প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোঃ আঃ সামাদ টুনু বলেছেন, দলের দুঃসময় থেকে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে দলের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিত ছিলাম, যে কারণে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে আমি চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছি। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে আমার সকল কিছু বিবেচনা করে আমাকে উক্ত পদে নির্বাচিত করার অনুরোধ করছি।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে ভাবনায় তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। প্রশ্নোত্তর আকারে তার পূর্ণাঙ্গ ভাবনাটি নিচে তুলে ধরা হলো :
চাঁদপুর কণ্ঠ : আগামী ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং তার পূর্বে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের সম্মেলন। আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
মোঃ আঃ সামাদ টুনু : সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আরো পূর্বে এই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো। নানা প্রতিকূলতার কারণে হয়তো সম্ভব হয়নি। তবুও দেরিতে হলেও সম্মেলন হচ্ছে বা হবে। এজন্যে আগাম সফলতা কামনা করছি। আপনারা নিশ্চয়ই দেখছেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পুরো উপজেলা জুড়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে একটি উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এখানে একটি বিষয় হচ্ছে চিরন্তন সত্য অর্থাৎ রাজনৈতিক সংগঠনের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন-আমি এমন প্রত্যাশা করছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি সম্মেলনের মাধ্যমে কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন?
মোঃ আঃ সামাদ টুনু : রাজনৈতিক সংগঠনে কেউ উড়ে আসলেই তাকে নেতৃত্ব দেয়া হয় না। সকল কিছু বিবেচনা করে নেতৃত্ব দেয়া হয়। আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হলো দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন। যে সংগঠনের নেতৃত্বে আদায় হয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা ও আমাদের স্বাধীনতা। তাই আমি মনে করি, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আগামী নেতৃত্ব দেয়ার জন্যে অবশ্যই রাজনৈতিক গুণাবলি সম্পন্ন ব্যক্তি, যার মধ্যে বিশেষ করে তৃণমূলের কর্মীবান্ধব গুণাবলি রয়েছে এমন নেতাদের নির্বাচিত করবেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি নিজে কি কোনো পদে প্রার্থী?
মোঃ আঃ সামাদ টুনু : ছোটবেলা থেকেই অর্থাৎ আওয়ামী লীগের দুঃসময় থেকে রাজনীতি করে আসছি। ত্যাগ তিতিক্ষা, হামলা-মামলা, নির্যাতনের শিকার হয়ে এ দলের রাজনীতি থেকে এক বিন্দুও পিছপা হয়নি। তাই দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের একজন কর্মী হিসেবে সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছে আমার রয়েছে। আমি জানি না, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতকে কতটুকু গুরুত্ব দেয়া হবে।
তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চাচ্ছে, আমি আসন্ন চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হই। তাদের অনুরোধের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিসহ আরো কিছু কারণে বিএনপির যে ধারাবাহিক আন্দোলন, তাতে আপনারা কতোটুকু উদ্বিগ্ন?
মোঃ আঃ সামাদ টুনু : যে দলের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এসেছে, যে রাজনৈতিক সংগঠনের প্রধান ও সভানেত্রী অর্থাৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তলাবিহীন রাষ্ট্র উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলছে, যে কারণে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে বলা হয় রোল মডেল রাষ্ট্র, যে রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সেই রাজনৈতিক দলের একজন কর্মী হিসেবে বিএনপির এই আন্দোলন নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন নই। কারণ তাদের সাথে এদেশের জনগণ নেই। দেশের জনগণ মনে করে, এগুলো বৈশ্বিক সমস্যা। অতএব বিএনপির এই আন্দোলন কখনোই সফল হবে না। আমরাও এগুলো নিয়ে চিন্তা করছি না।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এ আন্দোলন সাংগঠনিকভাবে কিংবা অন্য কী উপায়ে মোকাবেলা করা যায় বলে আপনি মনে করেন?
মোঃ আঃ সামাদ টুনু : বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে রাজপথে নৈরাজ্য, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ও আগুন সন্ত্রাস করছে, যেহেতু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের গণমানুষের রাজনৈতিক দল, সেহেতু খুব শীঘ্রই আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নেমে বিএনপির এই আন্দোলনের মোকাবেলা করবো। ইনশাআল্লাহ।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি কি এমন মানসিক আস্থা পোষণ করেন যে, বিদ্যমান সমস্যা বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক সঙ্কট, সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দা তথা নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ জনপ্রিয়তার প্রমাণ করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে পারবে?
মোঃ আঃ সামাদ টুনু : আমি পূর্বেই বলেছি, আধুনিকতার এ যুগে দেশের প্রতিটি নাগরিক সজাগ ও সচেতন। আমার ব্যক্তিগত মতামত, দেশের জনগণ ভুল করবে না, ইনশাআল্লাহ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আবারো আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিবে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার অন্য কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করতে পারেন।
মোঃ আঃ সামাদ টুনু : আরো পূর্বে এই সম্মেলন হলে এতোদিন আরো নেতৃত্ব বেরিয়ে আসতো। দলের দুঃসময় থেকে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে দলের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিত ছিলাম, যে কারণে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে আমি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছি। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে আমার সকল কিছু বিবেচনা করে আমাকে উক্ত পদে নির্বাচিত করার অনুরোধ করছি।
উল্লেখ্য, আঃ সামাদ টুনু ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে তরপুরচণ্ডী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৩ সালে তরপুরচণ্ডী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, ১৯৯৭ সালে তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৯ সালে চাঁদপুর জেলা কৃষক লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বর্তমানে চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া আঃ সামাদ টুনু বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন দুর্যোগে বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আসন্ন চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন।