রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

সুপারি বাগান কাটার শাস্তি হোক দৃষ্টান্তমূলক

সুপারি বাগান কাটার শাস্তি হোক দৃষ্টান্তমূলক
অনলাইন ডেস্ক

কলা, পেঁপে, আমসহ আরো কিছু গাছে দ্রুত ফল আসে। কিন্তু নারিকেল, সুপারি, তাল ইত্যাদি গাছ থেকে ফল পেতে কমপক্ষে ৫-১০ বছর তো বটেই, এর চেয়ে বেশি সময়ও অপেক্ষা করতে হয়। এমন বাস্তবতায় যদি শোনা যায়, নিতান্তই সম্পত্তিগত বিরোধে কোথাও ২-৪টি সুপারি গাছ নয়, সুপারি বাগানই কেটে ফেলা হয়েছে, তাহলে শ্রোতামাত্রকেই থমকে দাঁড়াতে হয়। এমন একটি ঘটনাই ঘটেছে ফরিদগঞ্জ উপজেলায়, যেটা নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে একটি সংবাদ।

‘ফরিদগঞ্জে সুপারি বাগান কেটে ফেলার অভিযোগ’ শিরোনামের সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সুপারি বাগান কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। ১০ নভেম্বর ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের লড়াইচর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এই নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ সময় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে থানায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে থানায় ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। জানা গেছে, চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের বিরামপুর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান লড়াইচর গ্রামের মৃত আনা মিয়া বেপারীর ছেলে লেদু মিয়া থেকে সুপারি বাগানসহ কিছু জমি ক্রয় করেন। সম্প্রতি ক্রয়কৃত জমি রক্ষণাবেক্ষণ করতে গেলে ক্রয়কৃত জমি নিজেদের দাবি করে মৃত আনা মিয়া বেপারীর অন্য ছেলে ছফি উল্যা (সাবু) বেপারী ও তার ছেলে-মেয়েরা বাধা প্রদান করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে থানা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে সালিস হয়। সর্বশেষ ১০ নভেম্বর ছফি উল্যা (সাবু) বেপারী ও তার ছেলে আলমগীর বেপারী সকালে মিজানুর রহমানের ক্রয়কৃত সুপারি বাগানের বিপুল সংখ্যক সুপারি গাছ গোপনে বিক্রি করে কাটা শুরু করেন। এ নিয়ে মিজানুর রহমান ও তার লোকজন বাধা দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। ৯৯৯ নম্বরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। মিজানুর রহমান জানান, আমি ক্রয় সূত্রে মালিক হওয়ার পর আমার নামে খারিজও হয়েছে। তারা নিজেদের জমি আছে দাবি করলেও কোনো কাগজপত্র দেখাচ্ছে না। উল্টো নানাভাবে হয়রানি করে। তারা আমার সুপারি বাগান থেকে বিপুল পরিমাণ সুপারি গাছ গোপনে বিক্রি করে সর্বশেষ শুক্রবার সকালে তা কেটে ফেলার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিতে দিতে প্রায় অর্ধশত সুপারি গাছ কেটে ফেলে। বাধ্য হয়ে আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে থানার আশ্রয় নেই। তাছাড়া আমি ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত অংশ তথা বসতবাড়ির অংশ বুঝে নিতে চাইলেও তারা টালবাহানা করছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত আলমগীর বেপারী জানান, তারা ওয়ারিশ সূত্রে মালিক। কিন্তু মিজানুর রহমান জমি কেনার কথা বলে নানাভাবে দখল করতে চেষ্টা করছে। এ সময় তিনি সুপারি বাগান থেকে গাছ কাটার কথা স্বীকার করেন। ফরিদগঞ্জ থানার এসআই শরিফুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন কলের ভিত্তিতে চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের লড়াইচর গ্রামে গিয়ে পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। এ সময় বেশ কিছু সুপারি গাছ কেটে রাখা অবস্থায় দেখতে পাই। আমি জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আলমগীরসহ ৩জনকে থানায় নিয়ে এসেছি।

অভিযুক্ত ব্যক্তি যখন গাছ কাটার কথা স্বীকার করেই ফেলেছে, অতএব ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের উচিত বাদী মিজানুর রহমানের মামলার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করে আদালতে বিচারের জন্যে দাখিল করা। কথা হলো, পুকুর-দিঘিসহ ছোটখাট জলাশয়ে মৎস্য নিধন করে লক্ষ-কোটি টাকার মাছ কেউ নিধন করলেও এবং নানা কারণে অবৈধ ও অযৌক্তিকভাবে কেউ গাছ নিধন করলেও এতদ্সংক্রান্ত মামলার অগ্রগতি হয় না বললেই চলে, যার ফলে মাছ-গাছ নিধন বন্ধ হয় না। এমন নিধনযজ্ঞের হোতারা পার পেয়ে যায়, যেটি সমাজে সঞ্চারিত হয় নেতিবাচকভাবে। আমরা মাছ-গাছ নিধনরোধে ব্যবস্থাগ্রহণের ব্যাপারে পুলিশকে আন্তরিক, কঠোর ও নিরাপোষ ভূমিকা পালনে জোর অনুরোধ জানাতে চাই। পুলিশের এমন ভূমিকায় বিচারিক আদালত থেকে নিশ্চয়ই আসবে এমন রায়, যা সমাজের জন্যে হয়ে যাবে দৃষ্টান্তমূলক। আমরা সেদিনের অপেক্ষায় থাকলাম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়