প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার মধ্যে অবস্থিত মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু হলে ঢাকা থেকে চাঁদপুরের দূরত্ব ৫২ কিলোমিটার কমে আসবে। সেতুটি এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক লাইফলাইন রূপে কাজ করবে।
মেঘনা-ধনাগোদা নদীর উপর মতলব উত্তর (জামালপুর)-গজারিয়া (ভবেরচর) সড়কে সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা কাজের স্টেকহোল্ডার মিটিং হয়েছে সেতু বিভাগের সচিব মোঃ মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে। ঢাকা থেকে গৌরীপুর-মতলব উত্তর উপজেলা ও চাঁদপুর জেলা সদরের বর্তমান দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। কিন্তু ঢাকা থেকে ভবেরচর হয়ে গজারিয়া উপজেলার সীমানার উপর দিয়ে প্রস্তাবিত সেতু হলে চাঁদপুর জেলা সদরের দূরত্ব সর্বোচ্চ ৬৮ কিলোমিটার হবে। এছাড়া মতলব উত্তরের কালীপুর ও গজারিয়ার ভবেরচরের মধ্যে অবস্থিত ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু আজও সেতু নির্মাণ হয়নি। এই সেতুটি না থাকায় মতলব উত্তরের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীপথে যাতায়াত করেন। এতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই।
জানা যায়, নদীকে বাঁচাতে নদীর দুই পাড়ে দুটি প্রধান পিলার নির্মাণ করা হবে। নদীবক্ষ থেকে ৩০ মিটার উঁচু দৃষ্টিনন্দন ঝুলানো তারে ব্রিজটি চার লেইনে নির্মাণ করা হবে। এটিই হবে বাংলাদের প্রথম দীর্ঘ তারে ঝুলানো ব্রিজ। যা আলোকিত অবস্থায় ৭০-৮০ কিলোমিটার দূর থেকে দৃশ্যমান হবে। নির্মিত হলে এটি দেশের সর্ববৃহৎ তারে ঝুলানো সেতু হিসেবে পরিচিতি পাবে। মূলত, সর্বোচ্চ কম খরচে সেতুটি নির্মাণের জন্যে প্রাথমিক নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। নদীর সবচেয়ে কম প্রশস্ত এলাকা চিহ্নিত করে নকশা প্রণয়ন করা হয়। এছাড়া বসতবাড়ি যাতে কম ভাঙা পড়ে, সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই নকশা প্রণয়ন হয়েছে। জানা যায়, উল্লেখিত নকশা অনুযায়ী বসতবাড়ি কম ভাঙা পড়বে। আরো জানা যায়, তিনটি রিজিওনাল সেতুর নকশা প্রণয়নের জন্যে বৈঠকে বসলেও এ সেতু নির্মাণের নকশাটি সবার আগে চূড়ান্ত করা হয়।
মতলব ও গজারিয়ার মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হলে শুধু চাঁদপুরই নয়, সড়কপথে বৃহত্তর নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষজন দ্রুত সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সিলেটে পৌঁছতে পারবেন।
মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুস জানান, মতলববাসীর এ সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। সেতুটি নির্মাণ হলে চাঁদপুর তথা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
অ্যাডঃ নূরুল আমিন রুহুল এমপি বলেন, ৫০ বছর ধরে মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি ছিলো এলাকাবাসীর। এ সেতুটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ উন্নয়নের এক মাইলফলক উন্মোচিত হবে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, মতলব-গজারিয়া সেতু বাংলাদেশের বহুমাত্রিক ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে। সেতুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে শিল্পবিপ্লব হবে। চাঁদপুরের এ পাড়ে নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। মতলব উত্তর-গজারিয়া সেতু দেশের এ অঞ্চলের মানুষের জন্যে অর্থনৈতিক লাইফলাইন রূপে কাজ করবে। বাণিজ্য, আঞ্চলিক বাণিজ্য, শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠা, কৃষি সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে এ সেতু।