শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

বিতর্কিত সম্মেলনের কারণে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও হয়নি
গোলাম মোস্তফা ॥

চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও জেলা বিএনপি নেতা কাজী গোলাম মোস্তফা বলেছেন, একটি বিতর্কিত সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হওয়ায় জেলা বিএনপির এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। অতএব বিএনপির গ্রুপিং আছে না কি নেই এ বিষয়ে আমি কিছু বলবো না। শুধু এটুকু বলবো, কিছু স্ত্রী স্বামীর নাম জানে কিন্তু মুখে নেয় না। মোদ্দা কথা হচ্ছে, কারো পা থেকে মাথা পর্যন্ত ব্যথা থাকলে মলম লাগাবে কোথায়? এই অবস্থায় বাকিটুকু বোঝার বিষয় পাঠকের।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। তার পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার নি¤েœ তুলে ধরা হলো-

চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছে কবে?

কাজী গোলাম মোস্তফা : চলতি বছরের ২রা এপ্রিল। তবে জেলা বিএনপির সম্মেলনের স্থানটি ছিলো একটি বিতর্কিত স্থান- চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নানুপুর উচ বালিকা বিদ্যালয় মাঠ।

চাঁদপুর কণ্ঠ : এ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে কবে নাগাদ?

কাজী গোলাম মোস্তফা : এ সম্মেলনের বিষয়ে নিশ্চয়ই আপনারা অবগত আছেন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়। এখানে বলা বাহুল্য যে, মূলত এক ব্যক্তির একক ও স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের কারণে জেলা বিএনপি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে জেলা বিএনপির অধীনস্থ ১৫টি ইউনিটের মধ্যে ৭টি ইউনিটের আয়োজনে চাঁদপুর সদর উপজেলার নানুপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি সম্মেলন করা হয়। আর বাকি ৮টি ইউনিটের নেতৃবৃন্দসহ সকল ভোটার ভয়-ভীতির কারণে উক্ত জেলা বিএনপির সম্মেলনের আয়োজন করে জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায়। হাজীগঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে ইঞ্জিঃ মমিনুল হক সভাপতি ও মোস্তফা খান সফরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আর চাঁদপুর সদর উপজেলার নানুপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কাউন্সিলরদের ভোট শেষে ফরিদ আহমেদ মানিক সভাপতি ও অ্যাডঃ সলিম উল্যাহ সেলিম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কিন্তু তাদের এই কাউন্সিল নিয়ে নানা বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড় উঠে। অথচ হাজীগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির সম্মেলনে ইউনিটের সংখ্যা ছিলো বেশি এবং কাউন্সিলরদের বা ভোটারদের সংখ্যা ছিলো বেশি। ভোট পড়েছে হাজীগঞ্জে বেশি। পরদিন স্থানীয় মিডিয়াগুলোতে ভোটের ফলাফলসহ সংবাদ প্রকাশিত হয়। মূলত এই বিতর্কিত অবস্থা বা সমস্যার কারণে সম্মিলিতভাবে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।

উল্লেখিত দুটি স্থানে সম্মেলন করার কারণ হচ্ছে, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের একক পছন্দের বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন গঠন করা। উক্ত সম্মেলনে গঠিত নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন করার বিষয়ে সকলের সাথে সমন্বয়হীনতা এবং যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দূরদর্শিতা ও দক্ষতার ব্যাপক অভাব দেখিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি এককভাবে জেলা আহ্বায়কের মনোবাসনা পূর্ণ করার স্বার্থে কাজ করায় এই সমস্যায় পতিত হওয়ায় মূলত কমিটি গঠন বিলম্ব হচ্ছে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : বিএনপির কোনো শাখার সম্মেলন সম্পন্ন হবার কতোদিন পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে হয়? আর প্রেরিত কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদন দিতে হয় কতোদিনে? এ বিষয়ে বিএনপির গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে কি?

কাজী গোলাম মোস্তফা : শুধু বিএনপি নয়, দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠন চলে না। তবে আমাদের দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর সংগঠনের সম্মেলন হওয়ার পর পরই খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে কমিটি করে অনুমোদন নিতে হয়। এর জন্যে গঠনতন্ত্রে কোনো নির্দিষ্ট সময় সীমা দেয়া নেই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনারা নানা ইস্যুতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন না ঘোষণা দিয়ে কার্যত সরকার পতনের আন্দোলনই করছেন। আন্দোলনের সাফল্যের ব্যাপারে কতোটুকু আশাবাদী?

কাজী গোলাম মোস্তফা : স্বাধীনতার ৫০ বছরের ইতিহাসে যত সরকার বিরোধী আন্দোলন হয়েছে, সকল আন্দোলন সফল হয়েছে। অতএব আমাদের আন্দোলনে অবশ্যই বিজয় আসবে এবং আমরা সফল হবো।

আমাদের আন্দোলনে সফলতা আসবে ইতিমধ্যে এর প্রমাণ আপনারা দেখছেন যে, আমাদের বিভাগীয় সমাবেশগুলো সরকারের শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। অততব আমাদের আন্দোলন সফল হবে এবং বিজয়ী হবো। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এদেশে আবারো বিএনপি সরকার গঠন করবে ইনশাআল্লাহ।

চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির মধ্যে কোনো গ্রুপিং আছে বলে মনে করেন? উপজেলা পর্যায়ের কী অবস্থা? সারাদেশের সর্বত্র গ্রুপিং না মিটিয়ে আপনাদের আন্দোলনের সাফল্য কি পুরোপুরি আদায় করতে পারেন?

কাজী গোলাম মোস্তফা : ভিসা ছাড়া টিকেট ছাড়া বিমানে উঠা যায় না। তদ্রƒপ একটি বিতর্কিত সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হওয়ায় জেলা বিএনপির এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। অতএব বিএনপির গ্রুপিং আছে না কি নেই এ বিষয়ে আমি কিছু বলবো না। শুধু এটুকু বলবো, কিছু স্ত্রী স্বামীর নাম জানে কিন্তু মুখে নেয় না। মোদ্দা কথা হচ্ছে, কারো পা থেকে মাথা পর্যন্ত ব্যথা থাকলে মলম লাগাবে কোথায়? এই অবস্থায় বাকিটুকু বোঝার বিষয় পাঠকের।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করুন।

কাজী গোলাম মোস্তফা : সর্বশেষ বক্তব্য হচ্ছে, ছেলে জেঠার সাথে এক সাথে বিড়ি খায়; ছেলে বাবাকে দেখে বলে, জেঠা! বাবা আসছে বিড়িটা রাখেন। আমরা এ অবস্থায় আছি। সবশেষে সরকারের পতন আন্দোলনে সকলকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, কাজী গোলাম মোস্তফা ১৯৭৫ সালে চাঁদপুর শহরের ডিএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে জাসদ ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে লালন করে ছাত্রদলের রাজনীতিতে যোগদান করেন। তিনি চাঁদপুর জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা ১০ জনের ১ জন। তিনি ১৯৮০-৮১ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে প্রথম ভিপি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮২-৮৩ সালে জেলা ছাত্রদলের নির্বাচিত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত জেলা যুবদলের নেতা ছিলেন। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক, সহ-সভাপতি এবং পরবর্তীতে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়