শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২১, ০০:০০

অনলাইন ক্লাস, সুবিধা-অসুবিধা : আমাদের করণীয়
অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বের সকল মানুষের কাছে আতঙ্কের একটি নাম হচ্ছে করোনাভাইরাস। করোনা শব্দের আভিধানিক অর্থ মুকুট। ১৯৩০ সালে এ ভাইরাসের আলোচনা শুরু হলেও ১৯৬০ সালে করোনা শনাক্ত নিশ্চিত করা হয়। ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দেন Covid-19 এবং এ রোগটি বহনকারী ভাইরাসের নাম দেয়া হয় Sars-cov-2 । OnLine Class ১১ মার্চ ২০২০ সালে এটাকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে। চীনের উহান প্রদেশে সর্বপ্রথম শনাক্ত হলেও এর ভয়াবহ ছোবলে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ আজ স্থবির। ইতিমধ্যে বিশ্বের প্রায় ১৮ কোটি ১৮ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছে ৩৯ লক্ষ ৩৭ হাজারের অধিক মানুষ। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতায় অচল হয়ে পড়েছে অর্থনীতির চাকা। সেই সাথে বন্ধ হয়েছে বিশ্বের অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাদ পড়েনি আমাদের বাংলাদেশও। গত ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে বন্ধ রয়েছে আমাদের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মুখ থুবড়ে পড়েছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা। অসংখ্য ছাত্র আজ খাতা-কলম ছেড়ে বিভিন্ন কাজে জড়াচ্ছে। কেউ-বা মোবাইল গেম্সে, কেউবা কিশোর গ্যাংয়ে, কেউবা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। জাতির এ ক্লান্তিলগ্নে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন ক্লাস চালু করা হয়েছে। অনলাইন বা ভার্চুয়াল ক্লাসের সুবিধার পাশাপাশি অনেক অসুবিধাও রয়েছে। যা বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে উত্তরণ সম্ভব হচ্ছে না। প্রাণবন্ত, সুষ্ঠু সুন্দর ও সার্থক অনলাইন ক্লাসের জন্যে নীতিনির্ধারক, শিক্ষকম-লী, অভিভাবকবৃন্দ ও ছাত্রসমাজেরও অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। এতদ্বিষয়ে আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।

প্রথমেই অনলাইন বা ভার্চুয়াল ক্লাসের পরিচয় জানা যাক। OnLine Class-কে ব্যাপক অর্থে E-learning বলা হয়ে থাকে। E-learning হচ্ছে Electronic learning বা বৈদ্যুতিক শিক্ষাব্যবস্থা। অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র দ্বারা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন APPS-এর সাহায্যে দূরস্থান হতে যে শিক্ষা প্রদান বা গ্রহণ করা হয় তাকেই E-learning বলা হয়।

একইভাবে Zoom, Google Class Room, Facebook live, Edmodo ইত্যাদি APPS-এর মাধ্যমে নেটওয়ার্ক সংযোগ দিয়ে এন্ড্রোয়েড মোবাইল সেট, ট্যাবলেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদির সাহায্যে যে ক্লাস বা পরীক্ষা নেয়া হয় তাকে অনলাইন ক্লাস বলে। আবার নেটওয়ার্ক ছাড়া প্রজেক্টর, রেকর্ড বা কোনো সাউন্ডসিস্টেমের মাধ্যমে যে ক্লাস নেয়া হয় তাকে অফলাইন ক্লাস বলে।

অনলাইন ক্লাসের সুবিধাসমূহ : অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হয় না। নেটওয়ার্কর মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপস্ ব্যবহার করে মোবাইলের মাধ্যমেই ক্লাস করা যায়।

* অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে চাকরির পাশাপাশি কোর্স শেষ করে ডিগ্রি নেয়া যায়।

* এর মাধ্যমে অল্প সময়েই কোর্স শেষ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়।

* অনলাইন ক্লাসের অধিকাংশের রেকর্ড থাকে, তাই প্রয়োজনে একাধিক বার তা হৃদয়াঙ্গম করা যায়। যা দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্যে বিশেষ উপকার হয়।

* অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন, ফরম ফিলাপ এমনকি ফাইনাল ও ভাইভা পরীক্ষাও দেয়া যায়।

* অনলাইনে আলোচনা বোর্ড বা আড্ডার মাধ্যমে কঠিন বিষয়গুলো বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সমাধান করা যায়।

* এর মাধ্যমে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সহযোগিতার প্রয়োজনে একাধিক বার কোনো জটিল বিষয়ে আলোচনা করা যায়।

* ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি অ্যাপস্-এর মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠানের ক্লাস অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও দেখার সুযোগ পেয়ে থাকে।

অনলাইন ক্লাসের অসুবিধাসমূহ : অনলাইন ক্লাসে যেমনই সুবিধা আছে তেমনই বিভিন্ন কারণ ও সীমাবদ্ধতার জন্য কিছু অসুবিধাও আছে। ফলে অনলাইন ক্লাস শুরুর এক বছর পার হলেও কাক্সিক্ষত সফলতা আসছে না। নিম্নে এ বিষয়ে কিছু আলোচনা করা হলো : মেটেরিয়ালস্-এর স্বল্পতা। সার্থক অনলাইন ক্লাসের জন্যে কম্পিউটার ল্যাপটপ, ট্যাবলেট বা এন্ড্রোয়েড সেটের প্রয়োজন। যা দরিদ্র অনুন্নত গ্রামাঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থীর নিকট অকল্পনীয়। ফলে এসব অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানের শতকরা ৫-১০ জনও অনলাইন ক্লাস করতে পারে না।

* পর্যাপ্ত নেটওয়ার্কের অভাব-একটি সুন্দর সাবলীল ক্লাস তৈরির জন্য থ্রিজি, ফোর জি নেটওয়ার্ক বা ব্রন্ডব্যান্ড সুবিধার প্রয়োজন, যা দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল, হাওর অঞ্চল বা গ্রামাঞ্চলে আশা করা যায় না।

* প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের অসুবিধা : প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের জন্যে ল্যাবে প্রয়োজনীয় মেটেরিয়ালস্সহ নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত থাকতে হয়। যা অনলাইনে সম্ভব নয়।

* ক্লাস ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা : এমনিতেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিতে অভ্যস্ত, এর মধ্যে অনলাইন ক্লাসে বিভিন্ন অ্যাপ্স ব্যবহার করে মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের চক্ষু ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠে।

* ক্লাস তৈরিতে সমস্যা : ভার্চুয়াল ক্লাসের জন্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না থাকায় অনেক দক্ষ শিক্ষকও ক্যামেরা ভীতির কারণে সুন্দর অনলাইন ক্লাস তৈরি করতে পারে না বা প্রসিদ্ধ ক্যামেরাম্যান না থাকায় সুন্দর ভিডিও করতে পারে না। যা একটি সার্থক ক্লাসের অন্তরায়।

* প্রশ্নের সুযোগ না থাকা : অনলাইন ক্লাসের কিছু মৌলিক নিয়মে সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে তাৎক্ষণিক প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ থাকে না। তাছাড়া রেকর্ডকৃত ক্লাস বা ফেসবুক লাইভ ক্লাস বা সংসদ টিভির ক্লাসেও তাৎক্ষণিক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব হয় না।

* স্বাস্থ্যগত সমস্যা : প্রতিদিন দীর্ঘক্ষণ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের সামনে বসে থাকায় স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে। যেমন- চক্ষুর সমস্যা, মানসিক অস্বস্তি এমনকি হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

* অশ্লীল ভিডিও ও গেমস্ আসক্তি : যে সময়ে শিক্ষার্থীদের বই-খাতা নিয়ে ইউনিফর্ম পরিধান করে বিদ্যালয়ে থাকার কথা, সেই সময়ে তারা অভিভাবকের চক্ষু ফাঁকি দিয়ে অনলাইন ক্লাসের নামে বিভিন্ন ডিভাইস ও অ্যাপস ব্যবহার করে অশ্লীল ভিডিও ও গেমস্ আসক্তিতে মত্ত হচ্ছে। ফলে এদের অনেকেই মাদকাসক্তি ও কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে অপরাধ জগতে চলে যাচ্ছে। যা অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত।

শিক্ষকের করণীয় : একটি মডেল অনলাইন ক্লাস তৈরির ক্ষেত্রে একজন শিক্ষকের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান, উপস্থাপন দক্ষতা ও মার্জিত বাচনভঙ্গির ওপর সফলতা নির্ভর করে। যেমন- প্রয়োজন মত বোর্ড, মার্কার, ডাস্টার, স্টিক লাইট, কম্পিউটার, প্রজেক্টর সহ আকর্ষণীয় উপকরণ সাথে নিয়েই ক্লাস শুরু করতে হবে। রেকর্ডিং, লাইভ বা জুম ক্লাস শুরুর পর এসব উপকরণ খোঁজাখুঁজি ভাল ক্লাসের অন্তরায়। * শিক্ষককে অবশ্যই প্রাতিষ্ঠানিক ড্রেস থাকলে তা পরিধান করতে হবে। নিজেকে সুন্দর ও পরিপাটি রাখতে হবে। পরিধানের পোশাক, হাতের ঘড়ি, চোখের চশমা, কলম ও ডাস্টার সব কিছুই ঠিকঠাক করে ক্যামেরার সামনে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, ক্লাস শুরুর পর নিজেকে পরিপাটি করার সুযোগ নেই। * নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা সামনে উপস্থিত আছে। এমন ক্যামেরা ও নেট কানেক্শন করতে হবে যাতে ক্লাসের সমস্যা না হয়। * প্রয়োজনে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা রাখতে হবে। সুন্দর ভিডিও ধারণের জন্যে দক্ষ ক্যামেরাম্যান দরকার। বাইরের কোনো সাউন্ড যেন মিশ্রণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সক্ষমতা ও সুবিধামত Zoom, Google Class Room, Edmodo, Facebook Live ইত্যাদি এক বা একাধিক অ্যাপস ব্যবহার করা যেতে পারে। * সীমিত ভাবে শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মার্জিত কণ্ঠস্বর উত্তম বাচন ভঙ্গির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। কারো দুর্বল পয়েন্ট ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা অনুচিত।

* সম্বোধন করার সময় স্নেহোভরে প্রিয় শিক্ষার্থী বলাই উত্তম। ছাত্ররা, ছাত্রীরা, মেয়েরা, ছেলেরা বলে কথা বলা ভদ্রতার খেলাপ।

* বোর্ডে তারিখ, শিক্ষকের নাম, পদবী, শ্রেণি, বিষয়, অধ্যায় আলোচ্যসূচি এবং শিখনফল স্পষ্ট অক্ষরে লেখতে হবে। বোর্ডে বা স্লাইডে স্পষ্ট ও সুন্দর ভাবে লিখতে হবে।

* এক সংগে অনেক পয়েন্ট না লিখে একটির আলোচনা শেষ করে অন্য পয়েন্ট লেখা উচিত। এতে শিক্ষার্থীরা সহজে বোধগম্য করতে পারবে।

* শিক্ষককে অবশ্যই প্রাণবন্ত হাসিখুশি এবং উদ্যমী থাকতে হবে। আলোচিত পাঠে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন এবং উত্তর নিজে নিজেই দিতে হবে।

* শিক্ষকদের দৃষ্টি প্রয়োজন অনুসারে বোর্ডের দিকে এবং বাকি সময় শিক্ষার্থীদের উপস্থিত মনে করে ক্যামেরার দিকে রাখতে হবে।

* ক্লাস শেষ পর্যায়ে শিখনফল একাধিক বার বলা ও লিখা দরকার। এতে শিক্ষার্থীরা সহজেই তা আয়ত্ত করতে পারবে।

* রেকর্ডিং শেষে আপলোড দেয়ার আগে নিজের ক্লাস নিজেই একাধিকবার শোনা প্রয়োজন। কোনো ভুল ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করে আপলোড দিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের করণীয় : শিক্ষাব্যবস্থার সকল আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দুই হচ্ছে ছাত্র সমাজ। একটি সার্থক ও অর্থবহ অনলাইন ক্লাসে শিক্ষকের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে।

* অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার সময় শিক্ষার্থীকে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরিধান করতে হবে। বই পুস্তক, খাতা-কলম নিয়ে ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে হবে। এতে শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থার উন্নতি হবে এবং পড়া শোনায় আগ্রহ তৈরি হবে।

* শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট পড়ার টেবিলে বসেই ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে হবে। ক্লাসের সময় ব্যবহৃত মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যতিরেকে সকল প্রকার ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বন্ধ রাখতে হবে।

* পাঠদানরত শিক্ষককে যথাযথ সম্মান করতে হবে। শিক্ষকের প্রতিটি শব্দই গুরুত্বের সাথে হৃদয়ঙ্গম করতে হবে। প্রয়োজনে নোট করে রাখতে হবে।

অভিভাবকদের করণীয় : আদর্শ ও চরিত্রবান ছাত্র গঠনে শিক্ষকের পাশাপাশি অভিভাবকের ভূমিকাও অনেক। যেমন- অনলাইন ক্লাস নিয়মিত করছে কি না তা প্রত্যেক পিতা-মাতাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

* ক্লাস শেষে শিক্ষক কী কী পড়ালেন তার খোঁজ নেয়া অভিভাবকের দায়িত্ব।

* ক্লাস শেষ হলেই গেমস্ খেলতে পারে বা অশ্লীল ভিডিও দেখতে পারে এমন ডিভাইস সন্তানের নিকট থেকে নিজ দায়িত্বে নিতে হবে।

* বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে কড়া নজর দিতে হবে। কারণ অসৎ মাদকাসক্ত এবং গেমস্ প্রিয় বন্ধু ভাল মেধাবী ছাত্রের অন্তরায়।

* অনলাইন ক্লাসের উপযোগী সকল উপকরণ যথাসাধ্য সংগ্রহ করে দিতে হবে। যাতে ক্লাসে ব্যাঘাত না ঘটে।

* পড়াশোনার পাশাপাশি সন্তানের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা আদর্শ অভিভাবকের দায়িত্ব।

সরকারের প্রতি আহ্বান : অনলাইন ক্লাসে শতভাগ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের E-learning বা অনলাইন ক্লাস বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নীতিনির্ধারক মহলকে সময়োপযোগী কিছু মৌলিক পদক্ষেপ গ্রহণ একান্ত জরুরি। যেমন- পার্বতাঞ্চল, হাওড়াঞ্চল ও সকল গ্রামাঞ্চল সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং শিক্ষার্থীদেরকে বিনামূল্যে অনলাইন ক্লাস উপযোগী উপকরণ সরবরাহ করতে হবে।

* অনলাইন ক্লাস চলাকালে নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ ও থ্রিজি, ফোরজি নেটওয়ার্ক বা ব্রন্ডব্যান্ড সুবিধা প্রদান করতে হবে।

* আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত ক্লাস উপস্থাপনের জন্য প্রত্যেক শিক্ষকের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

* অনলাইন ক্লাসের গুরুত্ব এবং শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবকদের করণীয় উপলক্ষ্যে সকল প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো প্রয়োজন। অনলাইন তথা ফেসবুক, ইন্টারনেট, গুগুল-এর সকল অশ্লীল ভিডিও, ছবি, নাটক ও গেম্সের পেইজ বন্ধ করতে হবে। যাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পরিবর্তে অশ্লীলতা ও গেমস্ েমগ্ন না থাকে।

পরিশেষে বলা যায়, বৈশ্বিক এ মহামারিতে থমকে না দাঁড়িয়ে উন্নয়নের সকল কাজের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষাব্যবস্থার অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল ও বেগবান করার লক্ষ্যে সুন্দর প্রাণবন্ত ও আন্তর্জাতিক মানের E-learning বা Online Class-এর জন্য নীতিনির্ধারক, শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রসহ সকলকেই আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের দেশ, জাতি ও শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছার তাওফিক দান করুন। আমিন

লেখক : কলামিস্ট ও প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, নরিল্যা মহাবিদ্যালয়, ধনবাড়ী, টাংগাইল।

ঊ-সধরষ : [email protected]

মোবাইল ফোন : ০১৯২৫০৩২৪০৩

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়