প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪১
অতিরিক্ত চিন্তা করা কি কোনো রোগ?
চিন্তা মানুষের সহজাত অভ্যাস বা আবেগ। আমরা সবাই এই অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাই। অনেকে মনে করেন, চিন্তা না করে কোনো কাজ করা যায় না। অথবা আগে থেকে চিন্তা না করলে কোনো ভালো কিছু করা যায় না। তাই চিন্তা করা নেতিবাচক বিষয় সেটা বলা হচ্ছে না। তবে অতিরিক্ত চিন্তা করা অবশ্যই নেতিবাচক। মানসিক অশান্তির অন্যতম কারণ হলো বাস্তব প্রেক্ষাপটের বাইরে অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি বেশি ভাবা। চিন্তাভাবনার সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক রোগের গভীর সম্পর্ক আছে। যখন চিন্তাগুলো অতিরিক্ত হয়ে যায় বা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, সেটা দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে, তখন এটি একটি চিন্তার ব্যাধিতে পরিণত হতে পারে।
অতিরিক্ত চিন্তা কখনো কখনো একটা অভ্যাসে বা পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণে পরিণত হতে পারে, আবার কখনো কখনো অন্য কোনো মানসিক সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
অতিরিক্ত চিন্তা কেন হয়
* অতীতের কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা বা ভুল সিদ্ধান্তের জন্য নিজেকে দোষারোপ করা।
* ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা।
* সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা।
* অজানা পরিস্থিতি বা ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া।
* মানসিক রোগ যেমন ওসিডি বা শুচিবাই, অ্যাংজাইটি বা উদ্বিগ্নতার অসুখ, ডিপ্রেশন, ব্যক্তিত্বজনিত অসুখ ইত্যাদি।
অতিরিক্ত চিন্তার ক্ষতিকর প্রভাব
* অতিরিক্ত চিন্তা মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
* ঘুমের সমস্যা, মাথাব্যথা, পেট খারাপ ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
* পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।
* কাজের ক্ষমতা কমে যায়, কাজে মনোযোগ দিতে কষ্ট হয়।
কীভাবে চিন্তা কমানো যায়
বর্তমানে মনোযোগ দিন। কী হতে পারে বা অতীতে কী হয়েছিল, সেগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে বর্তমানে কী করতে হবে, সেদিকে মনোযোগ দিন।
* ধ্যান বা মেডিটেশন মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
* নিজেকে বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যস্ত রাখলে অহেতুক চিন্তা কম আসে।
* সুনির্দিষ্ট সমস্যা শনাক্ত করে সমাধানের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য বা কৌশল অবলম্বন করে সমস্যার সমাধান করতে শিখুন।
* অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চিন্তা বাড়তে পারে।
* সুষম খাবার খান। সুষম খাবার খেলে মন শান্ত থাকে।
* সামাজিক যোগাযোগ বাড়ান। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান।
* যদি নিজে সমস্যা সমাধান করতে না পারেন, তাহলে একজন মনোচিকিৎসক বা মনোবিদের সাহায্য নিন।
কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন
* যদি অতিরিক্ত চিন্তা আপনার দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে।
* যদি আপনি নিজে নিজে এই সমস্যা সমাধান করতে না পারেন।
* যদি আপনার অন্য কোনো মানসিক সমস্যা থাকে।