প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ২১:৪২
উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ প্রতিরোধে একটি মানসম্মত বাস্তবায়ন পদ্ধতির সফল প্রয়োগ
গবেষণার ফলাফল স্বাস্থ্যখাতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে

উপজেলা পর্যায়ে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মানসম্মত বাস্তবায়ন কার্য্ক্রম মূ্ল্যায়ন করা হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অপারেশনাল প্ল্যান উপজেলা হেলথ কেয়ার ও কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের সহযোগিতায়। অর্থায়ন করেছে Integrated Health Science Research and Development Fund, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
|আরো খবর
এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল - উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন সাব-সেন্টার এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি এবং চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন করা। এছাড়াও একটি পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যবস্থাগুলোকে উন্নত করা।
গবেষণায় দেখা যায়, পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির হার ১৮% থেকে বেড়ে ৬০% হয়েছে। জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ২০% থেকে ৫০% পর্যন্ত উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। একই সঙ্গে রোগীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সন্তুষ্টির হার ৪৫% থেকে ৬৫%-এ পৌঁছেছে।
ডা. আবু হোসাইন মো.মইনুল আহসান, পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখা), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সভায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। গবেষণার প্রধান গবেষক ডা. ফারজানা তাহের মুনমুন। অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত গবেষণা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন। ডা. ফাতেমা করিম, ডিপিএম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সভাটি সঞ্চালনা করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালকবৃন্দ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
গবেষণার প্রধান গবেষক ডা. মুনমুন বলেন, “এই গবেষণার ফলাফল স্বাস্থ্যখাতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে উপজেলাভিত্তিক পর্যায়ে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। বিশেষ করে, নিয়মিত প্রশিক্ষণ, তদারকি ও স্থানীয় অংশীদারদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা হলে সংক্রমণ হ্রাসে সফলতা পাওয়া যাবে।” গবেষণায় কিছু চ্যালেঞ্জও চিহ্নিত হয়েছে, যেমন লজিস্টিকসের পর্যাপ্ত ব্যবহার না হওয়া, প্রশিক্ষণের ঘাটতি, তদারকির দুর্বলতা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে স্বদিচ্ছার অভাব।
এই গবেষণার সুপারিশ অনুযায়ী, উপজেলা পর্যায়ে একটি মানসম্মত সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, নিয়মিত প্রশিক্ষণ, সক্রিয় কমিটি এবং জাতীয়-স্থানীয় পর্যায়ে জোরালো তদারকি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। গবেষণা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআরবিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল হোসেন মন্তব্য করেন উক্ত গবেষণা কার্যক্রমের ফলাফল শুধুমাত্র উপজেলা নয়, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে এবং এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের পৃথক বিভাগ চালু করা উচিত। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বৃদ্ধিকরণের বিষয়ে নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টিপাত করার বিষয়ে মন্তব্য করেন ডা. জয়নাল আবেদিন টিটু, লাইন ডাইরেক্টর হাসপাতাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা।
ব্রিগে. জেনারেল আবু নোমান মোঃ মোসলেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত গবেষণা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বিশেসায়িত হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ও তা বাস্তবায়ণের জন্য মনিটরিং এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ব্রিগে. জেনারেল সাইদুর রহমান, পরিচালক কুর্মিটোলা বলেন হাসপাতাল বিদ্যামান যন্ত্রপাতি ও সামগ্রীর ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দলগত প্রচেষ্টা প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ডা. মুরাদ সুলতান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিনিধি এই গবেষণায় প্রস্তুতকৃত স্বাস্থ্য শিক্ষা উপকরণের বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন। ডা.রিজওয়ানুর রহমান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) গবেষণা কার্যক্রমের প্রাপ্ত ফলাফল অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠানে প্র্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন:
ডা. ফারজানা তাহের মুনমুন
ওএসডি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বর্তমানে KOICA ফেলোশিপ প্রোগ্রামে Yonsei University তে অধ্যায়নরত
ইমেইল: [email protected]
হোয়াটসঅ্যাপ: +৮৮০১৭১১৪৬৩১৯২