প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
নিম্নচাপজনিত টানা বর্ষণে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পাধীন ফরিদগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বীজতলায় পানি জমেছে। কয়েকটি সড়কের পাশে থাকা গাছ উপড়ে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক। মৎস্যচাষীরা তাদের মাছের ঘের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন।
জানা গেছে, নিম্নচাপের কারণে টানা বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যেই ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকা, বালিথুবা পূর্ব ও পশ্চিম, সুবিদপুর পূর্ব, পাইকপাড়া উত্তর, গোবিন্দপুর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নসহ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, টানা বর্ষণ কারণে তাদের আউশ আবাদের জন্য ভালো হলেও কিছু বীজতলা ডুবে গেছে। বৃষ্টির পানি দ্রুত নামলে তেমন ক্ষতি হবে না বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান জানান।
এদিকে ভারী বর্ষণের কারণে আতঙ্কে রয়েছেন মৎস্য চাষীরা। মাছের ঘেরগুলো পানিতে টইটম্বুর। নদীতে পানি বেশি থাকায় প্রজেক্টের পানি সরতে পারছে না। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে তাদের মাছ ভেসে যেতে পারে। কয়েকজন মৎস্য চাষী জানান, আমরা আবহাওয়া নিয়ে বিপদে রয়েছি। কয়েকদিন প্রচণ্ড গরম পড়েছে, আবার এখন টানা বর্ষণ।
অন্যদিকে ভারী বর্ষণের কারণে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ফরিদগঞ্জ-রূপসা-খাজুরিয়া সড়কের রূপসা নয়াবাড়ি এলাকায় পূর্ব থেকে ফাটল ধরা সড়কের পাশের গাছ উপড়ে পড়ে গিয়ে সড়কের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। রূপসা উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম কাউসারুল আলম কামরুল জানান, গত বছরের নভেম্বর মাসে সড়কের ফাটলের বিষয়টি স্থানীয় এলজিইিডির প্রকৌশলীকে জানালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। ফলে গত কদিনের টানা বৃষ্টির কারণে রূপসা নয়াবাড়ি এলাকায় গাছ উপড়ে ফাটল ধরা সড়কের বড় অংশ সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে ভেঙ্গে গেছে। যদিও মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে ঠিকাদারের লোকজন ভেঙ্গে যাওয়া অংশ মেরামত শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে বলেছি, সড়কটি রক্ষায় খালের পাশে থাকা বড় আকারের গাছগুলো কাটা ছাড়া কোনো গতান্তর নেই। সেই গাছের কারণেই সড়কটি ভাঙ্গলো।
এছাড়া গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া-আদশা সড়কেও একটি গাছ উপড়ে সড়কের ক্ষতি হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ জানান, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি পরিদর্শন করেছেন।
সরেজমিন ফরিদগঞ্জ-রূপসা সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া সড়কের স্থানে গিয়ে দেখা যায়, গাছ উপড়ে সড়কের ভেঙ্গে পড়া অংশ মেরামতে কাজ করছে শ্রমিকরা। কয়েকজন শ্রমিক জানান, তারা সকাল থেকেই সড়কটি মেরামতে কাজ করছেন। এই পর্যন্ত প্রায় ৬শ’ ফুট বালি দিতে হয়েছে ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে। স্থানীয় লোকজন জানায়, মাত্র বছর খানেক পূর্বে নির্মিত সড়কটি ভেঙ্গে পড়ায় একাংশ ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহম্মদ ঢাকায় প্রশিক্ষণে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছা জানান, বর্ষণের কারণে কয়েকটি ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ফরিদগঞ্জ-রূপসা সড়কের ফাটলের বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করেছেন। কিন্তু তিনি কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় টানা বর্ষণে গাছ উপড়ে সড়কের ক্ষতি হলো।