বাসস্ট্যান্ড মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে সাদপন্থীদের অপসারণে আল্টিমেটাম

টঙ্গী ইজতেমার মাঠে সাদপন্থীদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং চাঁদপুরে তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর ২০২৪) দুপুরে প্রতিবাদ সমাবেশশেষে চাঁদপুরের ওলামায়ে কেরাম এবং শুরায়ী নেজামের দাওয়াত ও তাবলীগের সাথীগণ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। এর আগে সকাল ১০টায় চাঁদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডস্থ ইলিশ চত্বরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত ওলামায়ে কেরাম এবং শুরায়ী নেজামের দাওয়াত ও তাবলীগের সাথীগণ অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশ থেকে চাঁদপুরে সাদপন্থীদের নেতৃত্বদানকারীদের বিতাড়িত করা এবং বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ থেকে ইমাম আব্দুর রশিদ ও আব্দুল্লাকে অপসারণ করতে প্রশাসনকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। একই সাথে দাবি মেনে না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

জাফরাবাদ হাফিজিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম খাজা আহমদ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা মুফতি নূর আলম ও মুফতি শহীদুল্লাহর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ষোলঘর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা লিয়াকত হোসাইন, বড় স্টেশন মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি সিরাজুল ইসলাম, বেগম জামে মসজিদের খতিব মুফতি মাহবুবুর রহমান, জাফরাবাদ হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মুফতি তোহা খান, মহামায়া মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা মোহাম্মাদ উল্লাহ, দারুল ফজল মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ আবুল হাসান, জাফরাবাদ মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা মো. জুবায়ের, মাওলানা আল-আমিন, মমিনপুর মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, রঘুনাথপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আশরাফ আলী, মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা এমদাদ, তাবলীগের সিনিয়র মুরুব্বী মো. হুমায়ুন, নিশি বিল্ডিং হাওলাদার জামে মসজিদ ও মাদ্রাসার মোহতামিম মুফতি আশেকে এলাহী, বকুলতলা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, ভূঁইয়া মার্কেট মসজিদের ইমাম হাফেজ ক্বারী রশিদ আহমেদ, কচুয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি আবু হানিফ, মতলব উত্তর উপজেলা প্রতিনিধি মুফতি জয়নাল আবেদীন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি মাওলানা আবুল কালাম, শাহরাস্তি উপজেলা প্রতিনিধি মাওলানা হাবিবুর রহমান, মতলব দক্ষিণ শাহী মসজিদের খতিব গোলাম সারোয়ার ফরিদী ও হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হাফেজ মাওলানা জুবায়ের।

বক্তারা বলেন, টঙ্গীর ময়দানে গভীর রাতে সন্ত্রাসী সাদপন্থীরা শুরায়ী নেজামের সাথীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তারা আমাদের ভাইদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এই হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। কিন্তু সাদপন্থীদের যদি সঠিক বিচার না করা হয়, তাহলে আমরা কঠিন আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা পাঁচ দফার মধ্যে রয়েছে-- (১) সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের বর্বর নৃশংস হামলা ও মসজিদে মসজিদে বিশৃঙ্খলা বন্ধ করার লক্ষ্যে চাঁদপুরসহ সারাদেশে তাদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

(২) ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টঙ্গী মাঠে হামলার সাথে জড়িত চাঁদপুরসহ সারাদেশের সকল সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

(৩) ঢাকার কাকরাইল মারকায ও টঙ্গী ইজতেমা মাঠ সম্পূর্ণরূপে শুরায়ী নেজামের তত্ত্বাবধানে দেয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ আঞ্জাম দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে হবে।

(৪) পুরাণবাজার জামে মসজিদে সাদপন্থীদের সকল কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে এর দায়ভার প্রশাসনকেই বহন করতে হবে।

(৫) চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড মসজিদ মাদ্রাসা থেকে সাদপন্থীদের লিডার আবদুর রশীদ ও মৌলভী আব্দুল্লাহকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অপসারণ করতে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।