প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
এমন কাজ কোনো মানুষে করতে পারে না, নিশ্চিত মানুষরূপী জানোয়ার করেছে--এমনটাই বলছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। গত জ্যৈষ্ঠ মাসে লেংড়া জাতের গাছটিতে কমপক্ষ ৫ মণ আম ধরেছে, যার ভাগ আশপাশের শতাধিক ব্যবসায়ী পেয়েছে। গাছটির বয়স প্রায় ১০ বছর হলেও যত্নের কারণে প্রচুর আমের ফলন হয়েছে গেলো জ্যৈষ্ঠ মাসে। মানুষরূপী কোন্ জানোয়ার বা জানোয়ারের দল গত রাতের (বুধবার দিবাগত রাত) কোনো একসময় গাছটির নিচের অর্ধেকটা অংশ কেটে রেখে যায়। রাত শেষে সকালে বাতাসের সাথে গাছটি হঠাৎ করে মাটিতে পড়ে যায়। এমন গাছটি কে কাটতে পারে, কারা কাটতে পারে, কোন্ উদ্দেশ্য কাটতে পারে--এমন প্রশ্ন অন্তত যারা কাটা গাছটি দেখেছে তারাই করেছে আর আফসোস করেছে। ঘটনাটি হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজারের মাদ্দাহ খাঁ স্যানিটারী দোকানের সামনে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৮/১০ বছর পূর্বে শেখ মার্কেটের পূর্ব পাশে মাদ্দাহ খাঁ স্যানিটারীর মালিক রুহুল আমিন লেংড়া জাতের আমের চারাটি রোপণ করে চারপাশে বেড়া দিয়ে যত্ন শুরু করেন। রোপণের মাত্র এক দশক পার না হতেই গত বছর গাছটিতে বেশ কিছু আম ধরে। সর্বশেষ গেলো মৌসুমে প্রায় ৫ মণ আম ধরে গাছটিতে। গাছের সব আম একত্রে পেড়ে পাশের ব্যবসায়ীদের মাঝে ভাগ করে দেন রুহুল আমিন। স্যানিটারী ব্যবসায়ী হিসেবে খালি পানির ট্যাংকি এই গাছের সাথে শিকলে বেঁধে রাখতেন রুহুল আমিন। হঠাৎ করে গত রাতে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) দিবাগত রাতের কোনো এক সময় গাছের গোড়ায় অর্ধেকের বেশির ভাগ অংশ চিকন করাত দিয়ে কেটে রাখে মানুষরূপী কোনো জানোয়ার বা জানোয়ারের দল।
কাটা গাছের প্রত্যক্ষদর্শী ও পাশের ব্যবসায়ী পলাশ, রিয়াদ, আলমগীর, শরীফ, ছায়েদ, মাহবুব, ইউসুফসহ বহুজন জানান, গাছের পাশের কোনো দোকানী গাছটি কাটতে পারে এজন্যে যে, তার দোকানের সাজানো মাল বাইরে থেকে দেখা যায়নি বলে। অন্যদিকে মাদ্দাহ খাঁ স্যানিটারী যে ভিটিতে অবস্থিত সেই মার্কেটের মালিক পক্ষের ভাইয়ে ভাইয়ে মামলা চলমান। তাদের মধ্যেও কেউ এমন কাজ করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সুলতান পাটোয়ারী জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রাইভেট পড়তে আসা এক মেয়ের ওপর গাছটি পড়ে গোড়াটি উপরে উঠে যায়। মেয়েটি দৌড় দিয়ে রক্ষা পেলেও এমন কাজটি কোন্ জানোয়ার বা জানোয়ারের দল করেছে তা হিসেবে মিলছে না।
গাছ লাগানো রুহুল আমিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, গাছটি আমি সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। আর আশাপাশের কাউকে বাদ দিয়ে আমি একা আম খাইনি। যারা এ কাজ করেছে তাদের মুখে থু-মারি।
হাজীগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, গাছের প্রাণ আছে, যারা এমন জঘন্য কাজ করেছে তারা একদিন এর প্রতিফল পাবেই। এই গাছ কাটা নিয়ে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।