প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
কাদামাখা পুরো মাঠটিই যেনো বর্তমান চাঁদপুর স্টেডিয়ামের চিত্র। গত মাসের শেষদিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই মাঠটিতেই শুরু হয় ২০তম জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল ও প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া আন্তঃউপজেলা প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট। চলতি মাসের ৬ অক্টোবর থেকে সেই মাঠটিতেই শুরু হয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় (অনূর্ধ্ব-১৭) বালক ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব (অনূর্ধ্ব-১৭ বালিকা) ফুটবল টুর্নামেন্ট। ৩টি টুর্নামেন্টের খেলাগুলো হয়েছে প্রচণ্ড বৃষ্টি ও কাদামাখা মাঠে।
জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রথম সেমি-ফাইনালটি যেনো হয়েছে দিবারাত্রির ম্যাচের মতো। মাঠের পাশেই রয়েছে বেশ ক'টি মসজিদ। ওই ম্যাচে যখন মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজের আওয়াজ শোনা গেছে, তখনও মাঠে দুদলের মধ্যে টাইব্রেকার চলে। স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ ভিআইপি গ্যালারির সামনে ভাড়া করা চার্চলাইট জ্বালিয়ে দিলেও মাঠের মধ্যে ছিলো না তেমন খেলার পরিবেশ। ভিআইপি গ্যালারির লাইটের কারণে টাইব্রেকার করতে আসা ফুটবলারদেরকে লাইটের ফোকাসে চোখে বল মারতে গিয়ে এলোমেলো হতে হয়। আর খেলার মাঠটিতে তো ছিলো জমে থাকা বৃষ্টির পানি ও কাদা।
জেলা শহরের প্রধান এ মাঠটির এ অবস্থার মধ্যে ফুটবলার ও প্রমীলা ফুটবলারসহ বয়সভিত্তিক বিভিন্ন বয়সী ফুটবলাররা খেলতে নেমে কাদাতে মাখামাখি হয়েছেন, আহতও হয়েছেন বেশ ক'জন। এ নিয়ে যেনো স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের ভালো কোনো পদক্ষেপ নেই। চাঁদপুর স্টেডিয়ামের ন্যায় দেশের বিভিন্ন বড় বড় মাঠে বৃষ্টির পানি পড়লেও জমে থাকে না। সেই সমস্ত মাঠের কর্তৃপক্ষ বৃষ্টির সময় মাঠে ঠিকমতো খেলাধুলার আয়োজন করে না। এমনকি দুর্যোগপূর্ণ আবহওয়ায় মাঠে খেলার আয়োজন করে না কিংবা খেলার নির্ধারিত তারিখ থাকলেও মাঠে খেলার পরিস্থিতি না থাকলে খেলা বন্ধ করে রাখে, না হয় খেলার সময়সূচি পরিবর্তন করে দেয়। কিন্তু চাঁদপুরের মাঠটিতে দেখা গেলো পুরো ব্যতিক্রম। বৃষ্টির পানি সরানোর তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই । মাঠের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানিতে কাদা হওয়ার কারণে খেলোয়াড়রা ঠিকমতো মাঠে দাঁড়াতেও পারেনি।
সরজমিনে টুর্নামেন্টের খেলা চলাকালীন দেখা গেছে, খেলা শুরু হওয়ার আগে যে বৃষ্টির পানি মাঠে জমে রয়েছে, সেগুলো সরানোর কোনো ব্যবস্থা না রেখেই টুর্নামেন্টের খেলাগুলোতে খেলোয়াড়রা খেলেছেন। তাছাড়া মাঠের সামনের কিছু অংশ ও মাঠের ভিতরের কিছু অংশে ঘাস কম থাকার কারণে পানিগুলো মাঠের অন্য অংশতে গিয়ে আটকিয়ে থাকে। মাঠের ওই সমস্ত জায়গায় ঘাস বড় থাকার কারণে পানি বের হওয়ার কোনো পথও তৈরি করেনি জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃপক্ষ।
খেলা দেখতে আসা জেলা সদর ও বিভিন্ন উপজেলার ক্রীড়ামোদী দর্শকরা এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, জেলা সদরে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামটি। এই স্টেডিয়ামে মাঝে মাঝে যদিও জেলা ক্রীড়া সংস্থা কর্তৃপক্ষ খেলাধুলার আয়োজন করে থাকে, সেই খেলাগুলো যেই সিজনে হওয়ার কথা, সেই সময়ে আয়োজন হয় না। অনেকদিন পরই তিনটি টুর্নামেন্টের খেলা হচ্ছে এই মাঠটিতে, কিন্তু মাঠটিতে খেলার তেমন উপযুক্ত পরিবেশ নেই বলেই আমরা মনে করি। এছাড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা যদি সিজনওয়ারি খেলাধুলার আয়োজন করে, তাহলে হয়তো মাঠের এই রকম অবস্থায় খেলোয়াড়দের মাঠে নামতে হবে না।
টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া বিভিন্ন দলের বেশ ক'জন ফুটবলারের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তারা বলেন, আমরা জেলা সদরের প্রধান মাঠ চাঁদপুর স্টেডিয়ামে খেলতে আসি বিভিন্ন দলের হয়ে। কিন্তু মাঠটির এই অবস্থাতে আমাদের খেলতে খুব সম্যসা হয়। আমরা আশা করবো, স্টেডিয়ামের প্রধান জেলা প্রশাসকসহ অন্যরা এই ব্যাপারে ভালো পদক্ষেপ নিবেন।