প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ০০:০০
হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে মেঘনার ভাঙ্গনে ছোট হয়ে আসছে উপজেলার মানচিত্র। নদীর তীরবর্তী এলাকা নীলকমল ও হাইমচর এবং গাজীপুর ইউনিয়নের ২৬ হাজার মানুষ নদী ভাঙ্গনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি বছর শত শত বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাঁধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে ভাঙ্গন কবলিত স্থানে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও কোনো কাজে আসছে না সেটি ভাঙ্গন প্রতিরোধে। ফলে দিন দিন ভাঙ্গনে ছোট হয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের ইউনিয়নগুলো।
চরাঞ্চলবাসী জানান, হাইমচরের মেঘনা নদীর পশ্চিমে নীলকমল ও হাইমচর এবং গাজীপুর ইউনিয়নে প্রতিবছর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কয়েক হাজার পরিবার। এখানে প্রায় ২৬ হাজার মানুষের বসবাস। একটি উচ্চ বিদ্যালয়, কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচটি মসজিদ, একটি বড় বাজার ও ছয়টি মৎস্য আড়ত রয়েছে এখানে। স্থায়ী বাঁধ না হলে যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এই এলাকা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৈকত ও রিফাত বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পাশেই নদী ভাঙ্গছে। দিন দিন চরের মাটি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালটি নদীতে চলে গেলে আমরা কীভাবে পড়ালেখা করবো। আমরা এখানে স্থায়ী বাঁধ চাই।
গাজীপুর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা মিজান সরদার বলেন, আগে ইউনিয়নটি আরো বড় ছিল। কিন্তু নদীভাঙ্গনে এখন ছোট হয়ে গেছে। নির্ঘুম রাত কাটে প্রতিনিয়ত। স্থায়ী বাঁধ হবে কিনা জানি না।
১নং গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ বলেন, আমাদের হাইমচরের মানচিত্র চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে নদী ভাঙ্গনের কারণে। বিশেষ করে আমার এই গাজীপুর ইউনিয়নটি বিশাল বড় একটি ইউনিয়ন ছিলো। কিন্তু বর্তমানে ইউনিয়নটিতে ২ থেকে ৩ টি গ্রাম রয়েছে, আর বাকি সব ক’টি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহোদয়ের কাছে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার জন্যে জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
৪নং নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সাঈদ আল নাসের বলেন, আমাদের ইউনিয়নে অনেক মানুষ ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। এখন আবার ভাঙ্গন হুমকিতে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়ের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি বসতভিটা ও স্কুল রক্ষায় জরুরি স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার জন্যে।
৫নং হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার আলি জুলহাস সরকার বলেন, ইউনিয়নটির চারপাশে নদী। এখানে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পাঁচবার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। এখন আবার ভাঙ্গনের হুমকিতে। বসতভিটা ও স্কুল রক্ষায় জরুরি স্থায়ী বাঁধ দরকার।