প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
সাবেক ছাত্রনেতা, চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ মোঃ মিজানুর রহমান বলেছেন, জনগণ এখন এই সরকারের বিদায় ঘন্টা দেখতে চায়। এই বিদায় ঘন্টা বাজাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। এজন্যে দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান থাকবে, সকল ভেদাভেদ ভুলে আসুন আমরা সকলে এই সরকারের বিদায় ঘন্টা বাজিয়ে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করি। এই হোক আমাদের শপথ।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। তার পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার নি¤েœ তুলে ধরা হলো-
চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছে কবে?
অ্যাডঃ মোঃ মিজানুর রহমান : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, আগামীর রাষ্ট্রনায়ক জনাব তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রশাসনিক বাধার কারণে শহরে স্থান না পাওয়ায় শহরতলীর নানুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ২০২২ সালের ২ এপ্রিল বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : এ সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে কবে নাগাদ?
অ্যাডঃ মোঃ মিজানুর রহমান : আমার জানামতে, কেন্দ্রীয় কমিটির লিখিত নির্দেশ মোতাবেক নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সম্মানিত সদস্যগণ ও সম্মেলনের প্রতিদ্বন্দ্বী সকল প্রার্থীর সাথে যোগাযোগ ও আলোচনা করে সম্মেলনের পর পরই জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ একটি প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট জমা দিয়েছেন। আশা করছি খুব শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন দিবেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনারা নানা ইস্যুতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবেন না বলে কার্যত সরকার পতনের আন্দোলনই করছেন। আন্দোলনের সাফল্যের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী?
অ্যাডঃ মোঃ মিজানুর রহমান : আন্দোলনে সফলতার বিষয়ে আমরা ইনশাআল্লাহ শতভাগ আশাবাদী। কারণ ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন আমাদের নেতা আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপির সমাবেশে জনগণের ব্যাপক উপস্থিতি ঘটছে। যেটা প্রমাণ করে এই সরকারের দিন শেষ। এই সরকার সমাবেশের ৩দিন পূর্ব থেকেই নিজেরা পরিবহন ধর্মঘট ডাকছে, পুলিশ বাহিনী দিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের নানা হয়রানি করছে। এতো প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও আমাদের নেতা-কর্মীরা কখনো নদী সাঁতরে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ও বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে ৩ দিন পূর্ব থেকে সমাবেশ স্থলে অবস্থান করে। এতেই প্রমাণ হয় সরকারের শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে মহাসমাবেশ সফল হচ্ছে, জনসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হচ্ছে।
তাই এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সাথে যে সকল রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করবে, তারাসহ আমরা এই সরকারের বিদায় ঘন্টা বাজিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবো। ইনশাআল্লাহ আমাদের জয় সুনিশ্চিত।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের পর এ সরকারের পতন কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র ইনশাআল্লাহ।
চাঁদপুর কণ্ঠ : জেলা বিএনপির মধ্যে কোনো গ্রুপিং আছে বলে মনে করেন? উপজেলা পর্যায়ে কী অবস্থা? সারাদেশের সর্বত্র গ্রুপিং না মিটিয়ে আপনাদের আন্দোলনের সাফল্য কি পুরোপুরি আদায় করতে পারেন?
অ্যাডঃ মোঃ মিজানুর রহমান : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। এটি একটি রাজনৈতিক সমুদ্র বললেই চলে। এ দলে একই পদে নেতৃত্ব দেয়ার মত অনেক নেতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নেতৃত্বের জন্য লবিং-গ্রুপিং থাকতে পারে-এটা স্বাভাবিক। তবে দলের আদর্শ বা কর্মসূচি বাস্তবায়নে কোনো গ্রুপিং নেই। উপজেলা পর্যায়েও এমন গ্রুপিং নেই। দলের ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ পরীক্ষিত নেতৃবৃন্দের হাতেই দলের দায়িত্ব রয়েছে। আর সকল বিষয়ে দলের মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খোঁজ-খবর রাখেন বলে কোথাও তেমন কোনো গ্রুপিং আমরা দেখছি না।
আমি কোনো গ্রুপিংয়ে বিশ্বাস করি না, আমরা চাঁদপুর জেলা বিএনপির দুর্দিনের কাণ্ডারী জেলা বিএনপির নির্বাচিত সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ সলিম উল্যাহ সেলিমের নেতৃত্বে এক ও ঐক্যবদ্ধ। মানিক ভাই রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন, আমরা আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় আছি এবং থাকবো।
এ সরকার মামলা, হামলা, গুম, হত্যার মাধ্যমে বিরোধী দল দমন করে একতরফা নির্বাচন ও দিনের ভোট রাতে করে একদলীয় শাসন কায়েম করতে চাচ্ছে। জনগণ এখন মুক্তি চায়। আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হাত ধরেই বাংলার মানুষ সে মুক্তি প্রত্যাশা করে।
চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্নমালার বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে উপস্থাপন করুন।
অ্যাডঃ মোঃ মিজানুর রহমান : আমরা শুধু দেখছি, জনগণ এখন এই সরকারের বিদায় ঘন্টা দেখতে চায়। এই বিদায় ঘন্টা বাজাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। এজন্যে দলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান থাকবে, সকল ভেদাভেদ ভুলে আসুন আমরা সকলে এই সরকারের বিদায় ঘন্টা বাজিয়ে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করি। এই হোক আমাদের শপথ।
উল্লেখ্য, অ্যাডঃ মিজানুর রহমান ১৯৭৮-৭৯ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াবস্থায় ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ওই সময়ে তিনি জাসদ ছাত্রলীগের শাহজাহান-রাজ্জাক পরিষদের প্যানেলে সমাজসেবা সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবস্থায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর সাধারণ জনগণের কাছে তাঁর সুনামের কথা শুনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাসদ ছাত্রলীগ, মুজিববাদী ছাত্রলীগ, বিপ্লবী ছাত্রলীগের অনেকে মিলে বর্তমান বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে যোগদান করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে চাঁদপুরে এসে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি চাঁদপুর জেলা বিএনপির টানা ১৫ বছর দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে ইঞ্জিঃ মমিনুল হক ও শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের নেতৃত্বাধীন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যতদিন বেঁচে থাকবেন বিএনপির রাজনীতি করবেন বলে জানান।