প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
সারাদেশের মতো চাঁদপুরে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। প্রতিদিন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। বর্তমানে আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ রোগে আক্রান্ত ৩ জন ভর্তি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে এ তথ্য জানা যায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চলতি নভেম্বর মাসের গত ৯ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ২৮ জন, নারী ১২ জন ও শিশু রোগী ৩ জন। এর মধ্যে ১ নভেম্বর সর্বোচ্চ ৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন, যাদের সবাই পুরুষ। জানা গেছে, অনেক রোগী চাঁদপুরের বাইরে থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার মনোহরখাদী থেকে আসা আলআমিন বলেন, প্রথমে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। পরে পুরো শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা ও দুর্বলতা অনুভব করেন। চিকিৎসক স্বাস্থ্যগত যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডেঙ্গু শনাক্ত করেন।
আলআমিন জানান, তিনি ঢাকা থাকাবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। পরে বাড়ি এসে গত তিনদিন আগে তিনি আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে যাবতীয় চিকিৎসাসেবা পেয়ে বর্তমানে তিনি সুস্থতা অনুভব করছেন। তবে চিকিৎসকদের কাছ থেকে আরো বেশি আন্তরিকতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার (মেডিসিন) ডাঃ পিযুষ সাহা বলেন, আমরা আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে সেবা দিয়ে রোগীদের দ্রুত সুস্থ করে তুলতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। রোগীদের যথাযথ সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহাবুবুর রহমান বলেন, সারাদেশের মতো চাঁদপুরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। প্রতিদিন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির আগে আমরা হাসপাতালে এ বিষয়ে সেমিনার করেছি। আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। জ্বর, কালো পায়খানা হওয়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, পেট ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শরীরে র্যাশ ওঠাসহ ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। হাসপাতালে ভর্তির ব্যাপারে চিকিৎসকই সিদ্ধান্ত নিবেন। কারণ বাড়িতেও ডেঙ্গুর চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়। ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্যে আমরা প্রস্তুত আছি। হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়। ডেঙ্গু (এনএস-১ এন্টিজেন) পরীক্ষার ফি একশ টাকা। যা বেসরকারি প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকের জন্যে ৩শ’ টাকা ফি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্ধারণ করে দিয়েছে। এছাড়া আমাদের হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার আছে। চিকিৎসাসেবার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ সাহাদাৎ হোসেন বলেন, এখনও চাঁদপুরের অবস্থা ভালো। জেলার হাসপাতালগুলোর মতো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।