বুধবার, ০৯ জুলাই, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪২

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার মহতী উদ্যোগে

নতুন করে প্রস্তুত হচ্ছে ফরিদগঞ্জের প্রধান খেলার মাঠ

প্রবীর চক্রবর্তী
নতুন করে প্রস্তুত হচ্ছে ফরিদগঞ্জের প্রধান খেলার মাঠ

ফরিদগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত আবিদুর রেজা পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি অন্যতম ক্রীড়া মাঠ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া এই মাঠেই অনুষ্ঠিত হয় সকল জাতীয় দিবসের কর্মসূচি। স্টেডিয়াম না থাকায় উপজেলার সকল প্রকার ক্রীড়ার চারণভূমি হিসেবে পরিণত হওয়া মাঠটি পরিচর্যার অভাবে প্রায় নষ্ট হয় গিয়েছিলো। অবশেষে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতির নেতৃত্বে ক্রীড়া সংস্থার সদ্যস্যদের চেষ্টায় নতুন করে প্রস্তুত হচ্ছে খেলার মাঠটি।

সরেজমিনে ফরিদগঞ্জ আবিদুর রেজা পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠে ট্রাকে ট্রাকে বালি ফেলার পর ট্রাক্টর দিয়ে পুরো মাঠটির উপরে ফেলা হচ্ছে মাটি।

মাঠের লেভেল সঠিক করার জন্যে ক্রীড়া সংস্থার সদস্য জিয়াউর রহমান জিয়া এবং জাতীয় ক্রিকেট লীগের নিয়মিত খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সাদ্দাম হোসেন নিজেরা সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে তদারকি করছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের বিশেষ বরাদ্দ থেকে প্রাপ্ত অর্থের দেড় লাখ টাকা দিয়ে এই মাঠ সংস্কারের কাজ চলছে। তবে দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় এই অর্থে পরিপূর্ণ মাঠ সংস্কার হবে না এমন দাবি ক্রীড়াবিদদের।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ক্রীড়া সংগঠক আনোয়ার হোসেন জানান, উপজেলায় কোনো স্টেডিয়াম না থাকায় উপজেলা সদরের ক্রীড়ার জন্যে একমাত্র ব্যবহারযোগ্য মাঠ এ আর পাইলট স্কুলের মাঠ। মাঝে মধ্যে কয়েক ট্রাক বালি ফেলে নামকাওয়াস্তে কাজ করা হলেও এবারই ক্রীড়া সংস্থার সদস্যদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে মাঠটি সংস্কার হচ্ছে। অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার মতো কাজ করেছেন ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া।

ক্রীড়া সংস্থার আরেক সদস্য ও ক্রীড়া সংগঠক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, আমি ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ। যখনই কোথাও খেলার কথা শুনি সেখানেই ছুটে যাই নিজেদের দল নিয়ে। কিন্তু ক্রিকেট বলুন বা ফুটবল বলুন যে খেলাই হোক না কেন, খেলোয়াড়দের নিয়মিত প্র্যাকটিসের জন্যে এ আর হাইস্কুলের মাঠটি মোটেও ভাল ছিলো না। এই মাঠটিতে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামসহ অনেক দেশী ও বিদেশী খেলোয়াড় খেলে গিয়েছেন। কিন্তু মাঠটি খেলার অনুপযোগী হওয়ায় অনেকেই খেলতে অনাগ্রহ দেখান। অবশেষে আমাদের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে ইউএনও মহোদয় মাঠ সংস্কারের জন্যে বরাদ্দ দিয়েছেন। আমরা নিজেরা উপস্থিত থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করছি।

জাতীয় ক্রিকেট লীগের খেলোয়াড় ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সাদ্দাম হোসেন বলেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলেয়াড় শামীম পাটওয়ারী, মাহমুদুল হাসান জয়, জাতীয় ফুটবলের সাবেক অধিনায়ক রেজাউল রেজা, জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়োড় রাফিসহ অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছেন ফরিদগঞ্জের। এছাড়া উঠতি অনেক তারকাও রয়েছে। তাদের জন্যে একটি ভালো মাঠ প্রয়োজন। দেরিতে হলেও আমরা নিজেরাই তদারকি করে মাঠটি প্রস্তুত করছি। আবার জেগে উঠবে এ আর হাইস্কুল মাঠ এই প্রত্যাশা ধারণ করি।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, উপজেলার ক্রীড়া কার্যক্রমকে সচল করার জন্যে যে বড়ো বড়ো মাঠগুলো আছে, সেগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। বেশ কয়েকটি খেলার মাঠে এর মধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : ফরিদগঞ্জ আবিদুর রেজা পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। এই মাঠের জন্যে আমরা বিভাগীয় কমিশনার সারের কাছ থেকে বরাদ্দ পেয়েছি। পরবর্তীতে ফরিদগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার কমিটির সদস্যগণ সক্রিয়ভাবে উপস্থিত থেকে এই মাঠের সংস্কার কার্যক্রমটি তদারকি করছেন। এছাড়া আরো বেশ ক’টি বড়ো বড়ো খেলার মাঠ রয়েছে। সবক’টিই আমরা এরকম সুন্দরভাবে খেলার উপযোগী করবো, যেন ফরিদগঞ্জের ছেলেমেয়েরা খেলার জন্যে একটি সুস্থ সুন্দর পরিবেশ পায়।

‘আপনি তো ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি। ফরিদগঞ্জের ক্রীড়া উন্নয়নে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্রীড়া উন্নয়নে আমাদের বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা চাই যে, ফরিদগঞ্জের প্রত্যেক বিদ্যালয়ে খেলার জন্যে সম্পূর্ণ সুন্দর পরিবেশ থাকবে এবং যাতে ইফেক্টিভ খেলার পরিবেশ থাকবে। শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত তাদের প্রস্তুতি নিতে পারে। এছাড়া সারা বছরব্যাপী বিভিন্ন খেলার প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে। এভাবে আমরা ফরিগঞ্জের আনাচে কানাচে থেকে ভালো ভালো খেলোয়াড় তুলে নিয়ে আসতে পারবো। আমাদের সেই রকম পরিকল্পনা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়