মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

ইলিশ কি সাধারণের নাগালের বাইরেই থাকবে?
অনলাইন ডেস্ক

‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ শীর্ষক ব্র্যান্ডিং বুক থেকে জানা যায়, মাছের শরীরে তেলের প্রাচুর্য ও আহরণের স্থানের ওপর নির্ভর করে ইলিশের স্বাদ ও গন্ধ। ইলিশে উচ্চ মানের আমিষ, চর্বি ও খনিজ উপাদান (জিংক ও সেলেনিয়াম) পাওয়া যায়। এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই বিদ্যমান। ইলিশের চর্বিতে প্রায় ৫০% অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড থাকে, যার প্রায় শতকরা ২ ভাগ ও মেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এ ফ্যাটি এসিড রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। উপরন্তু ইলিশের আমিষে ১০ ধরনের এমাইনো এসিড পাওয়া যায়, যা মানব দেহে উৎপন্ন হয় না। এতে আরজিনিন আছে, যা বিষণ্নতা কমায়। বিদ্যমান জিংক ডায়াবেটিক রোগীর জন্য উপকারী। মাছের চর্বির অনন্যতার কারণে চাঁদপুরের ইলিশ অত্যন্ত সুস্বাদু।

ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। এ মাছ স্বাদে-গন্ধে অনন্য হওয়ায় এটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সীমান্তের ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও উড়িষ্যাসহ বিশে^র বিভিন্ন স্থানে। তবে চাঁদপুরের ইলিশের খ্যাতি আকাশচুম্বী। বাংলাদেশে ইলিশের অন্যতম প্রধান অবতরণ কেন্দ্র চাঁদপুরে হওয়ায় এখানে ক্রেতাদের চাপ থাকে অস্বাভাবিক। সেজন্যে দামও থাকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। উপর্যুপরি দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়ায় এ দাম হয়ে যায় অনিয়ন্ত্রিত এবং ক্রেতাদের চাপে চাঁদপুরের ইলিশ অবতরণ কেন্দ্র হয় ভারাক্রান্ত। সেখানে মানুষ খেয়েছে যেন মানুষের মাথা।

আজ থেকে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের জন্যে ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধ থাকবে বলে ক্রেতারা ইলিশ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বলে ধারণা করা যায়। এমতাবস্থায় মৎস্য ব্যবসায়ীরা বড় সাইজের প্রতি কেজি ইলিশ ১৪শ’ থেকে ১৬শ’ টাকায় বিক্রি করেছে বলে গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম থেকেই সেটি জানা যায়। আর সংবাদের ভেতরে ঢুকে জানা যায়, আধা কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মোদ্দা কথা, ইলিশের দামে আগুন থাকায় সাধারণ মানুষ সেটি কিনতে পারেনি, সেজন্যে ক্ষোভের অনলে তাদের মন পুড়েছে।

জাটকা ইলিশ রক্ষায় প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিল দু মাস নদীতে চলে অভয়াশ্রম এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চলে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান। এ বছর চলতি অক্টোবর মাসের ৪ তারিখ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই অভিযান। এই অভয়াশ্রম ও অভিযান সফল করতে সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয় কঠোর পদক্ষেপ। কিন্তু এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে রুখে দাঁড়ায় অসাধু জেলেসহ অনেক অপরিণামদর্শী মানুষ। সেজন্যে ইলিশের আশানুরূপ উৎপাদন ব্যাহত হয়। যার ফলে ইলিশের সঙ্কট দূর হয়ে প্রাচুর্য আসে না। আর সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যেও দাম আসে না। জাতীয় মাছ হওয়ার পরও ইলিশ কিনতে না পারার কষ্ট যে ৯০ শতাংশ মানুষের-সেটা বললে অত্যুক্তি হবে না। সেজন্যে নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরা বন্ধের বিষয়টিকে ব্যাপক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে এবং সেটি করলে ইলিশের প্রাচুর্য নিশ্চিত হবে, আর তখনই কম মূল্যে সাধারণ মানুষ ইলিশ কিনতে পারবে। অন্যথায় ইলিশ কেবল অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁয় ঠাঁই পাবে, আর কেবল ধনাঢ্য শ্রেণীর বিলাসী পণ্যে পরিণত হবে বলে আমরা মনে করি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়