প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
দীর্ঘ সময়ের জন্যে মাঠ ব্যবহার করতে দেয়া অসঙ্গত
হাজীগঞ্জ উপজেলাধীন হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বলাখাল যোগেন্দ্র নারায়ণ (জে.এন.) উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের পূর্ব দিকে বিরাট একটি মাঠ আছে। চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক লাগোয়া দক্ষিণ দিকে এ মাঠটি কোনো সীমানা দেয়াল দিয়ে ঘেরাও করা নয়, এটি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত একটি মাঠ। ভালো অবস্থানে হাজীগঞ্জ উপজেলায় এমন উন্মুক্ত মাঠের সংখ্যা নগণ্য। এ মাঠটিতে শুধু বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে না, বলাখাল গ্রামের ছেলেরাও খেলাধুলা করে। গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, গত ৭ মাস ধরে সে মাঠটি অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। কিন্তু এই অবরুদ্ধতা নিরসনে দৃশ্যমান হয়নি কার্যকর উদ্যোগ।
|আরো খবর
এ মাঠে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মেলা করার জন্যে একটি আবেদন করেন হাজীগঞ্জের ৫নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন সবুজ। গত ১ মার্চ ২০২১ তৎকালীন অধ্যক্ষ আবু তাহের মজুমদার আবেদনটি গ্রহণ করেন। আবেদনকারী মাঠটি উক্ত মেলা আয়োজনে ১০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত অর্থাৎ দু মাস ব্যবহারের অনুমতি চাইলেও অধ্যক্ষ মহোদয় ১০ জুন অর্থাৎ তিন মাস ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে দেন। তারপর আবেদনকারী মাঠের চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে টিকেট কাউন্টারসহ ছোট ছোট দোকান তৈরি করেন। মেলার পুরো প্রস্তুতি নেয়ার পর করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আঘাত হানে দেশে। এতে বন্ধ হয়ে যায় মেলার উদ্বোধনসহ সকল কার্যক্রম। ইতিমধ্যে ৭ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও মেলা আয়োজনকারী মাহতাব হোসেন সবুজ মাঠে নির্মিত অস্থায়ী স্থাপনা আর সরিয়ে নেয়নি। এতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিপাকে ও চাপের মধ্যে পড়ে। গত ২৪ আগস্ট স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার প্রথম চিঠি দিলেও মাঠ ব্যবহারকারী থেকে কোনো উত্তর পায়নি। ইতোমধ্যে বিদ্যালয় ও কলেজ খুলে ফেলায় শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলাসহ স্কাউট কার্যক্রম করতে পারছে না। এমতাবস্থায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খোদেজা বেগম গত ১ অক্টোবর দিয়েছেন দ্বিতীয় চিঠি। মাঠ ব্যবহারকারী শুক্রবারের মধ্যে মাঠ খালি করে দেবেন বলে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তবে চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেছেন ভিন্ন কথা। মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবারের মধ্যে জেলা প্রশাসকের অনুমতি না পেলেই তবে মাঠে নির্মিত অস্থায়ী স্থাপনা সরিয়ে নেবেন।
আমরা ১৭ মাস পর খুলে দেওয়া বলাখাল জেএন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠ শুধু নয়, অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাঠেও মেলা বা অন্য কোনো প্রয়োজনে দীর্ঘ সময়ের জন্যে কাউকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি না দিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি। মাঠ ব্যবহারের অনুমতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়বে এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হবে বলে মনে করি। কারণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে যদি শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলার সুযোগ না পায়, তাহলে তাদের মানসিক বিকাশ ও শারীরিক সুস্থতা বাধাগ্রস্ত হবে।