বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ২২:৫৫

ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার একটি সড়ক নির্মাণে নানা প্রশ্ন

শামীম হাসান।।
ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার একটি সড়ক নির্মাণে নানা প্রশ্ন
ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকায় নির্মাণাধীন সড়কের চলমান কাজ, যেটি প্রশ্নবিদ্ধ।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার বহুল প্রত্যাশিত ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কের নিকটস্থ টিএন্ডটি মোড় থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস হয়ে এআর হাইস্কুল রোড পর্যন্ত সড়ক পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, গভীর রাতে নিম্নমানের ‘রাবিশ’ (ফেলে দেয়া ইট-সুরকির মিশেলে নির্মাণ সামগ্রী) দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন (UGIIP) প্রকল্পের আওতায় IUGIP/FARI/UT/+DR/02/2023 নং প্যাকেজে ৮৫৮৯৯৬ নং ইজিপি টেন্ডারের মাধ্যমে ১ কোটি ৯১ লাখ ১৯ হাজার ১৩৫ টাকায় কাজটি পায় এস.এস. রহমান ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী ৫৯০ মিটার আরসিসি সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি রাস্তার পাশে ২১টি সোলার লাইট স্থাপন করার কথা রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণ কাজে রাবিশ ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে দিনের আলোয় না করে রাতের আঁধারে কাজ চালানোয় অনিয়মের আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে। এদিকে সড়ক নির্মাণে কচ্ছপ গতির কারণে বৃষ্টি এলেই দুর্দশা নেমে আসে পৌরবাসীর জীবনে। সামান্য রাস্তা পার হতেই লেগে যায় অনেক সময়। অটোবাইক ও সাইকেলের মতো পরিবহনের দুর্ঘটনা যেনো নিত্যদিনের ঘটনা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, এই রাস্তা দিয়ে ফরিদগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজ, ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রতিদিন ফরিদগঞ্জের পূর্বাঞ্চলের শত শত মানুষ চলাচল করে। এতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এমনভাবে কাজ হলে তো কিছুদিন পরেই আবার জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা মাহবুবুর রহমান জানান, আপনারা চাইলে পৌর কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। কাজের অনিয়ম দেখা গেলে তারাই ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরও স্বীকার করেন বলেন, আমরা প্রকল্পের অন্যান্য কাজ সাব-ঠিকাদার দিয়ে করিয়েছি, কিন্তু এই কাজটি সময়মতো না হওয়ায় এখন নিজেরাই করছি।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, ঠিকাদার প্রথমে রাস্তার কার্পেটিংয়ের মালামাল সরিয়ে নিয়েছিলো। বিষয়টি জানার পর আমরা তা আবার ফিরিয়ে আনি। সেই মালামালই রাবিশ হিসেবে চিহ্নিত। তবে রাতের আঁধারে কাজ চালানো নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অনুপস্থিতিতে তারা রাতের বেলায় কিছু জিনিসপত্র সরায়, আমরা তা জানার পর ফেরত আনাই।

জনগুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকলে উন্নয়ন কার্যক্রম ভেস্তে যেতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ পৌরবাসীর—এই প্রকল্পে যেসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার দ্রুত তদন্ত ও কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণ করা হোক।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়