প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
কার দাবি সঠিক?
বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের জন্যে তথা সংসারের সচ্ছলতার জন্যে প্রবাসে পাড়ি জমায়। প্রবাসে গিয়ে নানা বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়। এ রকম একটি ঘটনা ফরিদগঞ্জে ঘটেছে। মাত্র ৬ মাস সৌদি আরবে অবস্থান করার পর দেশে ফেরা সাইদুল আমিন নামে এক যুবকের প্রবাসে যাওয়া ও সেখানে অবস্থান নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যকার কথিত ঘটনা নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। সৌদি আরবে ব্যবসায় জড়িত সবুজ হোসেনের দাবি, সাইদুল আমিন সৌদি আরবে আসার পর কোম্পানির দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ ও অর্থ আত্মসাৎ করায় তাকে কোম্পানি দেশে ফেরত পাঠায়। অপরদিকে সাইদুল আমিনের দাবি, তার সাথে প্রতারণা করেছে সবুজ হোসেন ও তার ভাগিনা এমরান হোসেন। এ ব্যাপারে সবুজ হোসেনের পিতা আদালতে সাইদুল আমিনের বিরুদ্ধে মামলা এবং সাইদুল আমিন সবুজ হোসেন ও এমরান হোসেনের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
|আরো খবর
রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের রৌশন আলী জানান, তার ছেলে সবুজ হোসেন দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরবে ব্যবসা করছে। নিজ ইউনিয়ন ছাড়াও আশেপাশের ইউনিয়নের বহু লোকজনকে সৌদি আরবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সেই রেশ ধরে উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের হর্ণি দুর্গাপুর গ্রামের সফিকুর রহমান পাটওয়ারীর ছেলে সাইদুল আমিন সবুজ হোসেনের ভাগ্নে এমরান হোসেনের পরিচয় সূত্র ধরে সৌদি আরব যায়।
রৌশন আলী কর্তৃক আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্র জানা যান, সৌদি আরবে ব্যবসা করা সবুজ হোসেন সাইদুল আমিনকে চাকুরির জন্যে সৌদি আরবে নিয়ে যায়। সৌদি আরবে তার ছেলে সবুজ হোসেন সাইদুল আমিনকে আকামাসহ চাকুরির ব্যবস্থা করে দেন। তিনি ৬ মাস চাকুরি করলেও চাকুরির মালিক পক্ষকে মারধর করেন। ফলে তাকে কর্তৃপক্ষ সেখান থেকে দেশে ফেরত পাঠায়।
মুঠোফোনে প্রবাসী সবুজ হোসেন জানান, সাইদুল আমিন ম্যানেজার পদে নিয়োগ নিয়ে কাজ করলেও সে সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি। তাছাড়া অর্থাভাবে তাকে শুধু বিমান ভাড়া দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও সে বাকি টাকা পরিশোধ করেনি। উল্টো দেশে ফেরত এসে হুমকি-ধমকি এবং সর্বশেষ থানায় অভিযোগ করে হয়রানি করছে তাদের। ফলে বাধ্য হয়ে তার বাবা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তাদের কাছে সৌদি আরবে কর্মরত অবস্থায় সাইদুল আমিনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কাগজপত্র রয়েছে।
অপরদিকে সাইদুল আমিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অভাবের কারণে তিনি ব্র্যাকসহ বিভিন্ন লোকজনের কাছে ধার করে ৬ লাখ টাকা সবুজ হোসেনের পরিবারের কাছে নগদ প্রদান করে সৌদি আরবে চাকুরির আশায় গিয়েছেন। সেখানে যাওয়ার পরপরই সবুজ হোসেন কৌশলে তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন। তাকে চাকুরি না দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখেন। তার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্যে বেতন চাইলে মাত্র একমাসের বেতন প্রদান করেন। তাও তার হাতে না দিয়ে বাংলাদেশে তার মায়ের কাছে পৌঁছায়। চাকুরি দেয়ার নামে টালবাহানার ৬মাসের মাথায় এক পর্যায়ে তাকে এক্সিট দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেন। এরপর তিনি বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও বিচার না পেয়ে বাধ্য হয়ে থানার আশ্রয় নিয়েছেন। তাকে নির্যাতন ও হয়রানি করার ঘটনার প্রমাণপত্র তার কাছে রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।