প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
কচুয়ায় সালিসি বৈঠকে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে আকলিমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরালের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। আটককৃতরা হচ্ছেন : উপজেলার সিংআড্ডা গ্রামের ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ (৩২), জসিম উদ্দিন (৪২), আনোয়ার হোসেন (৫০) ও নবীর হোসেন (৩৮)। এ ঘটনায় গৃহবধূ আকলিমা বেগম বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে আকলিমা বেগম নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় তা ভাইরাল হয়। গৃহবধূকে নির্যাতন করার সময় এক যুবক তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করে। মুহূর্তের মধ্যে ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদের উপস্থিতিতে আলমগীর হোসেন নামের এক যুবক গৃহবধূ আকলিমাকে দেশীয় লাঠি (মোত্রা) দিয়ে তার পিঠে উপর্যুপরি আঘাত করছে। আশপাশের দু-একজন বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাতে পাত্তা না দিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। পেটানোর সময় ২টি মোত্রা ভেঙ্গে গেলে আলমগীর চেয়ার দিয়ে পেটাতে আসে। এ দৃশ্য যেন মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। অবিলম্বে এ নরপিচাশদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্যে প্রশাসনের প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পোস্টে কমেন্ট করা ব্যক্তিরা।
গৃহবধূ আকলিমা জানান, প্রায় ২০ বছর পূর্বে সিংআড্ডা গ্রামের মজুমদার বাড়ির আব্দুর রহিমের সাথে আমার বিয়ে হয়। ওই ঘরে আমার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১৪ সালে আমার স্বামীর মৃত্যু হলে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়ি আমি। বিভিন্ন সময় খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয়েছে আমাকে। একমাত্র মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৫দিন পূর্বে একই গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির আলমগীর হোসেনকে বিয়ে করি। বিয়ে করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার ৯ আগস্ট কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদের বাড়িতে সালিসি বৈঠক বসায়। এই বৈঠকে আমার প্রথম পক্ষের ভাসুর আনোয়ারের ছেলে আলমগীর সালিস চলাকালীন প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। পরে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করায়।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহীম খলিল জানান, ঘটনার দিন রাতে কচুয়া থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ইউপি সদস্য ফরিদ আহমেদ ও তার ভাই জসিমসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত চার জনকে প্যানেল কোডের সংশ্লিষ্ট ধারায় বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে চাঁদপুরের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী আলমগীর হোসেন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।