বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫  |   ২৯ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৬

দুদকের এমন অভিযান যথার্থই বটে

অনলাইন ডেস্ক
দুদকের এমন অভিযান যথার্থই বটে

হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে রোগীদের খাবারে ব্যাপক অনিয়ম, চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি এবং অন্যান্য অব্যবস্থাপনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। সোমবার (৩০ জুন ২০২৫) দুদক চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজগর হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোগীদের দুপুরের খাবারে মুরগির পরিবর্তে পাঙ্গাস মাছ দেয়া হচ্ছে, যদিও সরকারি নথিপত্রে রুই মাছ দেয়ার কথা। এছাড়া প্রতিটি রোগীকে ১৮৬ গ্রাম মাছ দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে দেয়া হচ্ছিল মাত্র ৮৮ গ্রাম। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। অভিযানে দুজন ডাক্তারকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পাওয়া যায়, যাদের অনুপস্থিতির কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিলো না। হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় একজন ডাক্তার টাকার বিনিময়ে রোগী দেখছিলেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুদক। হাসপাতালের অপরিষ্কার পরিবেশ এবং নার্সদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে দুদক জানিয়েছে, তারা এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনবে এবং সকল নথিপত্র সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. কেএম আব্দুল্লাহ আল মামুন দুদককে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলে জানিয়েছেন। অভিযান শেষে দুদক চাঁদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজগর হোসেন জানান, তারা সকল তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করে প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন এবং কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চাঁদপুর জেলার আটটি উপজেলার মধ্যে হাইমচর উপজেলা প্রত্যন্ত এলাকায়, যেখানে পারতপক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কেউ সহজে যেতে চায় না। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ আরো কিছু জায়গায় অনিয়ম চলে ফ্রি স্টাইলে। দুর্গম চরাঞ্চলের নিরীহ লোকজন সরকারি এই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে এসে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মচারী কর্তৃক অবহেলার শিকার হন, শোষিত হন, প্রতারিত হন, অচিকিৎসার শিকার হন। এ ব্যাপারে চাঁদপুর কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে বারবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের টনক কখনোই নড়েনি। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর টনক নড়েছে। সেজন্যে সোমবার (৩০ জুন ২০২৫) তারা আকস্মিক অভিযান চালিয়েছে এবং অনেক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। এই প্রমাণ অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তিরা যদি শায়েস্তা না হন, তাহলে হতাশায় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মুষড়ে পড়া ছাড়া সংক্ষুব্ধদের কি আর গত্যন্তর আছে? আমরা মনে করি, অনিয়মের আখড়া যে সকল স্থানে আছে, সেখানে বারবার অভিযান চালাতে হবে। একবার চালালে নানান অজুহাত ও কারণ দেখিয়ে অনিয়ম অবলম্বনকারীরা পার পেতে চেষ্টা করবে। কিন্তু বারবার একই অভিযান চালালে আর পার পেতে পারবে না। সেজন্যে সেটাই করা উচিত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়