বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে বিক্রি করা সম্পত্তি দখলে রাখতে টালবাহানা

শামীম হাসান ॥
ফরিদগঞ্জে বিক্রি করা সম্পত্তি দখলে রাখতে টালবাহানা

ফরিদগঞ্জের লড়াইরচর গ্রামে প্রতিপক্ষের ক্রয়কৃত সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একটি পরিবারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে থানায়, ইউনিয়ন পরিষদ, গ্রাম্য সালিস মিলিয়ে বেশ ক’টি বৈঠক হলেও সমাধান মানছে না পরধনলোভী পরিবারের সদস্যরা। এমন কথাই জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার, পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সালিসরা। ওই গ্রামের মিজানুর রহমান ও শাহাবুদ্দিন বেপারী গংয়ের মাঝে দীর্ঘদিন যাবত এমন বিরোধ চলে আসছে বলে জানা গেছে। সর্বশেষ থানায় একটি সমাঝোতার চেষ্টা চলমান থাকাবস্থায় সম্প্রতি ভুক্তভোগী মিজানুর রহমানকে হয়রানির উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে পরধন লোভী শাহাবুদ্দিন বেপারী গং।

সরেজমিনে জানা যায়, লড়াইরচর গ্রামের মৃত আনামিয়া বেপারীর ছেলে লেদু মিয়া বেপারী দীর্ঘদিন যাবৎ জীবিকার তাগিদে রংপুরে বসবাস করে আসছেন। নিজের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে সম্পত্তি বিক্রি করলেও গ্রামের বাড়িতে সর্বশেষ তার মালিকানাধীন একটি পরিত্যক্ত বসতঘর ও ৪৭ শতাংশ সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে। লেদু মিয়া বেপারী বাড়িতে না থাকার সুযোগে এ সম্পত্তি আনা মিয়ার আরেক ছেলে শাহাবুদ্দিন বেপারী দেখাশোনার স্বার্থে নানা সুবিধা গ্রহণ করে আসছে। প্রয়োজনের তাগিদে লেদু মিয়া নিজের মালিকানাধীন সম্পত্তি বিক্রি করতে আসলে তার ভাই শাহাবুদ্দিন বেপারীর পরিবারের সদস্যদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রতিবেশি মিজানুর রহমানের কাছে ৩০শতাংশ সম্পত্তি বিক্রয় করে তফসিল অনুযায়ী বুঝিয়ে দেন লেদু মিয়া বেপারী।

মিজানুর রহমান লেদু মিয়া বেপারীর সম্পত্তি ক্রয় করার পর থেকেই বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে শাহাবুদ্দিন বেপারী গং।

স্থানীয় সালিস মুরাদ পাটওয়ারী, শাহ আলম, সুমন পাটওয়ারী, নাছির শেখসহ স্থানীয়রা জানান, লেদু মিয়া বেপারীর সম্পূর্ণ বৈধ মালিকানাধীন ৪৭ শতাংশ সম্পত্তির মধ্যে ৩০শতাংশ মিজানুর রহমান ক্রয় করেছেন। বাকি রয়েছে ১৭ শতাংশ। কিন্তু শাহাবুদ্দিন বেপারী গং চেষ্টা করছে লেদু মিয়া বেপারীর পুরো সম্পত্তি আত্মসাৎ করার। তাই জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন ও সালিসদেরও মানে না তারা।

এদিকে অভিযুক্ত শাহাবুদ্দিন বেপারী বলেন, আমার ভাইয়ের থেকে মিজানুর রহমান যে সম্পত্তি ক্রয় করেছে তার থেকে বুঝে নিক। আমরা সম্পত্তি ছাড়বো না।

এদিকে সম্পত্তি বিক্রয়কারী লেদু মিয়া বেপারী বলেন, আমি বর্তমানে রংপুরের গাইবান্ধা জেলাতে বসবাস করে আসছি। আমার পৈত্রিক বাড়িতে পৈত্রিক সম্পত্তি ও আমার নিজ নামীয় দলিল মূলে সর্বশেষ ৪৭ শতাংশ সম্পত্তি অবশিষ্ট রয়েছে। টাকার প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়ে সম্পত্তি বিক্রি করতে চাইলে আমার ছোট ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা সম্পত্তি আত্মসাৎ করার পরিকল্পনাস্বরূপ আমাকে খুন করার পরিকল্পনা করে। আমি প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মিজানুর রহমানের কাছে সম্পত্তি বিক্রি করেছি। আমার ছোট ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা বেআইনীভাবে মিজানুর রহমানের সাথে ঝামেলা করে আসছে। ছোট ভাইয়ের পরিবারের সদস্যদের ভয়ে আমি বৃদ্ধ বয়সে গ্রামেও আসতে পারি না।

ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান বলেন, আমি বৈধ কাগজপত্র মূলে ৩০ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করার পর লেদু মিয়া বেপারী আমাকে দখল বুঝিয়ে দিয়েছে। কিন্তু লেদু মিয়া বেপারীর ভাই শাহাবুদ্দিন বেপারীরা আমাকে হয়রানি করে আসছে। থানাতে সর্বশেষ একটি বৈঠক চলমানবস্থায়ও তারা আদালতে আরেকটি মামলা করেছে। আদালত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যে রায় দিবে তা আমি শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করবো।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত প্রদীপ মণ্ডল বলেন, তাদের সমস্যা দীর্ঘদিন যাবৎ চলমান। আমরা চেয়েছি আইনানুযায়ী উভয়পক্ষের শান্তির জন্যে একটি সুন্দর সমাধান করে দেয়ার। কিন্তু একটি পক্ষ আদালতে মামলা করেছে। যেহেতু বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান, তাই আদালত বিষয়টি দেখবে। এদিকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সার্ভেয়ার আবু বকর সিদ্দিক সরেজমিনে মামলার বিষয়টি তদন্ত করে উভয়পক্ষকে আদালতের নির্দেশ মানার জন্যে অনুরোধ জানিয়ে আসছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়