প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২২, ০০:০০
অনেকের মতো মালেকও জানতো না
সতের মার্চের জন্মকান্নাই শোষিতের মুক্তিবাণী
জানতো না দখিনের দরিদ্র 'দাওয়ালেরা'
যারা ধান কাটার ঘ্রাণে পেতো অন্নের সুবাস।
অনেকের মতো হামিদ স্যারও বোঝেননি
মুষ্টিভিক্ষা তুলতে পাঠানো তাঁর লিকলিকে ছাত্রটি
একদিন নিজের প্রাণটাই ভিক্ষা দিবে অকাতরে
শ্রাবণ-রাতের আঁধারে নগরে নামা আততায়ীকে।
বোঝেনি সেদিন খোপের মুখে রোদের চুমু পাওয়া
পায়রারা যারা বাকুম বাকুম করতে করতে
দানা খেতো খোকার হাতে কিংবা মলিন বস্ত্রধারী
সেই আর্ত যে পেয়েছিল সায়েরার পুণ্য পরিধেয়।
বোঝেনি কারার আঁধার তার বুক আলোর বানে
ভেসে যাবে হাজার তারার ঝাড়বাতির আলোয় যেদিন রাজপথের ধুলো নিয়ে ঢুকবে এক মানচিত্র
বোঝেনি চার হাজার ছ’শ’ বিরাশি হবে বিশ্বনন্দিত।
সতের মার্চের ভোর ফুটেছিল বলেই একজন
ডাক্তার শিবপদ ভট্টাচার্য কিংবা এ কে রায়
আজও হারায়নি কালের গর্ভে আর হারায়নি সোহরাওয়ার্দী তার শিষ্যের পাদপ্রদীপের আলোয়।
যে ছেলেটি পেটের পীড়া নিয়ে আটকে ছিল জেলে
অজানা-অচেনা সে-ও আজ হয়ে ওঠে নিকটজন যেমন আত্মীয়া হয়ে ওঠে একগ্রাস শুভ্রস্নেহ আর
মুঠোভরা চার আনা আশীর্বাদের মায়াবতী বুড়িমা।
বরিশালের সেই মহিউদ্দিন কি বিস্মৃত হতো না যদি সতেরো মার্চে খোকা সেদিন না উঠতো কেঁদে
কিংবা মোঃ হোসেন গাঙ্গুলিকেই কে মনে রাখতো
অনশনকারী লিকলিকে তরুণটি হারালে নিঃশ্বাস?
সতের মার্চের সাথে জড়িয়ে আছে অনেকের নাম
যেমন জড়িয়ে আছে খুলনার পিঠেওয়ালী মা
কুমড়োর ডগায় কুড়ি টাকা-ভরা কৃষকের মুখ
তেমনি জড়িয়ে আছে মহাকাব্যের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস।