সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৪

সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ডব্লিউএইচও প্রার্থিতা: অভিযোগের পাহাড়ে আচ্ছন্ন এক অধ্যায়

দুদকের তদন্তে চাঞ্চল্য

বিশেষ প্রতিবেদন: মো.জাকির হোসেন
দুদকের তদন্তে চাঞ্চল্য
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল(ছবি: সংগৃহীত)

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক পরিচালকের পদে নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং তথ্য বিকৃতির একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসা এই তথ্যগুলো বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

ডব্লিউএইচও পদে প্রার্থিতার তথ্য বিকৃতি: সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ডব্লিউএইচও’র প্রার্থিতার জন্য যে তথ্য প্রদান করেছিলেন, তা যথাযথ ও নির্ভুল ছিল না বলে দুদকের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশাগত অভিজ্ঞতার উল্লেখিত তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার বড় ধরনের গড়মিল পাওয়া গেছে। আরও জানা গেছে, তিনি কানাডার নাগরিকত্বের অধিকারী ছিলেন, যা গোপন রাখা হয়েছিল।

রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার ও আর্থিক ক্ষতি: দুদক জানায়, ডব্লিউএইচও’র ৭৬তম সম্মেলনে অংশগ্রহণের নামে সায়মার নেতৃত্বে ১০০ জনের বেশি কর্মকর্তাকে ভারতে পাঠিয়ে বিপুল রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করা হয়। সায়মা তার পারিবারিক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সরকারি তহবিল থেকে এই খরচ নির্বাহ করান।

পূর্বাচল প্লট কেলেঙ্কারি: দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, সায়মা ওয়াজেদ বেআইনিভাবে পূর্বাচলের ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠার একটি প্লট দখল করেন। রাজনৈতিক প্রভাব এবং দুর্নীতির আশ্রয়ে এই প্লট বরাদ্দের তথ্য নিশ্চিত করেছে কমিশন। এ নিয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সূচনা ফাউন্ডেশন’-এর আড়ালে জবরদস্তি: সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্রতিষ্ঠিত ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ দুর্নীতির আরেকটি আখড়া হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায় এবং সামাজিক প্রকল্পের নামে সরকারি তহবিল আত্মসাতের অভিযোগ উঠে এসেছে।

স্বাস্থ্য খাতের অর্থ আত্মসাৎ: দুদক জানায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অটিস্টিক সেল ব্যবহার করে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সায়মা বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ অর্থ আত্মসাৎ শুধু দেশের আর্থিক ক্ষতিই করেনি, বরং স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলাভঙ্গ ঘটিয়েছে।

কর ফাঁকি ও অবৈধ প্রভাব: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর প্রভাব খাটিয়ে সূচনা ফাউন্ডেশনের আয় করমুক্ত করা হয়, যা সরাসরি সরকারের রাজস্ব ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।

দুদকের পর্যবেক্ষণ: দুর্নীতি দমন কমিশন সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোকে অত্যন্ত গুরুতর এবং বিশ্বাসযোগ্য বলে আখ্যায়িত করেছে। তারা জানায়, আরও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

পরিণতির অপেক্ষা: এখন দেখার বিষয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর এই অভিযোগগুলো কী পরিণতি পায়। তার পরিবারের রাজনৈতিক প্রভাব বিষয়টিকে কতটা প্রভাবিত করবে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। (তথ্যসূত্র: দুদক ও সংশ্লিষ্ট নথি)

ডিসিকে/এমজেডএইচ

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়