শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫, ০১:২৬

এমন যুগপৎ অভিযান বিরলদৃষ্ট

অনলাইন ডেস্ক
এমন যুগপৎ অভিযান বিরলদৃষ্ট

সড়কের দুপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল উদ্ধারে জোরেশোরে অভিযানে নেমেছে শাহরাস্তি উপজেলা প্রশাসন। বর্তমান পৌর প্রশাসক নিগার সুলতানা অঁাটঘাট বেঁধেই জলাবদ্ধতা নিরসনে ঝঁাপিয়ে পড়েছেন। বিগত দুমাস ধরে শাহরাস্তি পৌর এলাকার প্রধান খালগুলো দখলমুক্ত করে পানি প্রবাহের পথ সুগম করে চলছেন। পৌর এলাকায় কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পানি নিষ্কাশনের জায়গায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে গড়ে উঠে বহুতল ভবন। এর ফলে বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পৌরবাসীর। উপজেলা সদরের এলাকাগুলো অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। কিছু কিছু এলাকায় পানি জমে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যায়।

এই জলাবদ্ধতা নিরসনে বলতে গেলে যুদ্ধ ঘোষণা করে মাঠে নেমেছে শাহরাস্তি পৌর প্রশাসন।ইতোমধ্যেই মেহের কালীবাড়ি ও ঠাকুর বাজার এলাকায় খালের বজর্য অপসারণ করা হয়েছে। বর্তমানে কালিয়াপাড়া, দোয়াভাঙ্গা ও মেহের এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে চলছে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ। ইতঃপূর্বে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ। বরং তাদেরকে হাত করেই নির্মাণ হয়েছে অপরিকল্পিত ভবন এবং খাল দখল। ভোগান্তিতে পড়া পৌরবাসী বর্তমান পৌর প্রশাসক নিগার সুলতানার এ উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। পাশাপাশি একই সাথে চলছে চঁাদপুর-কুমিল্লা সড়কের দু পাশে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। এ বছরের প্রথমদিকে চঁাদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে নামে। এতে শাহরাস্তি উপজেলা অংশে ব্যাপকভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিছুদিন অতিবাহিত না হতেই কিছু অসাধু ব্যক্তি পুনরায় দখলে নামে। এ বিষয়ে ব্যাপক হারে অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন আবারো উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার (১৭ জুন ২০২৫) ওয়ারুক, দোয়াভাঙ্গা, কালিয়াপাড়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এতে করে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, জলাবদ্ধতা দূর ও সড়কের পাশ উন্মুক্ত রাখতে আমরা কাজ করছি। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই অবৈধ স্থাপনা অথবা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করা যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্যে। তিনি পৌরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করতে গিয়ে প্রশাসনকে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে আক্রমণ করতেও এসেছে কিছু প্রভাবশালী। সকল বাধা উপেক্ষা করে চলমান কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পৌরবাসী।

আমাদের দেশে সড়কের দু পাশ ও খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে কারা? এরা কি সংখ্যায় অনেক? মোটেও নয়। এরা গুটিকতক। এরা রাজনৈতিক/অরাজনৈতিক প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে- প্রশ্রয়ে দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখে। উচ্ছেদ অভিযান বিলম্বিত করতে এরা নানা ফন্দিফিকির ও তদবির করে। আবার উচ্ছেদ হয়ে গেলে সেখানে পুনরায় দখলদারিত্ব কায়েম করে। এটা অতি সাধারণ চিত্র। এমন বাস্তবতায় শাহরাস্তিতে চঁাদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুপাশে পূর্বের উচ্ছেদ করা স্থানে পুনঃদখলদারিত্বে আবার উচ্ছেদ অভিযান স্মরণকালে বিরলদৃষ্ট এবং একই সাথে খাল পুনরুদ্ধার অভিযান ব্যতিক্রমই বটে। এজন্যে ইউএনও ও পৌর প্রশাসক পদে যুগপৎ দায়িত্বপালনকারী নারী কর্মকর্তা নিগার সুলতানাকে পরিশ্রমী ও সাহসী বললে অত্যুক্তি হবে না। তঁার জন্যে নিরন্তর শুভ কামনা। আমরা দেশের সর্বত্র কর্মরত কর্মকর্তাদের নিকট একজন নিগার সুলতানার ন্যায় কর্মতৎপরতা প্রত্যাশা করছি। এতে সারাদেশে সড়কে পথচারী ও যান চলাচল স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হবে এবং খালগুলো স্বাভাবিক পানি প্রবাহে প্রাণ ফিরে পাবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়