেন্টে প্রতিটি দলে ১৪ জন করে খেলোয়াড় অংশ নেয়। লীগ পদ্ধতির ম্যাচে ফাইনাল সহ ৪৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে রেঞ্জার ক্লাব।
টুর্নামেন্টের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিষ্ণুদী মানব কল্যাণ সংগঠনের আহ্বায়ক মোঃ সাইফুল ইসলাম খান, যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব মিয়াজী, নুরে আলম মৃধা, সালেহ আহম্মেদ সজিব মৃধা, সদস্য সচিব অ্যাডঃ বদরুল আলম চৌধুরী এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান মিলন, সদস্য সচিব মোঃ সজিব মিয়াজী, সমন্বয়কারী সদস্য রাসেল বেপারী, ফরিদ মিজি, রাকিব মিজি, নোমান মিজি, রানা খন্দকার, রাকিব মিজি, হৃদয় গাজী ও পারভেজ মিজি।
প্রধান অতিথি অ্যাডঃ সেলিম আকবর তাঁর বক্তব্য বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশের একটি ফুটবল দল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ফুটবল খেলায় অংশ নেয়। এই দলটি স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল নামে পরিচিত ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধকালীন প্রথম ফুটবল দল এটি। আর এই দলের নামেই আমাদের পাড়াতে বড় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। আমাদের এলাকাতে প্রতিবছরই যেনো এ সংগঠনের পক্ষ থেকে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়, যাতে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে। বিশেষ অতিথি অ্যাডঃ শেখ জহিরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, বিজয়ের মাসের অনেক আগ থেকেই এ টুর্নামেন্টের খেলাগুলো শুরু হয়। প্রত্যেক দলেই স্থানীয় ফুটবলাররা খেলেছেন। প্রায় দেড়মাসব্যাপী টুর্নামেন্টের খেলা চলাকালীন বিভিন্ন এলাকার ফুটবলারগণ এখানে খেলতে আসেন। আমাদের এ এলাকার সংগঠনটি খেলাধুলার পাশাপাশি সামজিক কর্মকাণ্ডেও জড়িত রয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ক্রীড়া সংগঠক অ্যাডঃ বদরুল আলম চৌধুরী বলেন, আমাদের এ সংগঠন থেকে এলাকায় নিয়মিত সামাজিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়াভিত্তিক ইভেন্ট আয়োজন করা হয়। এলাকার সকলেই মিলে এই টুর্নামেন্টের নামকরণ করেছে। এই টুর্নামেন্টের নামটি ঐতিহাসিক একটি নাম। স্বাধীনতার জন্যে জনমত তৈরি আর তহবিল গড়তেই এপার বাংলার একদল ফুটবল যোদ্ধা ফুটবল ম্যাচ খেলা শুরু করেন ভিনদেশে। বল পায়ে মুক্তিযুদ্ধে লড়েছিলো স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। কৃষ্ণনগর স্টেডিয়াম মোড়ে আজও যেন অদৃশ্য সাইনবোর্ড ঝুলছে। যেখানে সোনার হরফে লেখা, এখানেই পৃথিবীর ইতিহাসে ব্যতিক্রমী এক ফুটবল দলের যাত্রা হয়েছিল। স্বাধীন বাংলা দলের অন্দরে ওই দিনটি তৈরি করেছিল দেশের প্রতি ভালোবাসার এক অবিশ্বাস্য মোহনা।