প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
প্রায় সপ্তাহখানেক চলছে টানা বৃষ্টি। এমন বর্ষণেও চাঁদপুর শহরের কোথাও জলাবদ্ধতা নেই। কোথাও কোথাও বৃষ্টির সময় পানি জমলেও সেটা ছিল সাময়িক। স্থায়ীভাবে শহরের কোথাও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে দেখা যায় নি। এর জন্য অবশ্য চাঁদপুর পৌরসভাকে বর্ষা মৌসুমের আগেই কাজ করতে হয়েছে। শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে খুব ভালোভাবে সচল রাখতে যা করার প্রয়োজন তাই করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। শহরকে এভাবে জলাবদ্ধতা মুক্ত রাখার জন্যে পৌরসভার কার্যকর ভূমিকায় মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন চাঁদপুর শহরবাসী।
গত ৬ আগস্ট থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। লাগাতার বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে আবার কখনো থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এমন টানা বর্ষণ চাঁদপুরসহ সারাদেশেই হচ্ছে। তবে মৌসুমটিও এখন বৃষ্টির। এখন ভরা বর্ষাকাল। বর্ষাকালে এমন লাগাতার বৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। দেখার বিষয় হচ্ছে টানা বর্ষণে মানুষ কোথাও দুর্ভোগে আছে কিনা। এমন বৃষ্টিতে মানুষের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ হচ্ছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির পানি যদি না সরতে পারে তাহলে তখন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর এই জলাবদ্ধতাতেই মানুষ নানা ভোগান্তিতে পড়ে। বিশেষ করে বর্তমানে সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, এ অবস্থায় জলাবদ্ধতা হলে পরিস্থিতিকে আরো বেসামাল করে তুলতো।
চাঁদপুর শহরকে এভাবে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখায় পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলকে মানুষ অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। অনেকেই মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন। এমনকি মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল যে রাজনৈতিক দল করেন, সেই দলের বিপরীতমুখী দলের অনেকেও মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা টানা এই বর্ষণে ঢাকা চট্টগ্রামসহ আরো কিছু জেলা শহরের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরের কী ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখছি! একদিনের বৃষ্টিতেই চট্টগ্রাম শহর পানির নিচে। খোদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রকে দেখেছি নিজের গাড়ি রেখে তিনি রিকশায় যাচ্ছেন। তাঁর গাড়ি কোমর সমান পানি ভেঙ্গে না চলার কারণে তিনি গাড়ি ছেড়ে দিয়ে রিকশায় চড়েন। সে পরিস্থিতিতে টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টিতেও আমরা চাঁদপুর শহরের বাসিন্দারা আল্লাহর রহমতে এখনো অনেক ভালো আছি। টানা বৃষ্টির পরও শহরের কোথাও জলাবদ্ধতা নেই। এর জন্যে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হয়। সময়মতো পদক্ষেপ নেয়ায় চাঁদপুর শহর এখনো জলাবদ্ধতামুক্ত অবস্থায় আছে।
চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার তাঁর নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকদিন আগে একটা পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, বৃষ্টি, অতিবৃষ্টিতে ঢাকা-চিটাগাংয়ের রাস্তাঘাট যখন হাটু পানি কিংবা বুক সমান পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে, তখন চাঁদপুর পৌর কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী পদক্ষেপে পৌর এলাকার প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা নেই।
ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ সচরাচর অন্যদলের নেতা বা জনপ্রতিনিধির এমন প্রশংসা করে না এটাই দেখে জনগণ অভ্যস্ত। কিন্তু তার বিপরীতে এসে ফয়সাল গাজী বাহারের এমন মন্তব্য বিরোধপূর্ণ রাজনীতিতে সুবাতাস বলে মনে করেন জনগণ।
এ বিষয়ে কথা হয় চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েলের সাথে। তিনি চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই আমরা চাঁদপুর শহরের পুরো ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে সচল রাখার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি। শহরের সকল ড্রেনের ভেতর থেকে কাঁদা মাটি অপসারণ করে পুরো ড্রেনকে পরিস্কার করা হয়েছে। পৌরসভা থেকে অনেক টাকা ব্যয় করে এ কাজটি করা হয়েছে। যার সুফল শহরবাসী এই ভরা বর্ষা মৌসুমে পাচ্ছেন। তিনি বলেন, শহরবাসীর সেবা এবং নাগরিক সুবিধা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিধন, ময়লা আবর্জনা সময়মতো অপসারণ ইত্যাদি নাগরিক সুবিধা তো শহরবাসীকে দিতেই হবে। আর এই কাজগুলো নিয়মিত করার জন্যই পৌর নাগরিকগণ আমাদেরকে পৌর কর দিয়ে যাচ্ছেন। পৌরসভার সকল কাজে মেয়র সম্মানিত নাগরিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।