বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৯

কোথায় গেল চাঁদপুরের সেই সাঁতারের ঐতিহ্য?

অনলাইন ডেস্ক
কোথায় গেল চাঁদপুরের সেই সাঁতারের ঐতিহ্য?

গতকাল ছিলো ঢাকা-চাঁদপুর দূরপাল্লার সাঁতারে চাঁদপুরের তিন সাঁতারুর সাফল্যের ২৫ বছরপূর্তি। এ বিষয়ে চাঁদপুর কণ্ঠে যে সংবাদ ছাপা হয়েছে, তার বিবরণ হচ্ছে : ১৯৯৯ সালের ১৯ নভেম্বর ঢাকার মেরী অ্যান্ডারসন থেকে দূরপাল্লার সাঁতারে অংশ নিয়ে অবিরাম সাঁতার কেটে চাঁদপুরে আসেন তিন কৃতী সাঁতারু । এঁরা হচ্ছেন : একেএম বাদশা মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা ছানাউল্লা খান ও রোকন ভূঁইয়া। তাঁরা ২৫ ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার নদীপথে সাঁতার কেটে চাঁদপুরে এসে পৌঁছেন। চাঁদপুরের সাঁতারকে বাঁচাতে ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে বার বার দূরপাল্লার সাঁতার ও অবিরাম সাঁতার আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে ক্রীড়াবোদ্ধা ও ক্রীড়ামোদীরা মনে করেন। সাঁতারু ছানাউল্লা খান বলেন, এখন দূরপাল্লার সাঁতার বন্ধ হয়ে গেছে। ১৯৯৯ সালের পর ঢাকা-চাঁদপুর দূরপাল্লার সাঁতার আর হয়নি। এ সাঁতারকে টিকিয়ে রাখতে প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সুশীল সমাজের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

বিস্ময়কর বিষয় ছিলো, ১৯৯৯ সালে আয়োজিত ঢাকা-চাঁদপুর দূরপাল্লার সাঁতারের উদ্যোক্তা কিন্তু চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা ছিলো না। চাঁদপুরের প্রথম দৈনিক হিসেবে চাঁদপুর কণ্ঠ মিডিয়া পার্টনার হয়ে এই সাঁতারকে প্রমোট করেছে সর্বাত্মকভাবে। একের পর এক অবিরাম সাঁতারের আয়োজন করে এই তিন সাঁতারুকে প্রস্তুত করা হয়েছে মাসের পর মাস ধরে। এ ক্ষেত্রে বড়ো দুটি রাজনৈতিক দলের ক্রীড়ামোদী নেতৃবৃন্দকে এক প্লাটফর্মে এনে ঢাকা-চাঁদপুর দূরপাল্লার সাঁতার বাস্তবায়ন পরিষদ সর্বস্তরের সুশীল সমাজকে কাজে লাগিয়ে যে তৎপরতা দেখিয়েছে তা ছিলো অবিস্মরণীয়। চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশার, লায়ন্স ক্লাব অব চাঁদপুর রূপালীর সাবেক সভাপতি মোস্তাক হায়দার চৌধুরী (বর্তমানে প্রয়াত) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংকার মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব দিয়ে এই সাঁতার বাস্তবায়ন পরিষদকে এতোটা শক্তিশালী করেছিলেন যে, ঢাকা-চাঁদপুর দূরপাল্লার সাঁতার আয়োজনে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রবল অনিচ্ছা ধোপে টিকেনি।

এটা বলা অতীব প্রয়োজন যে, চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার আওতাধীন দুটি স্থাপনা ‘মালেক ক্রীড়া ভবন’ ও ‘অরুন নন্দী সুইমিং পুল’ চাঁদপুরের দু কৃতী সন্তান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাঁতারু আব্দুল মালেক ও অরুণ নন্দীর নামে করা হয়েছে। দুজনেই এখন প্রয়াত। আঃ মালেক ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ী এবং অরুণ নন্দী অবিরাম সাঁতারে বিশ্ব রেকর্ডধারী ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত। অথচ চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা আঃ মালেক ও অরুণ নন্দীর সাঁতারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সর্বোচ্চ উদাসীন। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা না পেয়ে আঃ মালেক ও অরুণ নন্দীর উত্তরসূরি হিসেবে বাদশা, রোকন ও ছানাউল্লা কিংবা অন্য কেউ সাঁতারে বেশিদূর এগুতে পারেননি। সেজন্যে সাঁতারে চাঁদপুরের গৌরব হারিয়ে গেছে। একটি সুইমিং পুল থাকা সত্ত্বেও চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা সাঁতারের সেই হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে ন্যূনতম, ধারাবাহিক ও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তো দূরের কথা, জাতীয় পর্যায়ে চাঁদপুরের সাঁতারুদের সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোনো কৃতিত্ব নেই। এর একটাই কারণ, দুই কৃতী সাঁতারুর নামে দুটি স্থাপনাধারী চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাঁতারবিমুখ মানসিকতা। এই মানসিকতা কবে দূর হবে, কীভাবে দূর হবে এবং কে দূর করবে সেটা দেখার জন্যেই দুর্ভাগা চাঁদপুরবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে হয়তো অনেক অনেক দিন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়