শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২২, ০০:০০

বহু বিবাহে আসক্ত শিক্ষক শহিদুল ইসলামের নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে চায় রেহানা ইয়াসমিন
স্টাফ রিপোর্টার ॥

সুখে থাকা হলো না স্বেচ্ছায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা আসহায় রেহানা ইয়াসমিনের। ঘর করা হলো না পারিবারিক পছন্দে বিবাহ করা স্বামী শহিদুল ইসলামের সাথে। দীর্ঘ ২০ বছরের সংসার জীবনে নেমে আসে স্বামীর নির্যাতন, নিপীড়নসহ নানা মামলা মোকদ্দমা। মামলা, মোকদ্দমা আর মানসিক, শারীরিক নির্যাতনে নিষ্পেষিত রেহানা ইয়াসমিন ন্যায় বিচারের আশায় শরণাপন্ন হয়েছে মহামান্য আদালতের দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু দাপুটে স্বামী শহিদুলের লম্বা হাত সংকুচিত করে ন্যায়বিচার পাবে কি অসহায় নারী রেহানা ইয়াসমিন? এমন প্রশ্নই বার বার ঘুরে ফিরে হতাশ করে তুলছে রেহানা ইয়াসমিনকে।

জানা যায়, গত ৮/১০/২০০২ খ্রিঃ ফরিদগঞ্জ উপজেলার কাঁশারা গ্রামের তফাদার বাড়ির মৃত ডাক্তার সাত্তারের মেয়ে রেহানা ইয়াসমিন শাহিনার সাথে ২৩নং পাইকাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলামের সাথে পারিবারিক দেখাশোনার মাধ্যমে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। সুখেই চলছিল তাদের সাংসারিক জীবন। কিন্তু সে সুখ আর বেশিদিন টিকেনি রেহানা ইয়াসমিনের। সেই সুখে বাধা হয়ে দাঁড়ায় স্বামীর পরকীয়া প্রেম আর নির্যাতন নিপীড়ন। ভাঙ্গন ধরে সংসারে। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত তার অজান্তেই গত ১৫/১০/ ২০২১ খ্রিঃ বিয়ে করেন শিক্ষক নামে বহু বিবাহে আসক্ত শহিদুল ইসলাম। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অসহায় প্রথম স্ত্রী রেহানা ইয়াসমিন। তিনি জানান, আমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলাম কিন্তু স্বামীর কথায় আশ্বস্ত হয়ে স্বেচ্ছায় সেই চাকুরি ছেড়ে দেই। স্বামীকে বিশ্বাস করে তার কথা অনুযায়ী স্কুল থেকে প্রাপ্য সকল অর্থ স্বামীর হাতে তুলে দেই। আমার বিশ্বাস ছিল, স্বামী ও আমার দুই সন্তানকে নিয়ে সুখেই কেটে যাবে আমাদের সংসার। কিন্তু আমার আর সে সুখ কপালে সইলো না। আমি স্বামীর কথায় স্বেচ্ছায় চাকুরি ছেড়ে দিয়ে, আমার প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ তাকে দেয়ার পর থেকেই বেরিয়ে আসে স্বামীর আসল রূপ। সে সময়-অসময় বিভিন্ন অজুহাতে আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন নিপীড়ন করতো, দোষ খুঁজতো বিভিন্ন কারণে অকারণে। মান সম্মান আর ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সকল নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য করেছি মুখ বুঁজে। আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সে পুনরায় বিবাহ করে। বহু চেষ্টা করেও তার কোনো সুরাহা করতে না পেরে অবশেষে দ্বারস্থ হই থানা পুলিশের। সে ভিত্তিতে সে আটক হয়। ৩ দিন জেল খেটে সে জামিনে বের হয়ে আসে। এসেই আমার উপর পুনরায় অকথ্য নির্যাতন চালায় এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি পুনরায় ন্যায় বিচারের আশায় চাঁদপুর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনালে ২৩/১১/২০২১ খ্রিঃ মামলা দায়ের করি। মামলা নং ৪১৮/২০২১ খ্রিঃ। মামলা চলাকালীন সে আমার প্রতি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। আমাকে পুনরায় নির্যাতনসহ প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি অসহায় হয়ে বিচারের আশায় তার সকল নির্যাতনে মুখ বুঁজে রয়েছি। এরই মধ্যে গত ১২/১২/২০২১ খ্রিঃ মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনকে সাক্ষী বানিয়ে শহিদুল ইসলাম আমার বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দাযের করেন। অথচ যেদিন মামলা করা হয়, সেদিন আমি ছিলাম সম্পূর্ণ অসুস্থ। আমি সেদিন সুচিকিৎসার জন্যে ডাক্তারের কাছে যাই এবং সুচিকিৎসার প্রয়োজনে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি।

কান্না জড়িত কণ্ঠে রেহানা ইয়াছমিন জানান, সে আমাকে ছাড়াও আরো ২টি বিবাহ করেছেন। একজন শিক্ষক হয়ে কীভাবে সে এমন অনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে! শিক্ষক হলো জাতির বিবেক, মানুষ গড়ার কারিগর। সে কারিগর যদি নিজেই অমানবিক কাজের সাথে জড়িত থাকে, নিয়ম বহির্ভূত কাজ করে, তাহলে তার কাছে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে? সরকারি রুল অনুযায়ী কেউ যদি পুলিশ কর্তৃক ধৃত হন বা ফৌজদারি মামলার আসামী হন, তাহলে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হবেন। অথচ শিক্ষক নামের এই পাষ- সদর্পে স্কুলে যাচ্ছে, ক্লাস করছে, তা কী করে সম্ভব তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। তার খুঁটির জোর কোথায় তা আমার জানা নেই। আমার শুধু বিচারক, প্রশাসন ও সমাজের প্রতি আকুল আবেদন, আমি স্বামীরূপী পাষ-ের হাত থেকে সন্তানদের নিয়ে বাঁচতে চাই। তিনি প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়