প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫, ১৫:১৯
সুপ্রিম কোর্টে রহস্যময় আগুন!
শর্ট সার্কিট থেকে লাগা আগুনে পুড়ে গেছে স্টেশনারি ও প্লাস্টিক সামগ্রী, আতঙ্কিত কর্মচারীরা

আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তৃতীয় তলায় একটি স্টোররুমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আগুনের সূত্রপাত হয় ভবনের ছাদের পাশের স্টোররুমে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের উৎপত্তি। মাত্র ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও আদালত চত্বরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
|আরো খবর
সুপ্রিম কোর্টের কর্মচারীরা দেরি না করে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নিয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সচেষ্ট হন। গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই আমাদের কর্মীরা আগুন অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।”
ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। আগুন অনেকাংশেই নিভে গেলেও তারা পুরোপুরি নির্বাপণ নিশ্চিত করে।
স্টোররুমে রাখা কাগজপত্র, স্টেশনারি এবং প্লাস্টিক সামগ্রী পুড়ে গেলেও দাপ্তরিক নথি বা মামলা সংশ্লিষ্ট কোনো কাগজ সেখানে ছিল না। গণসংযোগ কর্মকর্তা জানান, “বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং আদালতের কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।”
সাধারণ দুর্ঘটনা না অন্য কিছু? উঠছে প্রশ্ন
সচেতন মহলের প্রশ্ন—সুপ্রিম কোর্টের মতো উচ্চ নিরাপত্তা সম্পন্ন ভবনে স্টোররুমে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগা কি নিছক দুর্ঘটনা? একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনিয়র আইনজীবী মন্তব্য করেন, “বিচার বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের ঘটনা হওয়াটা কাকতালীয় হলেও তদন্ত হওয়া উচিত।”
নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটুকু কার্যকর?
সুপ্রিম কোর্ট ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আগুন প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এক কর্মকর্তা জানান, “স্টোররুমগুলোতে দীর্ঘদিন নজরদারির অভাব রয়েছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত পরিদর্শন ও অগ্নিনির্বাপন মহড়া জরুরি।”
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা নিম্নলিখিত তিনটি পরামর্শ দিয়েছেনঃ
- পুরো আদালত ভবনের ইলেকট্রিক তার ও সংযোগ পরীক্ষা করে নতুন করে সাজানো।
- প্রতিটি স্টোররুমে ফায়ার অ্যালার্ম ও স্মোক ডিটেক্টর স্থাপন।
- নিয়মিত অগ্নিনির্বাপন মহড়া ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।
গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য
সুপ্রিম কোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আগুন লাগার ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি বড় সতর্কবার্তা। কেবল প্রযুক্তিগত ত্রুটি বলেই দায় এড়িয়ে গেলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয় ঠেকানো কঠিন হয়ে যাবে।
ডিসিকে/এমজেডএইচ