প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪, ০০:০০
কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় কচুয়ার গৃহবধূর মৃত্যু
কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় কচুয়ার কুলসুমা আক্তার (৩৮) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। ৭ মে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউনিয়নের মাসনিগাছার গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী চার সন্তানের জননী কুলসুমা আক্তারের ২১ এপ্রিল প্রচণ্ড পেট ব্যথা শুরু হয়। কচুয়ার রহিমানগর বেসিক হসপিটালের চিকিৎসক গাজী মাহফুজার পরমার্শ মোতাবেক তিনি কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে জরায়ুর আলট্রাসনোগ্রাম টিভিএস (ফেলভিস) পরীক্ষা করান। পরীক্ষার রিপোর্টে কুলসুমা আক্তারের জরায়ুতে টিউমার সনাক্ত করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রিপোর্ট ও প্রচণ্ড পেট ব্যথার বিষয়ে কুলসুমা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিকে কর্মরত গাইনি বিশেষজ্ঞ সার্জন ফাহমিদা সুলতানা মিলির পরামর্শ ও চিকিৎসা নেন। ওইদিন রাতে কুলসুমা আক্তারের তীব্র পেট শুরু হলে ডাঃ মিলির কাছে চিকিৎসার জন্যে গেলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের পরামর্শ দেন। রাতে ডাঃ মিলি ইবনে সিনার পাশর্^বর্তী ইনসাফ মেডিকেলে তার অপারেশন করান। অপারেশন করতে গিয়ে কুলসুমার জরায়ুতে কোনো ধরনের টিউমার খুঁজে না পেয়ে চিকিৎসক অপারেশন সমাপ্ত করেন। অপারেশন করার ২ দিন পর কুলসুমার পূর্বের পেট ব্যথা ও অপারেশনের ব্যথা আরো তীব্র হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ঢাকা মেডিকেলে কুলসুমা আক্তারকে পুনরায় আলট্রাসনোগ্রাম টিভিএস পরীক্ষা করালে জরায়ুতে কোনো ধরনের টিউমার নেই বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন। তারা কুলসুমার বুকের নিচের টিউমার আছে বলে শনাক্ত করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ দিন চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি দেখে প্রথম গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ৩ দিন কুলসুমাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এ অবস্থায় ৭ মে ভোররাতে কুলসুমা মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
কুলসুমার ভাই শাহজাহান ইসলাম খোকন জানান, কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ভুল রিপোর্ট ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে কুলসুমা মারা যায়। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।
কুলসুমার দেবর একরামুল হক জানান, কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে কুলসুমার ভুল চিকিৎসা হওয়ায় তারা আমাদের নিকট কোনো অপারেশনের বিল নেয়নি। ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক প্রশাসন গোলাম মর্তুজা আমাদেরকে ঢাকায় প্রেরণ করেন। তারা চিকিৎসার সকল ব্যয় বহন করার আশ্বাস প্রদান করেও পরে ইবনে সিনা কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে আরো কোনো যোগাযোগ রাখেননি। আমরা তাদের শাস্তি দাবি করছি।
কুলসুমার চিকিৎসক ফাহমিদা সুলতানা মিলি জানান, রোগীর দুটি আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ও শারীরিক অবস্থা দেখে অপারেশনের সিদ্বান্ত নিই। আমিসহ সার্জন রনি অপারেশন করতে গিয়ে দেখি রোগীর জরায়ুতে টিউমার নেই। তাৎক্ষণিক ওই অবস্থায় ঘটনা সম্পর্কে রোগীর গার্ডিয়ানকে অবহিত করে অপারেশন ক্লোজ করে দিই।
এদিকে কুমিল্লা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে ব্যবস্থাপক প্রশাসন গোলাম মোর্তজা জানান, আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টিভিএস পরীক্ষা করেছি।