বুধবার, ০৯ জুলাই, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৩

চাঁদপুরের সুপরিচিত ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক আনোয়ার মাঝি

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুরের সুপরিচিত ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক আনোয়ার মাঝি

মো. আনোয়ার হোসেন মাঝি হলেন চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার একজন পরিচিত ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক। শহরের পুরাণবাজার নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের হয়ে একটা সময় খেলেছেন টানা দশ বছর ফুটবল, এরপর ক্রিকেট। পরবর্তীতে ক্রীড়া সংগঠক। এখনো চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে মাঠে রয়েছে তার সরব উপস্থিতি। রাজনীতি ও ব্যবসার পাশাপাশি তার প্রিয় ক্লাব নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। এই ক্লাবেরই বর্তমান সাধারণ সম্পাদক।

মো. আনোয়ার হোসেন মাঝির পিতার নাম মরহুম আব্দুল করিম মাঝি। বাবা ছিলেন পুরাণবাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। খেলোয়াড়ি জীবন শুরু স্কুল জীবন থেকে। পুরাণবাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। এই স্কুল টিমের হয়ে স্কুল ফুটবল খেলেছেন। তার প্রথম ক্লাব নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্র। বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই এলাকায় হওয়াতে নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের হয়ে খেলোয়াড়ি জীবনের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে তার।

আনোয়ার মাঝি জানান, নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের পক্ষে অসংখ্য ফুটবল ম্যাচ খেলেছেন তিনি। পাড়ার ক্লাবের সুবাদে খেলা হয় চাঁদপুর জেলা দলে। দেশের বিভিন্ন জেলাতেও ফুটবল খেলেছেন। পর্যায়ক্রমে ১৯৮০ সাল থেকে কুমিল্লা প্রথম বিভাগে একটানা নয়-দশ বছর ফুটবল খেলেছেন। সেই সময়ে কুমিল্লা ওয়ান্ডার্স ক্লাব এবং কুমিল্লা বাংলাদেশ ইউনাইটেড ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলেন। ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম প্রথম বিভাগ ফুটবলে ডাক পান। চট্টগ্রাম লীগে বাংলাদেশ টোব্যাকো (বিটিসি)তে টানা ১০ বছর ফুটবল খেলেন। তার ফুটবল পজিশন ছিলো রাইট উইং। খেলার মাঠে খুবই তীব্র গতির প্লেয়ার ছিলেন তিনি। ১৯৮৪-৮৫ তে ঢাকার দ্বিতীয় বিভাগে বিজিএমসি এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা দলের হয়ে ফুটবল খেলেছেন ৫ থেকে ৭ বছর। যতোদিন ফুটবল খেলেছেন বেশ সুনামের সাথেই ফুটবল খেলেছেন। ফুটবল খেলায় প্রথম হাতে খড়ি সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড় প্রয়াত অমল দত্তের কাছ থেকে। তারপর ঢাকা থেকে আগত ফুটবল কোচ ওমর চাঁদ, মুন্সীগঞ্জের মোতালেব স্যারের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

আনোয়ার মাঝি বলেন, আমি সহ পুরাণবাজারের তৎকালীন সময়ে অনেক খেলোয়াড় ঢাকা, কুমিল্লা, চিটাগাং নিয়মিত লিগ খেলেছেন। তাদের মধ্যে আছেন অর্জুন নাগ, রাখাল, বোরহান, হারুঘোষ, গোবিন্দ সাহা, অসীম মিশ্র, মঞ্জু মাঝি বাদল, শাহজাহান শাহা ( হাজীগঞ্জ), নতুন বাজারের জয়নাল আবেদীন জনু প্রমুখ।

তিনি জানান, আমাদের পরে পুরাণবাজারের ফুটবল খেলা যেন ঝিমিয়ে গেছে। ফুটবল খেলার পাশাপাশি ক্রিকেট যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠে, তখন থেকে নিয়মিত ক্রিকেট খেলা শুরু করি।

চাঁদপুর জেলা দলের নিয়মিত ক্রিকেটার ছিলেন আনোয়ার মাঝি। তার পজিশন ছিলো মিডিয়াম ফাস্ট বোলার। রান সংগ্রহে দায়িত্বশীল ব্যাটিংও করতেন তিনি। এলাকার ক্লাব নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের হয়েই ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। এই ক্লাবকে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে তিনবার চ্যাম্পিয়ন করার পেছনে তার অবদান কম নয়। ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্রিকেট খেলেছেন। তারপর থেকে আবির্ভূত হন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে। নিতাইগঞ্জ ক্রীড়াচক্রের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সাথে জেলা ক্রীড়া সংস্থার যে কোনো লিগ টুর্নামেন্টের সাথেও জড়িত থাকেন। তৃণমূল পর্যায়ে ক্রীড়া সংস্থার খেলাধুলার উন্নয়নে কাজ করছেন। খেলাধুলার নেশার কারণে ব্যক্তিগত জীবনে অন্য কোনো পেশায় বা চাকরি করার সৌভাগ্য হয়নি। সেই স্কুল জীবন থেকে এখন বয়স ষাটোর্ধ্ব। থেমে যাননি, পারেননি ক্রীড়াঙ্গন থেকে দূরে থাকতে ।এখানেই তার ক্রীড়াঙ্গনে থাকার সফলতা এবং ব্যর্থতার সবকিছু।

তার মতে, খেলাধুলায় উৎসাহী ঐতিহ্যবাহী পুরাণবাজারে সেই আগের মতো খেলাধুলার জোয়ার নেই। ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবলসহ কত খেলাধুলাই না এখানে চর্চা হতো। এসব এখন অতীত স্মৃতি। আমাদের প্রজন্মকে বিপথগামিতা থেকে রক্ষা করতে হলে এখানকার খেলাধুলাকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থাকতে হবে পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষকতা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়