প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের কাণ্ড
আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুকুর ভরাট ॥ পরিবেশ বির্পযয়ের আশঙ্কা
চাঁদপুর সদর উপজেলার মহামায়া হানাফিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও মহামায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পূর্ব পাশের পুকুরটি ভরাট করছে একটি কুচক্রী মহল। অভিযোগ রয়েছে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে একতরফাভাবে পুকুরটি ভরাট কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
|আরো খবর
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মহামায়া সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের পাটোয়ারী বাড়ির সম্মুখে রয়েছে বিশাল একটি পুকুর, যা এলাকাবাসীসহ সকলের উপকারে আসছে। পুকুরটিতে উক্ত পাটোয়ারী বাড়ির বেশ ক’জনের অংশীদারিত্ব রয়েছে।
পাটোয়ারী বাড়ির মোঃ মাহাবুব আলম পাটোয়ারী কোনো অংশীদারের সাথে আলোচনা না করে পুরো পুকুরটি ভরাট কাজ করে যাচ্ছেন। পুকুরটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষা হওয়ায় বিদ্যালয়ের কিছু অংশ উক্ত পুকুরে রয়েছে। তিনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও এই পুকুর ভরাট বিষয়ে অবগত না করে জোরপূর্বক পুরো পুকুরটি ভরাট করে চলেছেন। অথচ পুকুর বা জলাশয় ভরাট করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পরিবেশ আইনকে তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের মতো করে ভরাট চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তিনি এক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধি ও সরকার দলীয় ক’জন প্রভাবশালীকে এ কাজে ব্যবহার করছেন। প্রভাবশালীদের হুমকি-ধমকিতে বাড়ির অংশীদাররা পর্যন্ত নীরব রয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অংশীদারগণ বলেন, ভাই এখন প্রতিবাদ করবো, কিন্তু রাতের অন্ধকারে মেরে লাশটাতো পরিবারকে দিবে না।
তাছাড়া এ বিষয়ে কথা না বলার জন্য হুমকি-ধমকি প্রতিনিয়ত চলমান রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে এই পুকুরটিতে একসময় আমরা গোসল করতাম, সাঁতার কাটতাম। স্কুলের শিক্ষার্থীরা এ পানি ব্যবহার করতো। ভরাট হয়ে গেলে তা আর হয়ে উঠবে না।
পুকুর ভরাটের বিষয়ে ড্রেজারের মালিক আবু সাঈদ বলেন, আমরা এ পুকুরটি ভরাটের কাজ নিয়েছি মাহবুব আলম পাটোয়ারীর কাছ থেকে। তার পুকুর ভরাটে তো কারো কোনো আপত্তি দেখছি না। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন পাটওয়ারী আমার একজন পার্টনার। বিভিন্ন জায়গায় আমরা একসাথেই জমি ভরাট করে আসছি। শীপ থেকে বালু ক্রয় করে মানুষের জমিতে ভরাট করি।
অথচ যিনি ব্যবসায়ী অংশীদার, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, আমরা ড্রেজার ব্যবসা করি। আমাদেরকে জড়ানো ঠিক নয়।
জানা যায়, পুকুর ভরাট নিয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভরাট কাজ চলছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হলে অফিস জানায়, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। অফিস খুললে আমরা বিষয়টির খোঁজ-খবর নেবো।
এ বিষয়ে ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পরে কথা বলবো ভাই। আমি ঝামেলায় আছি। এরপর কয়েকবার তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেয়ার পরও তিনি আর ফোনটি রিসিভ করেননি।
স্থানীয় জনগণ, পরিবেশ বির্পযয়ের হাত থেকে রক্ষার্থে এবং জনস্বার্থে উক্ত পুকুর ভরাট বন্ধ করার জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।