সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৫

প্রবাসী অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে চাই সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা

অনলাইন ডেস্ক
প্রবাসী অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে চাই সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা

রিয়াদে ব্যবসায়ী রাসেলকে অপহরণ করে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে বলে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের 'প্রবাসীকণ্ঠে' খবর বেরিয়েছে। খবরটি পরিবেশন করেছেন মো. জাহাঙ্গীর আলম হৃদয়। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো শ্রম বাজার হচ্ছে সৌদি আরব । বর্তমানে ৩৩ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করছে মরুর এই দেশটিতে। বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে । যেমনভাবে বৃদ্ধি হচ্ছে দেশের অর্থনীতির চাকা, ঠিক তেমনি কিছু প্রবাসী জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধের সাথে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অপহরণ, মাদক, ছিনতাই, দেহ ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপকর্ম। এসব অপকর্মের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এইভাবে অপরাধীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে যে কোনো সময় বন্ধ হতে পারে সৌদি আরবে বাংলাদেশীদের শ্রম বাজার।

সম্প্রতি রিয়াদে বাংলাদেশি কয়েকটি চক্র বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে ও সাধারণ প্রবাসীদের অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করছে। তেমনি একজন ভুক্তভোগী প্রবাসী মো. রাসেল মিয়া। তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে রিয়াদে বসবাস করছেন। গত ১১ জানুয়ারি একটি মোবাইল ফোন নাম্বার থেকে ব্যবসার কথা বলে অপহরণ চক্রটি গুগল লোকেশন পাঠায়। নির্দিষ্ট ঠিকানায় যাওয়ার সাথে সাথে ৮ থেকে ১০ জন বাংলাদেশি তার চোখ বেঁধে মারধর করে একটি ইস্তেরাহায় নিয়ে যায়। টানা ৪ দিন আটকে রেখে তার ওপরে অমানুষিক নির্যাতন করে। শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে জোরপূর্বক দেশে থাকা পরিবারের কাছ থেকে বাংলাদেশি টাকায় ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যাংক এবং বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে। টাকা পাওয়ার পর তাকে রাস্তায় ফেলে চলে যায়। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী রেমিট্যান্স যোদ্ধা রাসেল মিয়া। অপহরণকারীদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে রিয়াদের সানসিটি পলিক্লিনিকে চিকিৎসা শেষ করে তিনি স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে ভুক্তভোগী রাসেল মিয়ার পরিবার ঢাকা খিলগাঁও তালতলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন বলে আশ্বস্ত করেন।

এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাসেল মিয়া। তিনি তাকে অপহরণের বিবরণ দিয়ে বলেন, আমার মতো এমন পরিস্থিতির শিকার যেন কোনো প্রবাসী না হয়। তিনি রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে বাংলাদেশিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে । যে কোনো সময় বাংলাদেশিদের শ্রম বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে সৌদি আরব সরকার--এমনটাই মনে করছেন প্রবাসী সচেতন নাগরিক সমাজ। এই মনে করাটাই উদ্বেগের। কেননা এটি সত্যি হলে বিরাট সংকটে পড়বে দেশ।

আমরা মনে করি, সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস এই অপহরণকারীদের চিহ্নিতকরণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও সক্রিয়তার প্রমাণ দিতে হবে। এদেরকে প্রবাসে ধরা না গেলে প্রবাসের ও দেশের গণমাধ্যমে এদের ছবি দিয়ে 'এদের ধরিয়ে দিন' শিরোনামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ সামাজিকভাবে অপমানিত করার বিবিধ প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে এবং দেশে বিদ্যমান এদের সম্পদ ক্রোক করার কঠোর উদ্যোগ নিতে হবে। এদের প্রতি কোনো করুণা বা ছাড় দেয়া মানে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া। এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করার উদ্যোগও নিতে হবে। মোদ্দা কথা, প্রবাসী তথা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের দুরবস্থা নিরসনের ব্যাপারে দেশে/বিদেশে সরকারি কোনো সংস্থার গাফিলতি ও উদাসীনতা আমরা বাস্তবে আর দেখতে চাই না, এমনকি কল্পনাতেও ধারণ করতে চাই না। আমরা প্রবাসে নূতন নূতন শ্রম বাজার চাই, বিদ্যমান কোনো শ্রম বাজার হারাতে চাই না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়