প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৫০
কুমিল্লায় পুলিশ কনস্টেবল হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী আটক

কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার মনপাল গ্রামে পুলিশ কনস্টেবল হত্যা চেষ্টার আলোচিত মামলার অন্যতম আসামী মো. ইকবাল হোসেন উজ্জ্বল (৩৩)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা। গত ১০ এপ্রিল (২০২৫) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১ গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ হতে অদ্যাবধি দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন অভিযানে চাঞ্চল্যকর অপরাধী ৫৭জন গ্রেফতার, আরসা সদস্য-১৫ জন গ্রেফতার, হত্যা মামলায় ৭৯জন গ্রেফতার, ধর্ষণ মামলায় ৪১জন গ্রেফতার, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় ৮জন গ্রেফতারসহ ৮০টি অস্ত্র, ১২৭৩ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার এবং ২৩৩জনের অধিক মাদক কারবারি গ্রেফতারসহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করে । পাশাপাশি ৩৯জন অপহরণকারী গ্রেফতারসহ ২৮জন ভিকটিম উদ্ধার এবং ছিনতাইকারী ও ডাকাত ৫০জন, জেল পলাতক ৩৩জনসহ অন্যান্য অপরাধী প্রায় ২৪৮জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব-১১ জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানাধীন মনপাল গ্রামে পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১০ এপ্রিল (২০২৫) রাতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানাধীন নোয়াখালী রোড দক্ষিণ বাইপাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানাধীন মনপাল গ্রামে পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেনকে হত্যা চেষ্টার আলোচিত মামলার অন্যতম আসামি মোঃ ইকবাল হোসেন উজ্জ্বলকে (৩৩) গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এমরান হোসেন বেশ কিছুদিন পূর্বে মনপাল গ্রামের বেলাল মেম্বারের বাড়ির পাশে একটি ব্যানার টানায়। তার কয়েকদিন পরে শিশুদের খেলার সময় ব্যানারটি ছিঁড়ে যায় এবং ওইদিন সন্ধ্যায় এমরান হোসেন ব্যানার ছেঁড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে গালমন্দ করে। পরবর্তীতে গত ৩ এপ্রিল রাতে এমরান হোসেনসহ ২০/২৫ জন ভিকটিম সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির সামনে হৈচৈ করতে থাকে এবং একই সময় ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসা ভিকটিম সাদ্দাম হোসেন মোবাইলের ফ্লাশ লাইটের আলো জ্বালিয়ে ঘরে ফিরছিলেন। বাড়ির সামনে হৈচৈ দেখে সাদ্দাম সেখানে উপস্থিত লোকজনকে সোরগোলের কারণ জিজ্ঞাসা করলে এমরান উত্তেজিত হয়ে ভিকটিম সাদ্দাম হোসেনকে মোবাইলের ফ্লাশ লাইটের আলো বন্ধ করতে বলে এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। পরবর্তীতে ভিকটিম তাদেরকে হৈচৈ করতে নিষেধ করে ঘরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা এমরান দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ ভিকটিম সাদ্দামের বাড়িতে হামলা চালায় এবং সাদ্দামসহ তার পরিবারের লোকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। আহত অবস্থায় সাদ্দামকে উদ্ধার করে প্রথমে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরবর্তীতে অবস্থা আংশকাজনক হওয়ায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার ১০জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ জনের বিরুদ্ধে লাকসাম থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত অন্যতম আসামী মোঃ ইকবাল হোসেন উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লাকসাম থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।