সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ০০:০০

এক নজরে হাইমচর উপজেলা
অনলাইন ডেস্ক

হাইমচর উপজেলা হচ্ছে মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে বিপন্ন চাঁদপুর জেলার সবচে’ কম জনসংখ্যার বহু চর সম্বলিত একটি জনপদ। আয়তন : ১৭৪.৪৯ বর্গ কি.মি.। সীমানা : উত্তরে চাঁদপুর সদর ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বরিশালের হিজলা উপজেলা, পূর্বে ফরিদগঞ্জ ও রায়পুর উপজেলা, পশ্চিমে গোসাইরহাট উপজেলা। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজার ৫৭৫ জন; পুরুষ ৫৩ হাজার ৬৫১ জন, মহিলা ৫৫ হাজার ৯২৪। এদের মধ্যে হিন্দু জনগোষ্ঠী প্রায় ৫ হাজার, বাকিরা মুসলমান।

ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে হাইমচর থানা গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে : ১নং গাজীপুর, ২নং আলগী দুর্গাপুর উত্তর, ৩নং আলগী দুর্গাপুর দক্ষিণ, ৪নং নীলকমল, ৫নং হাইমচর, ৬নং চরভৈরবী।

নামকরণের ইতিহাস : হাইমচর ইউনিয়নের সাথে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট এবং বরিশাল জেলার মুলাদী থানার সীমানা নির্ধারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় হেম বাবু নামে একজন দক্ষ কালেক্টরেট নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি দক্ষতার সাথে তিনটি জেলার সীমানা নির্ধারণে সক্ষম হন। যে কারণে তাঁর নামে হাইমচর নামকরণ হয়েছে। এই নামকরণ নিয়ে ভিন্ন মতও রয়েছে। সেটি হচ্ছে, বিক্রমপুরের হেম বাবু নামে এক জমিদারের অত্র এলাকায় ছোট একটি জমিদারি এস্টেট ছিলো। তাঁর নামানুসারে হেম বাবুর চর থেকে মেঘনা বিধৌত এলাকাটির নাম হয়েছে হাইমচর।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বলতে হাইমচরে রয়েছে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ ও প্রাচীন কবর (ভিঙ্গুলিয়া)। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে : মসজিদ ১৫৫, মন্দির ১৮, মাজার ৪ ও তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে : চরভৈরবী জামে মসজিদ, খোন্দকার বাড়ি মসজিদ, জগন্নাথ বাড়ি মন্দির (হাইমচর), শ্রী শ্রী হরি মন্দির (চরভৈরবী), শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দির।

হাইমচরের উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে : চরভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), বাজাপ্তী রমণী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), নীলকমল ওসমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), হাইমচর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাইমচর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, এম.জে.এস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কে.ভি.এন উচ্চ বিদ্যালয়, দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, চরভৈরবী উচ্চ বিদ্যালয়, চরশোলাদী কেবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৩৭)

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে : কৃষি ৬৪.৩৭%, অকৃষি শ্রমিক ৩.২২%, শিল্প ০.৬৩%, ব্যবসা ১৫.০১%, পরিবহন ও যোগাযোগ ১.৫২%, চাকরি ৬.৫৪%, নির্মাণ ০.৮৬%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১১% এবং অন্যান্য ৭.৪২%।

হাইমচরের প্রধান কৃষি ফসল হচ্ছে ধান, গম, পাট, পান, সুপারি, পিঁয়াজ, রসুন, সয়াবিন, আলু ও করলা। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি হচ্ছে কাউন, তিল, তিসি, কালিজিরা, তামাক, সরিষা, অড়হর, খেসারি, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি হচ্ছে : আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, তাল, বেল, পেঁপে, আমড়া, চালতা, কুল, বাতাবি লেবু, নারিকেল ও সুপারি। এ উপজেলায় মৎস্য খামার ১২৭, কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র ১, হাঁস-মুরগির খামার ১০ ও নার্সারি ১৪।

যোগাযোগের ক্ষেত্রে রয়েছে : পাকারাস্তা ১৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৯৫ কিমি; নৌপথ ১২ নটিক্যাল মাইল।

শিল্প ও কলকারখানা বলতে চালকল, করাতকল ও বরফকল রয়েছে।

কুটিরশিল্প হচ্ছে : স্বর্ণশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ ও কাঠের কাজ।

হাইমচরের উল্লেখযোগ্য বাজার হচ্ছে : চরভৈরবী বাজার, হাইমচর বাজার ও কাটাখালী বাজার।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট, পান, রসুন, পিঁয়াজ, নারিকেল, সুপারি, মাছ ও করলা। ঈশানবালার করলার রয়েছে অনেক খ্যাতি।

হাইমচরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বলতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ২ ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক ১। এছাড়া রয়েছে কিছু কমিউনিটি ক্লিনিক। তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া।

নদী-শাসন

হাইমচরের দুঃখ- মেঘনা। মেঘনার বিক্ষুব্ধ প্রবাহ, প্রবল স্রোত ও উত্তাল তরঙ্গের প্রবল গ্রাসে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে চাঁদপুর পুরাণবাজার ও হাইমচরের বিস্তীর্ণ জনপদ। নদীভাঙ্গন থেকে চাঁদপুর পুরাণবাজার ও হাইমচরকে রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সরকার নদী শাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। সেমতে সিমেন্টের পাকা বোল্ডার দিয়ে মেঘনার দক্ষিণ তীর অর্থাৎ হাইমচরের নদীতীর বেঁধে দেয়া হয়। এতে একদিকে যেমন নদী ভাঙ্গন রোধ করা গেছে, তেমনি নদীতীর বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে প্রকৃতিপ্রেমীদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে। সূত্র : ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর (জেলা ব্র্যান্ডিং বই)

সুপারি বাগান

রঙিন সুপারির রঙিন স্বপ্নে জীবিকা চলে হাইমচরের হাজারো পরিবারের। এ উপজেলার প্রায় ৩১০ হেক্টর জমিতে সুপারি বাগান রয়েছে। সব মিলিয়ে এখানে প্রায় ৫০ হাজার সুপারি গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ গড়ে ২০-২৫ বছর বাঁচে বলে সুপারি ব্যবসায় তেমন একটা লোকসানে পড়তে হয় না চাষিদের। প্রতি বর্ষার আগে ও পরে বছরে দু’বার পাকা সুপারি ফল সংগ্রহ করে চাষিরা। খুদে ব্যবসায়ীরা সবুজ-হলদে রঙের পাকা সুপারি বিক্রি করে সাবলীলভাবেই জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। বড় ব্যবসায়ীরা তা ক্রয় করে শুকিয়ে শুষ্ক মৌসুমে বিক্রি করে থাকে। প্রতি বছর এ অঞ্চলের সুপারি চাঁদপুরের চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও রপ্তানি হয়ে থাকে।

সূত্র : ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর (জেলা ব্র্যান্ডিং বই)

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়