প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ডাঃ দীপু মনির স্মরণীয় জয়

কোনো নির্বাচনে নয়, ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি স্মরণীয় জয় পেয়েছেন চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর-হাইমচর) নির্বাচনী এলাকার তিনবারের এমপি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। দেশের একটি বহুল প্রচারিত দৈনিককে ষড়যন্ত্রের কাজে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, ষড়যন্ত্রকারীরা তার নিকৃষ্ট নমুনা প্রদর্শন করেও সফল হলো না। অবশেষে গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) একনেকে ১৩৭০ কোটি টাকার চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ প্রকল্প অনুমোদন পেলো। সেজন্যে চাঁদপুরে হয়েছে আনন্দ মিছিল, অনেকে আদায় করেছেন আল্লাহর শোকরিয়া।
গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান। তাঁরা জানান, চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পসহ প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন আজকের একনেক সভায় দেয়া হয়েছে। এতে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জানান, চাঁদপুর শহর ও এর আশপাশের ৩০ দশমিক ১২ একর এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এজন্যে প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ, ১০টি আবাসিক ভবন তৈরি, ১১টি অনাবাসিক ভবন, লিফট, ১২ হাজার ৯২৭টি মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং তিনটি মোটর গাড়ি কেনা হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
এদিকে চাঁদপুরে এই মেডিকেল কলেজটি যেনো না হয় তার জন্যে একটি মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছিল। সেই কুচক্রী মহলটি ক্ষমতাসীন দলের জনবিচ্ছিন্ন একটি অংশ। সম্প্রতি তারা বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা কল্পকাহিনি তুলে ধরে সংবাদ পর্যন্ত ছাপিয়েছে মেডিকেল কলেজের জন্যে প্রস্তাবিত জায়গার বিরুদ্ধে। কিন্তু সকল ষড়যন্ত্রকে পদদলিত করে অবশেষে একনেক সভায় অনুমোদন পেলো চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ প্রকল্প। এতে চাঁদপুরে আনন্দের বন্যা বইছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় চাঁদপুরে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আপনাদের এমপি যেহেতু একজন ডাক্তার, তাই তার সৌজন্যে তো এখানে একটি মেডিকেল কলেজ হতেই হয়। সে বছরই চাঁদপুর মেডিকেল কলেজটি সরকারি অনুমোদন পায়। ২০১৯ সাল থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে অস্থায়ীভাবে ক্যাম্পাসসহ একাডেমিক কার্যক্রম চালাচ্ছে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ। অবশেষে প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছর পর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সি কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস পেতে যাচ্ছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, চাঁদপুরে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস হোক--এটার বিরুদ্ধে শাসক দল আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ দলগুলো প্রকাশ্য কোনো বিরোধিতা, বিবৃতি প্রদান ও মিছিল-সমাবেশ করেনি। কিন্তু ঘরের শত্রু বিভীষণ হিসেবে আওয়ামী লীগে থাকা একটি ঈর্ষাপরায়ণ ও পরশ্রীকাতর চক্র নিকট অতীতে স্থানীয় প্রশাসনের কাউকে কাউকে ব্যবহার করে, সরকারি স্থাপনায় নির্দিষ্ট ক'টি গণমাধ্যমের লোকজনকে দাওয়াত দিয়ে এনে ভালো খাইয়ে ও উপঢৌকন দিয়ে ষড়যন্ত্রের ষোলআনা বাস্তবায়নে যা করেছে এবং পরবর্তীতে সরকারের বিভিন্ন মহলে প্রকাশ্য-গোপনে নানা তদবির করেছে, সেসব ছাপিয়ে ১৩৭০ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হওয়া নিঃসন্দেহে চাঁদপুরের উন্নয়ন প্রশ্নে ডাঃ দীপু মনির ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় বিজয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অশেষ স্নেহধন্য ও বিশ্বাসভাজন বলেই যে এমন বিজয় সম্ভব হয়েছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের বিশ্বাস, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্পও প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় একনেকে অনুমোদন পেয়ে ডাঃ দীপু মনির আরেকটি বিজয় অচিরেই অর্জিত হবে।