বুধবার, ০৯ জুলাই, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৬

এ প্রজন্ম মাঠে রেফারিকে মানতে চায় না : রবি চন্দ্র রবি দাস

কামরুজ্জামান টুটুল
এ প্রজন্ম মাঠে রেফারিকে মানতে চায় না : রবি চন্দ্র রবি দাস

খেলাবিমুখ এ প্রজন্ম। খেলতে নামলে রেফারিকেই মানতে চায় না তারা। খেলোয়াড়দের যেখানে ধুমপান নিষেধ, সেখানে আবার খেলতে নামার মুহূর্তেও সিগারেট ফুঁকে। খেলা শেষে হারজিত নিয়ে ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এমন সব নানান কারণে আমাদের সমাজ থেকে খেলা উঠেই গেছে। খেলাবিমূখ হওয়ার সবচে’ বড়ো কারণ এন্ড্রয়েড ফোনের গেম। এ প্রজন্ম এ ফোন ছাড়া চলতে পারে না। মনের আক্ষেপ থেকে উপরের কথাগুলো বললেন এক সময়ের মাঠ কাঁপানো ফুটবল খেলোয়াড় ও রেফারি রবি চন্দ্র রবিদাস (৭০)।

চাঁদপুর কন্ঠের ক্রীড়াকণ্ঠে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে প্রেক্ষাপটের কারণে অনেক কিছু চেপে গেছেন, আবার বলেছেনও অনেক কথা।

দু কন্যা সন্তানের জনক রবি চন্দ্র রবিদাস হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজার সংলগ্ন রবি দাস বাড়ির সন্তান। খুব ছোট বেলাতে বাড়ির সামনে বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ পেয়ে গেছেন, হাঁটি হাঁটি পা পা করে খেলতে গিয়ে এক সময় নিজে হয়ে উঠেন ভালো মানের খেলোয়াড়। সবচে’ বড়ো কথা হলো, জীবনে কতো খেলা যে খেলেছন তার কোনো হিসেব নেই। অধিকাংশ খেলা খেলেছেন হায়ারে মানে ভাড়াটে হয়ে। বুট ছাড়া ফুটবল খেলার কথা কল্পনাও করতো না তাদের প্রজন্ম।

১৯৭৮ সালে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে টিনের বেড়ার পাশে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ২ টাকায় টিকেট কিনে রবি দাসের খেলা দেখেছে বহু দর্শক। তখন তিনি চাঁদের হাট নামের একটি ক্লাবের হয়ে খেলতেন। বাবুরহাট হাই স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ, বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বলাখাল জে এন হাই স্কুল মাঠ, হাজীগঞ্জ সরকারি পাইলট হাই স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ঠিক কতোশ’ বার খেলেছেন তার কোনো হিসেব নেই। উপজেলার বাইরে ভাড়াটে খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন প্রচুর খেলা। ভালো খেলোয়াড় হবার কারণে চারদিকেই ডাক পড়তো। যেতেন, খেলতেন। যাদের হয়ে খেলতেন, তাদের বেশিরভাগ দলকে জিতিয়ে দিতেন। বয়সের কারণে খেলা বন্ধ করে রেফারি হিসেবে কাজ শুরু করেন। রেফারিতেও নাম করেন রবি দাস।

তাদের প্রজন্ম আর বর্তমান প্রজন্মের খেলার তফাৎ খুঁজতে গিয়ে সবকিছুতে বিশাল তফাৎ পান সাবেক খেলোয়াড় রবি চন্দ্র রবি দাস। তাদের সময় রেফারির কল ছিলো শিক্ষকদের আদেশের মতো। এ প্রজন্ম মাঠে রেফারির বাঁশিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে কুণ্ঠাবোধ করে না। তিনি বলেন, আমাদের সময়ে মাঠে গণ্ডগোল কী সেটা কল্পনা করা যেতো না, আর এখন খেলা মানে মাঠে গণ্ডগোল। আমাদের সময় খেলোয়াড়রা সিগারেট খেতো না। এ প্রজন্ম মাঠে নামার আগে সিগারেট ফুঁকে। যে কারণে বেশিক্ষণ দৌড়াতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠে। আমরা বুট দিয়ে দুমছে খেলতাম, আর এ প্রজন্মের অনেকে বুট কী জিনিস চিনেই না। আমাদের সময় খেলা উপলক্ষে মাইকিং করা হতো চারদিকে, এখন মাইকিং করলেও মাঠে দর্শক আসে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়