প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২০:৫৪
ফরিদগঞ্জের সুবিদপুরে গৃহবধূ নির্যাতন।। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৪নং সুবিদপুর পশ্চিম
|আরো খবর
ইউনিয়নের ভুলাচৌ গ্রামের হাওলাদার বাড়িতে পারিবারিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে এক গৃহবধূ মারধরের শিকার হয়েছেন। রোববার (২৪ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২নং বালিথুবা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মেয়ে তাহমিনার বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই স্বামী মানিকের পরকীয়ায় পারিবারিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। সেই সূত্রের জেরে দীর্ঘ ৪ বছর ধরে তিনি তাহমিনা এবং তার মেয়ের কোনো ভরণপোষণ দেননি। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিদেশ ফেরত স্বামী মানিক স্ত্রী তাহমিনাকে তালাক দিয়ে খালাতো বোনকে বিয়ে করেন। তবে পাওনা টাকা না পেয়ে তাহমিনা তার মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন এবং আদালতে মামলা দায়ের করেন।
গত রোববার (২৪ আগস্ট ২০২৫) বিকেলে তাহমিনাকে তার দেবর, স্বামী ও ভাসুর মিলে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়ে বসতঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে তাহমিনার পরিবারের অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ভাসুর জাকির হোসেন দেশীয় অস্ত্র হাতে পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন। এমনকি পুলিশের সামনেই তাহমিনার ভাই মিলনকে বেদম মারধর করা হয়। এ সময় আহত মিলন জানে বাঁচার জন্যে পাশের একটি ঘরে আশ্রয় নেন। এর আগেই মিলন মারাত্মকভাবে জখম হন।
এ ঘটনায় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে পুলিশের আরেকটি টিম গিয়ে অতীতের পারিবারিক দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তবে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার এবং অস্ত্রধারীকে আটকের কোনো উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জাকির ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে তাহমিনার ওপর অত্যাচার চালিয়ে আসছেন এবং বাড়িতে কেউ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদকারীর উপরও চলে আসে অত্যাচার। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলেন, পুলিশের সামনে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করলো, কয়েকজনকে মেরে আহত করলো, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। বিষয়টি হতাশাজনক।
ভুক্তভোগী তাহমিনা বলেন, আমার ১০ বছরের সংসার। কয়েক বছর ধরে কোনো খরচ দেয়নি স্বামী। আমি মানুষের বাসায় কাজ করে সংসার চালাচ্ছি। সে আমাকে তালাক দিলেও পাওনা টাকা দেয়নি। অথচ আমাকে ও আমার মেয়েকে কুকুরের মতো মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।
অন্যদিকে স্বামী মানিক দাবি করেন, আমি তাকে তালাক দিয়েছি কয়েক মাস আগে। সে কেনো আমার ঘরে থাকবে, তাই আমি তাকে বের করে দিয়েছি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ আলম বলেন, ঘটনাটি ফৌজদারি অপরাধ। অস্ত্রের বিষয়ে পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।