প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে। চলতি বর্ষায় রঘুনাথপুর এলাকায় ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন পার করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। ২০১৭ সাল থেকে অল্প অল্প করে ডাকাতিয়ার ভাঙ্গনের কবলে বিলীন হচ্ছে রঘুনাথপুর এলাকাটি। ইতিমধ্যে প্রায় ছয়শ’ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনরোধে বরাবরের মতো এবারও আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে স্থানীয়রা আশ্বাস নয়, চায় স্থায়ী প্রতিকার।
সম্প্রতি রঘুনাথপুরে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা তলিয়ে গেছে নদীতে। এছাড়া ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেড়িবাঁধ রাস্তা। ভাঙ্গনরোধে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে বালিভর্তি ব্যাগ নদী তীরে ফেলছেন।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতিয়া নদীর উত্তর পাড়ে অসংখ্য ডুবোচর ছাড়াও অহেতুক কয়েকটি চর পড়ে আছে। যার ফলে নদীর দক্ষিণ পাড়ে জোয়ার-ভাটার তীব্র স্রোতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর উত্তর পাড়ের চরগুলো ড্রেজিং করতে এসেও কাজ সম্পন্ন না করে ফিরে গেছে। কী কারণে ড্রেজিং কাজ শেষ না করে কর্তৃপক্ষ ফিরে গেছে নদীর দক্ষিণ পাড়ের এলাকার মানুষ তা জানেন না।
চাঁদপুর শহরের পৌর ৫নং ওয়ার্ডস্থ রঘুনাথপুর বাজার সংলগ্ন শেখ বাড়ি, খান বাড়ি, পন্ডিত বাড়ি, সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প (গুচ্ছগ্রাম), কাজী বাড়ি, গাজী বাড়ি, মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা, বালিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা ঢালীর ঘাট, পাটওয়ারী বাড়ি, বাগাদী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ও শহরের ১১নং ওয়ার্ড গুণরাজদী এলাকা ডাকাতিয়ার তীব্র ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও প্রায় অর্ধশত পরিবারের বসতঘর ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন এলাকায় জরিপ করেন।
রঘুনাথপুর ও ঢালীর ঘাট এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন, টেলু খান, আবুল বেপারী ও দুদু মেম্বার জানান, প্রতিবছরই আমাদের ফসলি জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়। এ পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে যথাযথ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। নদী ভাঙ্গন রোধে এখনই যথাযথ কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে বেড়িবাঁধ সড়কসহ কয়েকটি এলাকা বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই নদী ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছি। নদীর তীরে ভাঙ্গন এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ চেয়েছি। আশা করি বরাদ্দ পেলে শীঘ্রই স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।