শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০

ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজনে বাধা নেই, তবে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে
গোলাম মোস্তফা ॥

ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দু’বারের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু সাহেদ সরকার বলেছেন, আমাদের উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার জন্য কোনো বাধা বা সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। চাঁদপুর-৪ আসনের মাননীয় সাংসদ বা আমাদের এমপি মহোদয় ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কারণে এমপি নির্বাচিত হন। অথচ তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগকে চিনেন না। তাঁকে দাওয়াত দিলে তিনি দাওয়াত গ্রহণ করেন না। আবার দিতে গেলে নানাভাবে নাজেহাল করেন। ওনি উপজেলা আওয়ামী লীগকে স্বীকার করেন না।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। তার পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার নি¤েœ তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি আওয়ামী লীগের যে ইউনিটের সাথে সংশ্লিষ্ট, সে ইউনিটের সর্বশেষ সম্মেলন কবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

মোঃ আবু সাহেদ সরকার : ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে আমি দ্বিতীয়বারের মতো ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কতো বছর পর পর একটি শাখা/ ইউনিটের সম্মেলন করতে হয়?

মোঃ আবু সাহেদ সরকার : দলের গঠনতন্ত্রে অনেক নিয়মের কথা থাকলেও সকল সময়ে সেই নিয়ম মোতাবেক সবকিছু করা সম্ভব হয়। কারণ নানা প্রতিকূলতা পার করতে হয়।

আমাদের দলের গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্ট রয়েছে, প্রতিটি ইউনিটের সম্মেলন প্রতি ৩ বছর পর পর করতে হবে।

এই নিয়ম সংগঠনের সকল ইউনিটের জন্য প্রযোজ্য।

সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন, কোভিড মহামারী, বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা বেশ ক’বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এমনকি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি পালন করি। পরবর্তীতে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের কারণে সে সময় সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া গত পৌর নির্বাচনও অন্যতম কারণ। অপরদিকে সকল কিছু শেষ করে যখন আবারো প্রস্তুতি নেই, তখন থেকেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারীর অসুস্থতার কারণে আর সম্মেলন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেও সেটি করতে পারছি না।

কিন্তু বর্তমানে এমন অবস্থা যে, সম্মেলন করাও সম্ভব নয়। কারণ আমাদের অধীনস্থ অধিকাংশ ইউনিটের শীর্ষ পদগুলো শূন্য। অধিকাংশ ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুবরণ করেছেন। শুধু তাই নয়, উপজেলা কমিটির ১৯টি পদ শূন্য রয়েছে। এ সকল শূন্য পদ পূরণ করার চেষ্টা করেও আমরা সফল হতে পারিনি। তবে বড় কথা হচ্ছে বা মূল কথা হচ্ছে, সকল ক্ষেত্রে তদারকির অভাবে সংগঠন অনেক সময় ঝিমিয়ে পড়ে। সর্বোপরি কথা হচ্ছে আমরা চেষ্টা করছি শীঘ্রই সম্মেলন করার।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার ইউনিটের সম্মেলন আয়োজনে কী কী বাধা আছে বলে মনে করেন?

মোঃ আবু সাহেদ সরকার : আমাদের উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার জন্য কোনো বাধা বা সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। চাঁদপুর-৪ আসনের মাননীয় সাংসদ বা আমাদের এমপি মহোদয় ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কারণে এমপি নির্বাচিত হন। অথচ তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগকে চিনেন না। তাঁকে দাওয়াত দিলে তিনি দাওয়াত গ্রহণ করেন না। আবার দিতে গেলে নানাভাবে নাজেহাল করেন। ওনি উপজেলা আওয়ামী লীগকে স্বীকার করেন না।

সবচেয়ে আশ্চর্যজনক হলেও সত্য কথা হলো, আমাদের দল ক্ষমতায়, আমাদের এমপি অথচ সরকারের উন্নয়ন কাজ উপজেলা আওয়ামী লীগ জানে না এবং তিনি নিজেও সম্পৃক্ত করতে চান না। তিনি ফরিদগঞ্জে নিজস্ব বাহিনী করে কাজ করেন। বিভিন্ন ইউনিয়নে এমপি সংগঠন কে বাদ দিয়ে সকল কার্যক্রম করছেন। ইউনিয়নগুলোতে এমপি নিজে আলাদা বাহিনী করার কারণে ইউনিটগুলো গোছানো যাচ্ছে না। তবে জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা খুব শীঘ্রই সম্মেলন করার চেষ্টা করছি।

সর্বোপরি সকলের সমন্বয় হলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা সম্ভব। কিন্তু কোনো সমস্যা নাই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিসহ আরো কিছু কারণে বিএনপির যে ধারাবাহিক আন্দোলন, তাতে আপনারা কতোটুকু উদ্বিগ্ন?

মোঃ আবু সাহেদ সরকার : আসলে এদেশের জনগণ অনেক সচেতন। রাজনীতি হলো জনগণের জন্য। সে রাজনীতি যদি ধোঁকাবাজির রাজনীতি হয়, তাহলে সেই রাজনীতির সাথে দেশের জনগণ কখনোই সমর্থন করে না। তেমনি বিএনপির এই আন্দোলনের সাথে জনগণের অংশগ্রহণ নেই। রাজনীতির নামে উন্মুক্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড জনগণ সমর্থন করে না। তাই বিএনপির এই আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন কোনটাই না। এক কথায় মাথা ঘামানোর সময় নাই।

চাঁদপুর কণ্ঠ : এ আন্দোলন সাংগঠনিকভাবে কিংবা অন্য কী উপায়ে মোকাবেলা করা যায় বলে আপনি মনে করেন?

মোঃ আবু সাহেদ সরকার : অবশ্যই আমরা রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপির সকল আন্দোলন-সংগ্রাম প্রতিহত করবো। আর বিএনপির কাছে আহ্বান থাকবে, আন্দোলন করেন। কিন্তু অরাজকতা করার চেষ্টা করলে কড়া জবাব দেয়া হবে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি এমন মানসিক আস্থা পোষণ করেন যে, বিদ্যমান সমস্যা বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক সঙ্কট, সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দা তথা নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ স্বীয় জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে?

মোঃ আবু সাহেদ সরকার : এদেশের জনগণ এখন অনেক সচেতন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে দেশকে বিশ্বের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আজ মহাসঙ্কটে এবং দুভোর্গের মধ্য দিয়ে চলছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো চলছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলে আমরা অনেক ভালো আছি।

অতএব আমার দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থা, এদেশের জনগণ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে টানা চতুর্থ বার সরকার গঠনের জন্য রায় দিবেন এবং আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় সরকার গঠন করবে ইনশাআল্লাহ।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার অন্য কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করতে পারেন।

মোঃ আবু সাহেদ সরকার : আমি দলের সকল পর্যায়ের অর্থাৎ শীর্ষ থেকে জেলা, উপজেলা সকল ইউনিট নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলবো, আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করি, দলকে সুসংগঠিত করি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারো দলকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন করার জন্য কাজ করি।

উল্লেখ্য, আবু সাহেদ সরকার তাঁর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোজাফফর আহমেদ (বড় মিয়া)-এর পথ অনুসরণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন। রাজনীতির শুরুতে তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, এরপর ফরিদগঞ্জ উপজেলা আহ্বায়ক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৯নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পর পর দু’বার ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন এবং দু’বার জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়