প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
বিতর্ক প্রশিক্ষণে যখন আশাব্যঞ্জক সাড়া

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ কোনো কর্পোরেট সংস্থা নয়। প্রতিষ্ঠার ৩০ বছরে এটি এখনও সম্পূর্ণ লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারেনি। তবে অস্তিত্বের লড়াইয়ে সম্মানজনকভাবে টিকে আছে। কর্পোরেট সংস্থা না হয়েও ১৯৯৯ সাল থেকে চাঁদপুর কণ্ঠ কর্পোরেট সোস্যাল রেসপন্সিবিলিটি তথা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নানা কাজ করে আসছে। এই কাজসমূহের মধ্যে টেকসই হয়েছে যে কাজটি, সেটি হচ্ছে বিতর্ক বিষয়ক কার্যক্রম।
২০০৯ সাল থেকে চাঁদপুর কণ্ঠ শুধু শহরে নয়, চাঁদপুর জেলায় বিতর্ক বিষয়ক আন্দোলন সৃষ্টিতে প্রশিক্ষণ, উৎসব, প্রতিযোগিতা ইত্যাদি আয়োজন করে চলছে। দেশখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের উপকরণগত সহায়তা নিয়ে ২০০৯ থেকে একটানা ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১১বছর আয়োজন করে পাঞ্জেরী-চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। ২০২০ সালে এ প্রতিযোগিতার যুগপূর্তির সামগ্রিক আয়োজন সম্পন্ন করার পরও করোনা মহামারীর কারণে শুরু করা যায়নি। অনিশ্চয়তার তিমিরে চলে গিয়েছিল এই আয়োজন।
স্থানীয় বিতর্কপ্রেমী, বিতর্ক সংগঠক, বিতার্কিক ও তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের, সর্বোপরি পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের কর্ণধার চাঁদপুরের কৃতী সন্তান কামরুল হাসান শায়কের তাগিদে এই প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছরের ৭ অক্টোবর থেকে, যার ব্যাপ্তি ২০২৪ সাল পর্যন্ত গড়াবে। এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের সিদ্ধান্তে নূতন করে প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়। সেমতে চলতি আগস্ট মাসের ৫ আগস্ট আয়োজন করা হয় ইংরেজি বিতর্ক বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা। আশানুরূপ সফলতার সাথে এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর ২৬ আগস্ট সনাতনী ধারা বাংলা মাধ্যম বিতর্ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার রেজিস্ট্রেশন আহ্বান করা হয়। টার্গেট ছিলো ১২০ জনকে নিয়ে করা হবে এই প্রশিক্ষণ। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ২৫৫ জনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের দুটি ভেন্যুতে আয়োজন করতে হয় এই প্রশিক্ষণ। চাঁদপুরের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান এই প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। এই প্রশিক্ষণ শুরুর পূর্বে ব্যাপক চাহিদা ও আগ্রহের আলোকে আয়োজকদের ২ সেপ্টেম্বর শনিবার আরেকটি প্রশিক্ষণ আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিতে হয়। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে বর্তমানে চলছে রেজিস্ট্রেশনের কাজ।
চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে প্রথম দিকে চাঁদপুর ডিবেট মুভমেন্ট (সিডিএম)-এর ওপর নির্ভরশীল থাকলেও পরবর্তীতে 'চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন' (সিকেডিএফ) নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে সরকারি রেজিস্ট্রেশন নেয়। তারপর বিতর্কের জন্যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠা করে চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমি (সিডিএ)। এই সিকেডিএফ ও সিডিএ আয়োজন করে চলছে এবারকার বিতর্ক বিষয়ক উল্লেখিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এর ফলে করোনার কারণে ঝিমিয়ে যাওয়া চাঁদপুরের বিতর্ক অঙ্গন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। তবে এই চাঙ্গা হওয়াটা আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। নিঃসন্দেহে এটা ইতিবাচক এবং চাঁদপুরের মাটি যে বিতর্কের জন্যে অনেক উর্বর সেটার ইঙ্গিতবহ। আমরা বিতর্কের জন্যে চাঁদপুরের শিক্ষার্থী, তাদের শিক্ষক-অভিভাবক সর্বোপরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের আগ্রহে অনেক উজ্জীবিত। আমরা সকলকে ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাই।