রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২২, ০০:০০

এ কেমন নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্র?
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম ॥

চাঁদপুর জেলা শহরে ক্রিকেটার খুঁজতে কিংবা ভালো একটি ক্রিকেট দলের নাম উচ্চারণ করলে সহজেই নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের নাম চলে আসতো। আর সেই আগের নিতাইগঞ্জ আর বর্তমান সময়ের এ কেমন নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্র? এ প্রশ্ন সাবেক ক্রিকেটারসহ বতর্মান সময়ের ক্রিকেটার ও ক্রীড়ামোদী দর্শকদের। বতর্মানে এ ক্লাবটি যারাই পরিচালনা করছেন তাদের মধ্যে আন্তরিকতা ও খেলাধুলার আয়োজন এমনকি ক্রিকেটার তৈরি করতে তেমন আগ্রহ দেখা যায় না। চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে ক্রিকেটারদের জন্য জার্সি বানানোর নাম করে টাকা নিলেও সেই জার্সি দেখা যায়নি নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের পক্ষে হয়ে খেলতে নামা ক্রিকেটারদের গায়ে। অথচ নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের ২/১ জন সদস্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন। এমনকি নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের কোনো কোনো কর্মকর্তা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সকল সুযোগ-সুবিধা নিয়েও থাকেন। ক্লাবটি কি এতই দরিদ্র হয়ে গেছে নাকি ক্লাবের পদধারী কোনো কর্মকর্তার উদাসীনতার কারণে ক্লাবটির এ হালচাল চলছে-এ প্রশ্ন অনেকের

জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে ১৯৮৭ সালে যখন প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ চালু করা হয়েছিলো, তখন পুরাণবাজারের ব্যবসা-বাণিজ্যের রমরমা অবস্থা। আর সেই ব্যবসায়িক এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিলো নিতাইগঞ্জ এলাকা। সেই ক্লাবটি তখনকার সময় থেকে বেশ কিছু বছর ক্রিকেটে অপ্রতিরোধ্য হিসেবে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জন করে। এই ক্লাবটিতে একসময় দেখা গেছে স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। প্রতিবছরই ক্রিকেট খেলা চলাকালীন দেখা যেতো লাইনআপে বসে রয়েছেন অনেকজন ক্রিকেটার। আর এখন সেই নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্রের খেলা হলে স্থানীয় কিংবা এলাকার কোনো লোকাল ক্রিকেটারকে খেলতে দেখা যায় না। শুধুমাত্র জেলা ক্রীড়া সংস্থার পদটি দখল করে রাখার জন্যেই মনে হয় নামমাত্র এ ক্লাবটি খেলাগুলোতে অংশগ্রহণ করে থাকে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, এই ক্লাবের বড় বড় পদ পদবী দখল করেই বর্তমানে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী কমিটিতে রয়েছে এমন অনেকেই এই ক্লাবের নাম ব্যবহার করে পদ পেয়েছেন। বিশ^খ্যাত সাঁতারু মুক্তিযোদ্ধা অরুণ নন্দীর নামে গড়া সুইমিংপুলের সাবেক রাস্তাটি দখল করে যে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানেও তারা দোকানপাট পেয়েছেন ক্লাবের কর্তাব্যক্তি হওয়ায়। অথচ সেই ক্লাবটির আজ এই অবস্থা দেখে চাঁদপুর স্টেডিয়ামের বর্তমান প্রজন্মের খেলোয়াড়সহ ক্রীড়া সংগঠকরা ক্লাবটির নাম উচ্চারণ হতে গেলেই হাসি-ঠাট্টা করেন।

চাঁদপুর জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়িক এলাকার নিতাইগঞ্জেই এ ক্লাবটির অবস্থান। অনুপম নাট্যগোষ্ঠীর পাশে একটি রুম বানিয়ে তারা ক্লাবটি করেছে। যখন নিতাইগঞ্জে এ ক্লাবটি করা হয় তখন উদ্যোক্তারা বেশ ক’দিন ওই রুমটিতে ইনডোরের খেলার ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে ওই খেলায় তালিকাভুক্ত কোনো খেলোয়াড় না দেখা গেলেও বিভিন্ন পেশা-শ্রেণীর লোকদের আনাগোনা দেখা গেছে। এই ক্লাবটিকে ঠিকমতো জেলা ক্রীড়া সংস্থার বড় বড় কোনো খেলাতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় না।

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আলোচনা করতে শোনা গেছে যে, এই ক্লাবটির কয়েকজন কর্মকর্তা এখন ক্লাবের নাম করে ক্রিকেট খেলাগুলোতে অংশগ্রহণ করে। এমন ধরনের খেলাতে অংশগ্রহণ করে, যেই খেলাটি একবারের বেশি যেনো না খেলতে হয়। অর্থাৎ নক আউট পদ্ধতির খেলাগুলো খেলতে নিতাইগঞ্জ কেসি বেশি পছন্দ করে। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে যে, স্টেডিয়াম থেকে খেলা বাবদ যে টাকা পায় সেই টাকা দিয়েই তারা নামমাত্র একটি উপজেলার ক্রিকেট একাডেমিকে খেলাতে অংশ নেয়ায়। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত টি-২০ ক্রিকেটে তারা মাত্র ৫ হাজার টাকা মতলবের ক্রিকেট একাডেমির কর্মকতাদের হাতে দিয়ে একটি ম্যাচ খেলেন। এরপর ওই সময়ের যেই জার্সি দিয়ে তারা নকআউট পদ্ধতির টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিলো, সেই জার্সি প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের একটি ম্যাচে খেলোয়াড়দের গায়ে দেখা গেছে। আবার ম্যাচ প্রতি যে টাকা পাচ্ছে তার থেকে কিছুটা রেখে লীগের ম্যাচের খেলোয়াড়দেরকে নামমাত্র তুলে দিচ্ছে। অথচ জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে তাদের দলের খেলোয়াড়দের জন্য ক্রিকেটের জার্সিও তুলে দেয়া হয়েছিলো। জেলা শহরের ক্রীড়ামোদী দর্শকদের প্রশ্ন, এভাবে আর কতদিন ক্লাবটির কার্যক্রম চলবে। নামিদামি ক্লাবটির এই অবস্থা কেন? খেলা শেষ হতে না হতেই সাবেক ক্রিকেটার ও দর্শকদের সমলোচনা থেকে বাঁচার জন্য শনিবার দেখা গেছে কিছু কর্মকতা কাউকে না জানিয়ে মাঠ ছেড়ে চলে যান।

চলতি সপ্তাহের শনিবার চাঁদপুর স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগের ৪র্থ ম্যাচে অংশ নিয়েছিলো নিতাইগঞ্জ কেসি। এই ম্যাচে তাদের দলের খেলা দেখে অনেক সাবেক ক্রিকেটার ও খেলোয়াড়রাদের প্রশ্ন, আগের নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্র ও বতর্মানের নিতাইগঞ্জ ক্রীড়া চক্র কি একই? এটাই কি সেই পুরাতন ঐহিত্যবাহী ক্লাবটি?

এ বিষয়সহ ক্লাবের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ এবং জার্সি ও ক্রিকেটারদের বিষয়ে ক্লাবের সাবেক ক্রিকেটার ও বতর্মান কমিটির সভাপতি বোরহান খানের সাথে আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা স্টেডিয়াম থেকে আজ শনিবার জার্সির জন্য টাকা পেয়েছি। আর আমার পক্ষ থেকেও খেলার আগে জার্সি কেনার জন্য টাকা দিয়েছিলাম। আমরা যে একাডেমির ক্রিকেটারদের দিয়ে মাঠে খেলেছি, ওই একাডেমীর কর্মকর্তাদের অনুরোধেই তাদের খেলোয়াড়দের নিয়ে খেলতে নেমেছি। তারা খেলোয়াড়দের যে পারিশ্রমিক চেয়েছে আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে যা পাই তা-ই তাদেরকে দিয়ে দেই। এছাড়া খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক আলাদাভাবে দেয়ার চেষ্টা করেছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়