প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ০০:০০
লাওকোরায় মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনগুলো : শুধুই স্মৃতি, নেই স্মৃতিসৌধ!
হাজীগঞ্জ উপজেলার লাওকোরায় মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনগুলো শুধুই স্মৃতি প্রত্যক্ষদর্শীদের চোখে। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও লাওকোরায় মুক্তিযুদ্ধের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোর স্মৃতি ধরে রাখতে কোনো স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়নি। ফলে লাওকোরা মুক্তিযুদ্ধের ভংয়কর দিনগুলো ও যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ভুলতে বসেছে পরর্বতী প্রজন্ম এবং শহীদ পরিবারগুলোর মাঝে দিন দিন বাড়ছে হতাশা।
|আরো খবর
১৯৭১ সালের ২৩ অক্টোবর পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির সাথে মুক্তিবাহিনির সরাসরি যুদ্ধ সংঘটিত হয় লাওকোরায়। সে ভংয়কর যুদ্ধে দুই মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৭ জন নিহত হয়। আহত হয় ৭ জন। প্রায় ২৫জন নারী নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। আর লাওকোরা মজুমদার বাড়ির প্রায় ৮৭টি ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়।
নিহত দুই মুক্তিযোদ্ধা হলেন : শাহরাস্তি উপজেলার আজাগরা গ্রামের শহীদ ইলিয়াছ হোসেন (১৮) ও হাজীগঞ্জ উপজেলার শমেশপুর গ্রামের শহীদ এসএম জহিরুল ইসলাম (১৮)। লাওকোরা গ্রামের শহীদরা হলেন : জয়নাল আবেদীন মজুমদার (৫৫), ইয়াছিন মজুমদার (২৫), সৈয়দ আব্দুল বাতেন (২৮), মোঃ আবু তাহের (১৬), হাফিজ উদ্দিন পাটওয়ারী (৫৮), আমির হোসেন পাটওয়ারী (৫৫), চাঁদ মিয়া পাটওয়ারী (৩০), সোনা মিয়া (৭৫), চাঁদ মিয়া বেপারী (৩৮), ছিদ্দিকুর রহমান সর্দার (৪৫), সৈয়দ মোস্তফা কামাল (৩৭), মোঃ ফোরকান (১৬), মোঃ হুমায়ন কবির (১৭), ফাতেমা খাতুন (৫৬) ও রাহেলা খাতুন (৪৫)।
আহতরা হলেন : জুনাব আলী মজুমদার (৬৮), হাফিজ উদ্দিন (৭০), মোঃ আব্দুর রহিম বেপারী (৩৫), মোঃ তবদিল হোসেন (১৪), রহিমা খাতুন(১৮), রেজিয়া খাতুন(১৪) ও তাজুল ইসলাম (২৫)।
আহত মোঃ তবদিল হোসেন বলেন, আমার পায়ে পাকিস্তানি বাহিনির গুলি লাগে। এখনো সে কথা মনে হলে শরীর কেঁপে উঠে। এতোগুলো বছর ধরে পাকিস্তানি বাহিনির গুলির চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছি।
নিহত ছিদ্দিকুর রহমান সর্দারের ছেলে আমির হোসেন সর্দার জানান, ১৯৯৭ অথবা ’৯৮-এর দিকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আমাদেরকে ১৫ হাজার টাকা করে দিয়েছিলো। এরপর আর আমাদের খোঁজ আর কেউ নেয়নি। আমরা টাকাণ্ডপয়সা চাই না, লাওকোরায় মুক্তিযুদ্ধের ভংয়কর দিনটার সঠিক ইতিহাস রক্ষার জন্যে সরকার কিছু একটা করে যেন, সেটাই চাই। তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির বর্বরতার কথা জানতে পারবে।