প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
হাজীগঞ্জে অর্ধেকের বেশি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইতোমধ্যে গতায়ু হয়েছেন। হয়তো আর এক দশক পর জীবিত কোনো মুক্তিযোদ্ধা খুঁজতে গিয়ে সারাদেশে খুঁজতে হবে। হয়তো এর পর কেউ আর জীবিত মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাবে না। তখন মুক্তিযুদ্ধের গল্প জানতে হলে পাঠ্য বইয়ের দ¦ারস্থ হতে হবে পরবর্তী প্রজন্মকে। মুক্তিযোদ্ধাগণকে সম্মান দিতে সরকার ইতোমধ্যে নানাবিধ উদ্যোগ নিয়েছে।
সম্প্রতি যাচাই বাছাই শেষে প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার মোট মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৬১৩ জন। ইতোমধ্যে ইন্তেকাল করেছেন ৩২১ জন মুক্তিযোদ্ধা। এই সংখ্যা হিসেবে অর্ধেকের বেশি মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন। যেভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ মারা যাচ্ছেন সেটা চলতে থাকলে হয়তো আগামী এক দশকে আর কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাওয়া যাবে না। সে সময় জীবিত কোনো মুক্তিযোদ্ধা থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প কোনো শিক্ষার্থী শুনতে পাবে না। মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব গল্প তখন পাঠ্য বইয়ের পাতায় চলে যাবে।
জানা যায়, জীবিত কিংবা মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওয়ারিশদেরকে মাসিক ভাতা সম্মানজনকভাবে দেয়া হচ্ছে। একই সাথে উৎসব ভাতা দেয়া হচ্ছে। মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা সেবা, থানা কমপ্লেক্সে ওসির রুমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বসার চেয়ার সংরক্ষিত রাখা, স্বাধীনতা দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারকে সংবর্ধনা দেয়াসহ নানা সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
হাজীগঞ্জ উপেজলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি পূরণে হাজীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের কবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এমএ তাহের জানান, ইতোমধ্যে যে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা দুনিয়া ছেড়ে পরপারে চলে গেছেন এমন সংখ্যা এখন ৩২১ জন। দিন দিন এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে হয়তো আমি কিংবা আমার সহযোদ্ধা ভাইয়েরা বয়সের কারণে বেশি দিন বাঁচবো না।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। মৃত বীরগণের কবর সংরক্ষণের জন্যে তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে।